দু’টি কবিতা || হিমাদ্রি মৈত্র
এখন কৃষ্ণপক্ষ
পাঁচতলার ব্যালকনি থেকে নীচে রাস্তা
অনেকদূর পর্যন্ত এগিয়ে দেয় দৃষ্টি
আকাশে জমে থাকে মেঘ কালো,
কালো আঁধারে
ফুটি ফুটি আলো এদিক ওদিক ঘিরে।
মাঝে মাঝে গাড়ির ব্রেকের শব্দে
কোনো মানুষ বোঝে গাড়িটা
রাস্তার কাউকে বাঁচালো,
মানুষ বা কুকুর,
অথবা কোনো অজাচিত ধাক্কা থেকে।
চকিত হর্নের আওয়াজে
রাস্তার কুকুর ভাবে
কোন বেআক্কেলে তার শান্তি চটকেছে,
উচ্চকিত স্বরে ব্যাঘাতের প্রতিবাদ জানায় ।
উল্টোদিকের দোতলার বারান্দায় ঝোলে নারী-পুরুষের ‘অন্দর কি বাত’,
একসাথে।
ভেজা বাতাসের মধ্যে শুকনো হতে হতে
গলাগলি করে জানায়
তারা আছে কাছে কাছে।
পাঁচতলা থেকে যদিও মেঘগুলো কাছে,
দূরে পাহাড়ের আরো কাছে ওদের ঢলাঢলি
চাঁদ ওপারেই থাকুক, এখন কৃষ্ণপক্ষ,
তারাদের দেখা পাওয়া ভার যদিও,
তবু ওরা আছে উপরে,
মেঘে ঢাকা তারা।
বহুদিন তোমার চোখে
আমার ভালবাসা আলো খুঁজে হয়রান,
মেঘের আড়ালে খুঁজি।
একলা ভোরের ডাক
তুমি কেমন করে এমন কাব্য লেখ
সুখের স্বপ্ন মেঘের ভেলায় রাখ
এখন সময় জুড়ে অসময়ের রেখা!
তবু কেমন করে জগৎটাকে দেখ!
পায়রাগুলো করছে বকম বক।
আজকে নাহয় না পাওয়াটা থাক,
তোমার গানের শব্দকলির বাঁকে।
সূর্য্য খোঁজে ঘুঘু পাখীর ডাক।
নদীর জলে কালো মেঘের ছায়া
পালে লাগায় ঘনঘটার হাওয়া,
আসে আসুক ঝোড়ো তুফান ধেয়ে
স্বপ্ন দেখায় তোমার সুরের মায়া।
আসে তোমার একলা ভোরের ডাক
কাজের কথা আজকে না হয় যাক
মনখারাপের অন্ধ গলির বাঁকে,
কাব্যে তবু আমার কথাও থাক।
************************