You are currently viewing শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা কবি হোসাইন কবির

শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা কবি হোসাইন কবির

শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা কবি হোসাইন কবির

হোসাইন কবির– কবি ও প্রাবন্ধিক, প্রফেসর লোকপ্রশাসন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্বিবিদ্যালয়। জন্মেছেন মহান ভাষা আন্দোলনের এক দশক পরে এক অপরূপ শীতার্ত প্রত্যুষে ২ ফেব্রয়ারি ১৯৬৩ সালে— মেঘনা-ডাকাতিয়ার কল্লোলিত শ্যামলিম মৃত্তিকা ইলিশের বাড়ি খ্যাত চাঁদপুরস্থ ফরিদগঞ্জের ভাটির গাঁও গ্রামে। মা জাহেদা খাতুন ও সমাজ সেবক বাবা মোঃ আবিদুর রহমান মিয়া দম্পতির ৬ সন্তানের মধ্যে ২য় সন্তান হোসাইন কবির। পড়াশুনার হাতেখড়ি গ্রামের স্কুলে, তাই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের পাঠ চুকানোর পাশাপাশি গাঁয়ের আলপথে শিস দিয়ে পাতার বাঁশি বাজানো, খালেবিলে নদীজলে শাপলা-শালুক তোলা— মাছের সাথে সাঁতার কেটে রক্তজবা চক্ষু নিয়ে বাড়ি ফেরার স্বর্ণরেণুসম রাশি রাশি স্মৃতিতে ভরপুর এ কবির হৃদয়ও। গ্রাম হয়ে শহর কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে অধ্যয়ন, জার্মানিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এ কবি। ১৯৯০ থেকে প্রায় ৩২ বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সাথে যুক্ত রয়েছেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি দ্বায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন, হলের প্রভোষ্ট, বিভাগের সভাপতি, সিন্ডিকেট সদ্যস্যসহ বিভিন্ন পর্ষদে। আশির দশকের সূচনায় হোসাইন কবিরের দ্বীপ্তিময় কবিজন্ম। মধ্য আশির দশকে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক হিসেবে যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রামে বই পড়া আন্দোলন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সাথে। একদার প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের তুখোড় জাতক হোসাইন কবির নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে দায়িত্ব পালন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক হিসেবে। যুক্ত ছিলেন দপ্তর যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অনন্য এক আয়োজন চট্টগ্রাম তথা দেশের প্রথম বিজয় মেলার সাথেও। হোসাইন কবির চাকুরি সূত্রে চট্টগ্রামে স্থিতু হলেও গত এক দশক তিনি যুগপৎ নিউইয়র্কের প্রবাস এবং বাংলাদেশের শেকড়ে অবস্থান করে—জীবন-যাপনের এক প্রান্তে তথ্য-তাড়িত দ্রুতলয় পৃথিবীর ক্লান্ত অবসন্ন পালা বদলের সুতীব্র দাবদাহ আর অন্য প্রান্তে শেকড়ের সহজিয়া কাব্য সুষমার আদিম মাদকতার নান্দনিক তৃষ্ণার মনোজগতপ্রসূত এক কাব্যকলার শিল্পবোধ নির্মাণ করে চলেছেন। একসময় চতুরঙ্গ, কবিতীর্থের মত উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখলেও হোসাইন কবির মূলত – অচিরা, আপাতত, ১৪০০, পুষ্পকরথ, মধ্যাহ্ন, লিরিক, দ্রষ্টব্য, জীবনানন্দসহ অসংখ্য লিটল ম্যাগকে প্রকাশের ক্ষেত্রে অবলম্বন করেছেন প্রেমিকার প্রতি নিঃসঙ্গ দায়বদ্ধতায়। আশির দশকের শেষে এবং নব্বইয়ের দশকের শুরুর পর্বে স্বনন নামের একটি ছোট কাগজ অনিয়মিত সম্পানা করেছেন। চাটগাঁ’র কবিতা-শিল্প আড্ডার স্থায়ী সেতুবন্ধন হোসাইন কবিরের এ যাবত প্রকাশিত হয়েছে চারটি কাব্যগ্রন্থ ও দু’টি প্রবন্ধ সংকলন। বর্তমানে তিনি মন-মানচিত্র অন্তর্জালের উপদেষ্টা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কাব্যগ্রন্থ:

১। জলের কল্লোল বৃক্ষের ক্রন্দন (১৯৯৭), বাড পাবলিকেশন, প্রচ্ছদ: উত্তম সেন

২। ও মাটি ও শূন্যতা (২০০৪), বলাকা, প্রচ্ছদ: ঢালী আল মামুন

৩। সাঁকোর নিচে শান্তজল (২০১৪), খড়িমাটি, প্রচ্ছদ: আলপ্তগীন তুষার

৪। নিঃসঙ্গ পাতার বাঁশি (২০২০), খড়িমাটি, প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ

প্রবন্ধ:

১। সমাজ রাজনীতি জনপ্রশাসন (২০০৮), বলাকা, ২০০৮, প্রচ্ছদ: আলপ্তগীন তুষার

২। বিশ্বাস চর্চার অধিকার ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০২১), আপন আলো, প্রচ্ছদ: ঢালী আল মামুন

কবি হোসাইন কবির সংসার জীবনে তিন সন্তানের জনক, বড় সন্তান ফায়িকা কবির (গল্প), আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসি বিষয়ে এমপিএ সম্পন্ন করেছে, সে আবৃত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শিশুকিশোর পুরস্কার প্রাপ্ত। মেজো সন্তান ফারিজ কবির (উপন্যাস) আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিষয়ে অধ্যয়নরত। কনিষ্ঠ সন্তান ফাসীর কবির (কাব্য) নিউইয়র্কের মার্ক টয়েন স্কুলে অষ্টম গ্রেড অধ্যয়নরত৷ সে পড়াশুনার পাশাপাশি মায়ের সাহচর্যে আবৃত্তি আভিনয় ও গানের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। নিউইয়র্কের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শিশুশিল্পী হিসেবে বাঙালি সমাজে পরিচিত মুখ। স্ত্রী: ফারজিন রাকিবা, জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার প্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ ( জাতীয় পর্যায়ে ১৯৮৩ ব্যাডমিনটনে চ্যম্পিয়ন, এবং সাবেক সদস্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা এবং সংগঠক শিশুকিশোর আবৃত্তি সংগঠন চারুকণ্ঠ। গত এক দশক তিনি সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন নিউইয়র্কে।

 

This Post Has One Comment

  1. Mahshadul Alam

    শুভ জন্মদিন দাদা!

Leave a Reply