You are currently viewing সুমন শামসুদ্দিনের কবিতা

সুমন শামসুদ্দিনের কবিতা

সুমন শামসুদ্দিন

 

ভ্রষ্ট জনপদ 

———————————————

একটা বিষণ্ণ জনপদ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি-

এখানে কোনো মানুষের চোখেই পানি নেই!

কারও কারও তো চোখই নেই!

বিবস্ত্র এক জনপদের ভেতর দিয়ে হাঁটছি-

যেখানে হোমো-স্যাপিয়েন্সগুলোর লাল রক্ত

ক্রমেই কালো হয়ে যাচ্ছে!

কারও রক্ত শীতল, কারও রক্তে হেমলক!

অনেকের ধমনীতে বইছে হায়েনা ও শকুনের রক্ত!

ধীরে ধীরে এই জনপদের ভেতর হেঁটে যাচ্ছি,

এখানে হোমো স্যাপিয়েন্সের অনেকেই চারপেয়ে;

কারও আবার চোয়ালের দুধারে হিংস্র দুটি দাঁত হাসছে!

আমি একটি ক্লান্ত জনপদ দিয়ে হাঁটছি,

এখানে নিলীন সূর্য কদাচিৎ উঁকি দিচ্ছে,

রক্তাশ্রু-আল্পনা আঁকছে গগনপটে!

চাঁদের কলঙ্ক বাড়তে বাড়তে

আকাশে একটি কালো চাঁদ ঝুলে আছে অবিরত!

আমি একটি অসুস্থ জনপদের ভেতর দিয়ে হাঁটছি,

এখানে অনেকেই মানবিক সুস্থ দেয়ালের বাইরে-

কেশবিহীন মাথা নিয়ে ঘুরছে!

যারা একে অপরের চুলছেঁড়া উৎসবে ব্যস্ত!

ক্লান্ত জনপদটি দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়-

ওরা আমার মাংস খুবলে নেওয়ার চেষ্টা করছে!

ওরা একজন আরেকজনের মাংস খেতে খেতে ক্লান্ত!

জনপদটি রূপান্তরিত হতে হতে-

সভ্যতার লক্ষ্য বছর আগে কৃষ্টির মূলেই ফিরে যাচ্ছে!

আমি যেই জনপদ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি;

সেটা পূর্বপুরুষের অভিসম্পাতে কৌলিন্যবর্জিত!

জনপদটি ফলত বিনাশের পূর্বপ্রান্ত দিয়েই হেঁটে যাচ্ছে-

প্রতিবিধানহীন এক জীর্ণ জনপদ!

=======================

অসহিষ্ণু জনপদ 

————————————————

ছাদের কার্নিশে সুতাবিহীন নাটাই হাতে বসে আছি,

বিমুক্ত ঘুড়ির চোখে আমার দৃষ্টি ওড়ে-

অসহিষ্ণু জনপদের ব্যস্ততার ভিড়ে,

অনাবৃত হয় না কোনো অবতল অবসর!

জনপদের কিয়দংশ শুষ্ক রক্তপর্দায় ঢাকা,

পর্দার নিচে সূর্যালোকের প্রবেশ রহিত!

মুষ্টিবদ্ধ পরাক্রমশালী খুঁটিতে পর্দা বাঁধা!

সুতোছেঁড়া অনধীন ঘুড়ি আমার-

অভিকর্ষমুক্ত, ভাসতে থাকে!

জনপদের সর্বত্র ছড়ানো দৃশ্যমান-

দীনহীন হাহাকার বিদীর্ণ করে মেঘাকাশ,

কেবল অধীশ্বরমহল বিলাসিতায় অন্ধ!

অধীশ্বরছায়ায় উত্থিত ভয়ঙ্কর গোষ্ঠীবদ্ধ হাত-

জনপদের বনিয়াদি অধিকার হরণে নিরত!

মেঘমালা থমকে আছে, ভুলে আছে বৃষ্টিপাত!

জনপদ বিলীনের অগ্নিবলয়ে রক্তপর্দার উল্লাস!

সুশীলসমাজ বিনামূল্যে স্বাধীনতায় নতজানু!

বিলুপ্তপ্রায় জনপদের নিঃশ্বাস বন্ধের উপক্রম-

অধীনতার বিস্বাদবিয়োগে-

প্রয়োজন এক একাট্টা উপপ্লব!

**************************