রাকীব হাসান
আনন্দ গলে রাত্রি নামে
শহর ছেড়ে খামার বাড়িতে ঘুরতে এসেছে দুঃখ
ফুলগাছ হয়ে যাওয়া মেয়েটি ভুট্টাক্ষেতে হারিয়ে যায়!
সন্ধ্যায় তার গায়ে লিখেছি মৃদুমন্দ সাহস —
তারপর, আনন্দ গলে রাত্রি নামে চোখে
রাতের ভরাট আনন্দে নখ টানে পিঠের ক্যারাভ্যানে
মুখের ভিতরে বাস করে প্রেমের ক্ষুধা-গন্ধ পথ।
কার্নিশে খোলা পাখির খাঁচায় আমাদের মায়া-বন্দী বুক
ছেড়ে দিলে দু’য়েকটা পালক উড়ন্ত যাত্রায় ঝরে যাবে
সময়ের নদীতে ভাসে স্বপ্নের-সঙ্গম শেষের শিশু-মন
চিরদিন প্রেমের পাথরে ডুব দেয় চোখের ভরানদী
সেই গভীরে একসাথে নেমে গলে গেছে আমাদের হৃদয়
যে সব ছেড়ে আসে, সে সব ছেড়ে ফিরে যাওয়া শিখে আসে!
রাতে তারার পাশে শরীরের মতো আকাশ হই
সে সপ্তর্শিমণ্ডল ছেড়ে আমার চাদরের নিচে উজ্জ্বল নগ্ন
মেঘের আক্রোশে সন্ধ্যায় যে বৃষ্টি নামে বজ্রপাতে
আমি তার হাত ধরি, তারও সব ফুল ফুটে ওঠে
আবহমান প্রেমের জোয়ারে ভেসে যায় শেষ রক্ত-ফোটা
আমাদের আনন্দ গলে রাত্রি নামে
শহর ছেড়ে আসা বহুদূর অন্ধকারে এই অঘোর-অন্ধ নদীর ঘাটে!
পোষ মানা ক্ষুধা
ক্ষুধা আছে তাই আহারের কাছে ফিরতে চাই
আমার সকল ক্ষুধা বড় হয়েছে
আমি চলে এসেছি বহুদূরে, কুহকী কুয়াশায় —
মন ফিরে যায় দ্বিতীয় মনের কাছে।
চিঠি লিখি অন্তরাত্মার অক্ষরে
প্রাপক তোমাকে লিখতে এতো ক্ষুধা বেড়ে যায়,
তোমার সামনে বসে আছি অদৃশ্য ক্ষুধান্ধ পথিক
হা করে তাকিয়ে থাকলেই
ক্ষুধার দুঃখ নেমে আসে, দুঃখ ফ্রোজেন হয় —
হায়! তখন ক্ষুধার তাপমাত্রা আরও বাড়ে,
এতো বাড়ে কেন?
আমার পোষ মানা ক্ষুধার খাঁচা খুলে যায় —
ডুবতে এসেছি অভ্যুত্থানের সন্ধ্যায়,
তোমাকে পেয়েছি অন্ধকারে রঙে ডোবা অবয়ব
তোমার পায়ের নিচে চাঁদ লেগে আছে,
আঠালো আমার করতলে দাঁড়িয়ে থাকো!
তোমার ডাইনিং টেবিলে যে অন্ধকার বসন্তকালে লাল হয়
খেতে এসেছি চেখের রান্নাঘর, বুকের মসলার বাক্স,
আমি খেতে এসেছি কাছে ডাকার সুরের বাতাস —
আমার ক্ষুধা জাগানিয়া আঙ্গুলের হারমোনিয়াম !
=====================================