জাকারিয়া প্রীণন-এর গুচ্ছকবিতা
আশ্চর্য বালিহাঁস
সে এক কমালার বন—রক্ত স্রোতেফুটে।
বৃষ্টি ও বিষাদের সময় কাঁকন খুলে ছুঁয়েফেলে কম্পমান পাখির
হৃদপিণ্ড। সে এক আশ্চর্য বালিহাঁস; সারাক্ষণ জল ছোপ-ছোপ
আলোয় ফাতনা ফেলে রাখে। জলমুগ্ধ সারল্যে একটি পরীর
জন্মহয় সেখানে।
আর আমাদের বিছানা-বালিশ ভিজে যায় কিচকিচে অন্ধকারে।
সময়; একটি মাছরাঙা পাখি—ছোঁমেরে চুরিকরে অজস্র আয়ুর
পরিধি।
মাংশফুলের ঋতু
অন্ধকারে যখন আয়না খুলে রাখে রংধনু বিড়াল—মথুরার বনে
ফুটে—গুচ্ছ কথার লিলি। ছুড়ে ফেল ভাষার পিণ্ড—সবুজ
পাতার বনে খসখসে আলোর ঝিলিক—মূর্ছিত পাখির নাচ
দেখায় সমস্ত শীতকাল জুড়ে। পাতাল ঘরে কারা বুনন করে
এই মহাজাগতিক ঘুড়ি?
মাংশফুলের ঋতু—কেটে রাখে যেই সব হীরার আঙুল—তারা
ঘুমন্ত পৃথিবীর সেই সব পাখিদল—যারা তানপুরা বাজায় পশমি
বর্ণমালায়। এই যতিচিহ্ন মেঘ—চিন্তাশীল গাধার রনক। বরং
আত্মাকে প্রশ্ন করো—আর উত্তর গুলো ছড়িয়ে দাও বাতাসে—
তারপর বুঝবে ইশকের সৌন্দর্য কত মনোলোভা।
জিরাফ
এই সব জীববৈচিত্র্য কালো জিরাফের মায়া—আলোর টগবগ
হতে দূরাগত দৃশ্য জেগে আছে—কসমিক সকালের দাঁগে।
আহা! ইশ্বর—তুমি চিরকাল অন্ধের কল্পনা।
দ্যাখো—সন্ধ্যার এপ্রিলে গাঢ় এক পাথর; সবুজ হয় ক্রমশ—যেন
আলো থেকে পড়ে গেলো চাঁদ। অথচ বজ্রনিনাদের বৃষ্টি
মেশিনের গুঞ্জনে রপ্ত করে আঙুলের কৌশল—এই নীল নীল
মেঘের দুপুরে; ধুমকেতু ঘুম—অন্ধকারে মেলে রাখে বিস্তীর্ণ
ঈগলের চোখ।
আর হাওয়া—প্যাঁচালো গানের ঘোড়া—চোখের দুলদুল—উফ!
—দ্যাখো—তোমার মন খারাপে আল্লার দুঃখ লেগেছে কেমন।