যন্ত্রণার অমৃত কেলাস
অসীম কুমার দাস
মানববিদ্যার কিছু কিছু কেন্দ্রীয় ধারণা আছে যাদের সঠিক সংজ্ঞা প্রদান করা সম্ভবপর নয়। কবিতা এই ধরনের একটি ধারণা যার সংজ্ঞা ও প্রকৃতি নির্ণয় করতে অ্যারিস্টটল থেকে পল ডে মান পর্যন্ত মহান সাহিত্য সমালোচকরাও ব্যর্থ হয়েছেন। তবে তাঁরা প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন কবিতার প্রাণকেন্দ্রকে স্পর্শ করবার। এবং নিঃসন্দেহে এই প্রচেষ্টা তাৎপর্যপূর্ণ এবং মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারায় এর গুরুত্ব অপরিসীম।
কোলরিজ বা এলিয়টের মতো যাঁরা একাধারে কবি ও সমালোচক– তাদের বিষয়টি একটু স্বতন্ত্র। কবিতা আসলে কী তা সংজ্ঞায়িত করবার চেষ্টা তাঁরা করেছেন, কিন্তু তাঁরা এ-বিষয়ে তীব্রভাবেই অবহিত ছিলেন যে, শুধুমাত্র বৌদ্ধিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে কবিতার হৃদয়কে ধরা যায় না। কারণ শেষ বিচারে কবিতা গ্রীক পুরাণের প্রোটিউসের মতো একটি সত্তা, যার রূপ এবং প্রকৃতি নিয়ত পরিবর্তনশীল। জীবনানন্দ, ইয়েটস, এলিয়ট, পাউন্ড প্রভৃতি মহান কবিদের এ-ক্ষেত্রে একটি অনিবার্য সুবিধা ছিলো। কারণ তাঁরা জানতেন যে বুদ্ধি একটি পর্যায়ে এসে তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। তখন বোধ কাজ করে, অন্তর্নিহিত অবচেতনা ক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে। আর তখনই কবিতা ভিনাসের মতো সমুদ্রের নীল জলরাশি থেকে জেগে ওঠে তার মৃত্যুহীন, রহস্যময় সৌন্দর্য নিয়ে, সুপ্রাচীন পৃথিবীর স্তব্ধতাকে চূর্ণ করে।
নিঃসন্দেহে কবিরা নিজেরাও কবিতা-সৃষ্টির জন্মরহস্য সম্বন্ধে পুরোপুরি অবহিত নন। তবে তাঁদের স্বজ্ঞার ভেতরে অন্তর্লীন আলো আর অন্ধকারে আভাসিত হয়ে ওঠে এক ধরনের প্রজ্ঞা যার কোনো নির্দিষ্ট রূপ নেই– শুধু ছায়া আছে। তবে এই ছায়ামূর্তি শুধুমাত্র মায়া নয়। এই ছায়ার অভ্যন্তরে প্রতিমূর্ত হয়ে ওঠে মানুষের কল্পনাপ্রতিভার মহত্তম অভিব্যক্তি — যে অভিব্যক্তি আমাদের পরিচিত পৃথিবীর বাস্তবতাকে অতিক্রম করে যায়৷ এবং এই স্বাতিক্রমের গতি নক্ষত্রলোকের অভিমুখে ধাবমান।
তাই বিশুদ্ধ সমালোচকেরা মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে আরতি দেখেন, খুব জোর ধূপের ধোঁয়া এসে তাদের নাসিক-গহ্বরে প্রবেশ করে, কিন্তু মন্দিরের অভ্যন্তরে প্রবেশের অধিকার তাদের নেই৷ সেখানে প্রবেশাধিকার শুধু কবিদের আছে। তাঁরা দেবতাকে দর্শন করেন– প্রকৃত স্বরূপ অনুধাবন করা তাঁদের পক্ষেও সম্ভব হয় না। তবে দেবতার অজানিত চোখের আলোরাশি তাঁদের আত্মার ভেতরে বিলোড়ন তোলে। আর এই বিলোড়িত জ্যোতিস্নাত বোধ অনূদিত হয় কবিতায়– যে কবিতা হোমারের আলোহারা সমুদ্রের সোমরস।
তবে কবিদের এই বিলোড়িত বোধ এবং নক্ষত্র ছোঁবার প্রণোদনার সাথে দুটি আনুষঙ্গিক উপলব্ধি অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত, একটি হচ্ছে ‘অলৌকিক আনন্দের ভার’ আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ‘সীমাহীন মহাজাগতিক শূন্যতাবোধের যন্ত্রণা’। এই দুটি অনুভূতিকে পৃথক করা যায় না। কারণ পৃথকীকরণের অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে কবির অপমৃত্যু।
এই সঙ্কটাবস্থা কবিদের নিয়তি। এর থেকে মুক্তি নেই একমাত্র মৃত্যু ছাড়া। এ-প্রসঙ্গে অবশ্য আমি শারীরিক মৃত্যুর কথা বলছি না। তবে ধাঁধার মতো শোনালেও মৃত্যুর সাথে আর্টের একটা যোগাযোগ আছে। কথাটা পাস্টারনেক ডক্টর জিভাগো–তে বলেছেন। তবে তিনি একথাও উল্লেখ করেছেন যে, আর্ট যদিও মৃত্যুর সহোদরা ভগ্নী, কিন্তু এই মৃত্যুমুখরিত চেতনা থেকেই আর্ট অন্তহীনভাবে জীবনকে নবজন্ম দেয়।
পাস্টারনাকের এই প্রগাঢ় উচ্চারণের পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হয় অন্তত আধুনিক আর্টের সাথে মৃত্যুচেতনা, বিভীষিকা, যৌন বিকৃতি, উন্মত্ততা, নিস্তব্ধতা, শূন্যতাবোধ ইত্যাদি বিষয়ের একটি অনস্বীকার্য যোগসূত্র রয়েছে৷ কাফকা, কামু, হারম্যান ব্রখ, কনর্যাড, পিকাসো, দালি প্রভৃতি মহান শিল্পীদের কীর্তি এই সত্যের উজ্জ্বলতম উদাহরণ সন্দেহ নেই।
প্রশ্ন উঠতে পারে যে, কবিদের চৈতন্যের এই বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের সাথে আর্টের সম্পর্কটা কী ভাবে মেলানো যায়। কারণ চূড়ান্ত বিশ্লেষণে আর্ট হচ্ছে বাস্তব জগতের আভাস-ঋদ্ধ শৃঙ্খলাহীনতার রূপান্তরিত প্রতিসাম্য। বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে একটি অব্যাখ্যাত প্রহেলিকা। শিল্পী ও কবিদের জীবনাচরণ এবং কল্পনার জগতের ভেতরে পরিলক্ষিত হয় একটি নৈরাজ্য-দীর্ণ অস্থিরতা ও যন্ত্রণা। অথচ এই নৈরাজ্য আর যন্ত্রণার আবর্ত থেকে উঠে আসে এমন সব শিল্পকর্ম যেগুলি পূর্ণাঙ্গ ও সুশৃঙ্খল — অর্থাৎ সেখানে বাস্তব জগতের নৈরাজ্য এবং শৃঙ্খলাহীন অপরিপূর্ণতা অবিশ্বাস্যভাবে অনুপস্থিত। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় দান্তের লা দিভিনা কোম্মেদিয়া এবং শেক্সপীয়রের ম্যাকবেথ এবং দ্য টেমপেস্ট। বিশেষত বোদলেয়রের মতো কবিদের শিল্পকর্মের বিচার করতে গেলে এই সত্যটির যথার্থতা আমাদের বিস্মিত করে। কারণ বোদলেয়র বা র্যাঁবোর কবিতার সাথে তাঁদের জীবনাচরণকে মেলানো যায় না নিঃসন্দেহে।
কিন্তু গভীরভাবে বিষয়টিকে অনুধাবন করলে এই আপাতদৃষ্টিতে পরিলক্ষিত স্ববিরোধিতার একটি ব্যাখ্যা দেওয়া বোধ হয় সম্ভব। কারণ কবিতার প্রাণকেন্দ্র ও উৎস হচ্ছে এক আশ্চর্য ধরনের দ্বন্দ্ব। আরও সহজভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে, কবিতা বা শিল্প একটি সমাপ্তিবিহীন যুদ্ধের পরিণতি। এবং এই যুদ্ধের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পৃক্ত হয়ে আছে স্ববিরোধিতা ও অসামঞ্জস্য৷ এখানেই কবিতার শক্তি ও অনিবার্য অনন্যতা নিহিত।
অনিবার্যভাবে সমালোচকেরা প্রশ্ন করবেন, কবিতা তথা শিল্প কোন ধরনের যুদ্ধ থেকে উৎসারিত ধ্যানমালা? আমার ধারণা, প্রথমত, কবিতা হচ্ছে মানবীয় চৈতন্যের সাথে জড়বিশ্বের এক অবিশ্রান্ত সংগ্রাম। দ্বিতীয়ত, কবিদের ভাবনা, বেদনা এবং যন্ত্রণার সাথে কবিতা হচ্ছে শব্দমালার সীমাবদ্ধতার আমৃত্যু সংগ্রামশীলতার জ্বলন্ত দলিল। এই সংগ্রামশীলতার কোনো চূড়ান্ত সমাধান নেই। কারণ পৃথিবীর মহত্তম কবিদের পক্ষেও তাঁদের অপরিমেয় চিত্রকল্প, ভাবনা এবং যন্ত্রণার দ্বারা নির্মিত কল্পনাবিশ্বকে মানবীয় ভাষার সীমাবদ্ধতার কারণে যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গভাবে রূপান্তরিত করা অসম্ভব।
এ-ছাড়া ভাষাশিল্পীদের সাথে অন্যান্য শিল্পীদের একটা মূলগত পার্থক্য রয়েছে। যেমন একজন চিত্রশিল্পী অথবা ভাস্কর রঙ, প্রস্তর অথবা মৃত্তিকা ইত্যাদি মাধ্যমের সাহায্যে তাঁর স্বপ্ন ও আস্পৃহাকে অভিব্যক্ত করেন। রঙ অথবা প্রস্তরখণ্ড অথবা মৃত্তিকা মানুষের প্রতিদিনের ব্যবহার্য বস্তু নয়৷ কিন্তু পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন ভাষা ব্যবহার করেন। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ভাষা জীর্ণতাপ্রাপ্ত হয় স্বাভাবিকভাবেই। ভাষাশিল্পীদের অসুবিধা এখানেই। তাঁদের কাজটা একটু কঠিন এ-জন্য যে, এই জীর্ণ ভাষাকে তাঁদের নতুন মাত্রা দিতে হয়– অতি-পরিচিত শব্দসমূহকে মণ্ডিত করতে হয় এক অপ্রত্যাশিত ও অপরিচিত সৌন্দর্যের অর্থময়তায়।
তবে কবি তথা ভাষাশিল্পীদের এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি অনন্য সুবিধাও আছে। রঙ অথবা প্রস্তর মানুষের যত কাছাকাছি, ভাষা অপেক্ষাকৃতভাবে নিঃসন্দেহে আরও গভীরসঞ্চারী। ব্যাপারটা স্বতঃস্বচ্ছ– কারণ ভাষা মানুষের রক্ত ও চেতনার অভ্যন্তরে বসবাস করে৷ তাই একজন মহাকবি যখন মানুষের রক্তের ভাষাকে অভিনব ও অপ্রত্যাশিত ইঙ্গিতময়তায় মণ্ডিত করতে সক্ষম হন তখন মানুষের রক্ত আর চেতনা যতটা বিলোড়িত হয়, মানুষকে ঠিক ততটা আলোড়িত ও আনন্দিত করাটা একজন মহান চিত্রশিল্পী বা ভাস্করের পক্ষেও সম্ভবপর হয়ে ওঠে না বলে আমি মনে করি৷ এবং এই জন্যই সম্ভবত কবিতা তথা সাহিত্য মহত্তম শিল্প। এখানে কোনো কোনো সমালোচক সঙ্গীতের প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে পারেন৷ কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি আমি অপরিসীম ভালোবাসা রেখেই এই ধারণা ব্যক্ত করতে বাধ্য হচ্ছি যে, সঙ্গীতেরও কিছু অনিবার্য সীমাবদ্ধতা আছে৷ বীঠোফেন, মোৎসার্ট, বাখ প্রভৃতি মহত্তম সুরস্রষ্টারা আমাদের উপলব্ধি ও আবেগের ঐন্দ্রজালিক রূপান্তর ঘটান– আমাদের মর্ত্যচেতনাকে নক্ষত্রলোকের অভিমুখে নিয়ে যান। কিন্তু আমাদের চিন্তা ও বুদ্ধিকে তাঁরা ততোটা উদ্বুদ্ধ করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু কবিতা তথা সাহিত্যের আত্মার ভেতরে বোধি, বুদ্ধি ও আবেগের ত্রিবেণী-সঙ্গম পরিলক্ষিত হয়। এখানে এসে বুদ্ধি, বোধ এবং অভিজ্ঞতার গভীরতম উপলব্ধিসমূহের সীমান্তরেখা অবলুপ্ত হয়। শিল্পের প্রায় প্রতিটি প্রজাতি অন্তত মহত্তম কবিদের কীর্তির প্রাণকেন্দ্রে এসে লাভ করে একটি অবিশ্বাস্য, একীভূত পূর্ণতা। সেখানে শিল্পের প্রতিটি শাখা একে অপরকে আলিঙ্গন করে এক ঐন্দ্রজালিক প্রতিসাম্য-ঋদ্ধ পরিপূর্ণতায়। এই উক্তির ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতা স্বত:স্বচ্ছ হয়ে ওঠে যখন আমরা বিস্ময়-বিমুগ্ধ হয়ে পাঠ করি হোমার, সোফোক্লিস, এসকাইলাস, কালিদাস, দান্তে এবং রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান।
কবিতা নামক শিল্প মাধ্যমের এই রকম স্বয়ম্ভু ও অদ্বিতীয় ”mode of existence’ এর জন্য একটি বিষয় দায়ী বলে আমার মনে হয়। সেটা হলো এই যে, কবিতা শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে ইন্দ্রজালময় ধ্বনির ওপরে– এবং সেই ধ্বনি বিশেষভাবে অর্থময়। এক বিচারে যদিও সব ধরনের ধ্বনিপুঞ্জেরই কোনো না কোনো অর্থ থাকে– যেমন সঙ্গীতে ব্যবহৃত ধ্বনির থাকে অন্তর্লীন দ্যোতনা। তবে সঙ্গীতের ধ্বনি আক্ষরিকভাবে কোনো বিশেষ ভাব ও ধারণার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে না– বরং তা এক সামগ্রিক উপলব্ধির বিশ্ব নির্মাণে সবচেয়ে পারঙ্গম। কবিতাও এ-ধরনের অর্থময়তার পরিব্যপ্তি ঘটাতে সক্ষম সন্দেহ নাই। কিন্তু কবিতায় অর্থময়তার এই আততি যেভাবে ঘটে, তা একটু অন্য প্রকারের। যেমন, কবিতায় ব্যবহৃত অধিকাংশ শব্দেরই একটি আভিধানিক অর্থ থাকে। কিন্তু কবির ‘স্বপ্নকল্পনা’ (imagination) আপাতবিচ্ছিন্ন শব্দাবলীর ভেতর থেকে একটি বিশাল ও অপ্রত্যাশিত রকমের নতুন অর্থকে সূর্যালোকের অজস্রতায় প্রতিস্থাপন করে। অর্থাৎ একটি অন্ধকার শব্দের সাথে অন্য একটি অন্ধকার শব্দের সংঘর্ষের ফলে জ্বলে ওঠে অর্থময়তার আলো– এবং সেই আলোর স্পর্শে সঞ্জীবিত হয় পার্শ্ববর্তী আরো একটি অনালোকিত শব্দ৷ তার পরে শুরু হয় খাণ্ডবদাহন।
কিন্তু খাণ্ডবদাহনের পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থান করে এক উদাসীন ও অধ্বনিন মহাবিশ্ব, যা অর্থপূর্ণ করে তোলে এই ‘স্বপ্নকল্পময়’ অলাতচক্রের মৌলিক প্রক্রিয়াকে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো কবিতার কাঠামোর ভেতরেই প্রবলভাবে উপস্থিত অধ্বনিন মহাবিশ্বের উদাসীনতা, যার প্রতীক হিসেবে ক্রিয়াশীল একটি শব্দের থেকে আর একটি শব্দের দূরত্বমোচনকারী শূন্যদেশ। এই শূন্যদেশ আবার একটি কবিতার আরম্ভ ও পরিসমাপ্তিকেও বলয়িত করে রাখে। অর্থাৎ শূন্যদেশের স্তব্ধতা শব্দসমূহের ভেতরে সংঘর্ষের জ্বলে ওটা সূর্যাবর্তকে অর্থময় করে তোলে। কিন্তু এর ফলে একটি অদ্ভুত ‘ড্রামা’র সৃষ্টি হয় যার প্রধানতম বিবদমান চরিত্র দুটি হচ্ছে যথাক্রমে শব্দমালার অ্যালকেমি এবং শূন্যদেশের দ্বারা আভাসিত মহাবিশ্বের অ-মানব নিস্তব্ধতা– যার নিত্যসঙ্গী হলো ধ্বংস, মৃত্যু আর উন্মত্ততা। ধ্বংস, মৃত্যু আর উন্মত্ততার প্রসঙ্গ এলো কারণ এই তিনটি অবভাসের মূর্ত প্রতীক হলো পরতম অনুপস্থিতি, যা কবিতার অধিকাঠামো হিসেবে ক্রিয়াশীল অমানব নিস্তব্ধতার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ শেষ বিচারে কবিতা হচ্ছে শূন্যদেশের মহাজনশূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে-থাকা এক মর্মর পিরামিড যা ক্রমাগত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে ঊর্ধ্ব থেকে ঊর্ধ্বতর লোকে।