দুইটি কবিতা || হিমাদ্রি মৈত্র
চিঠির শব্দেরা
সে কোন কিশোর কালে–
যে চিঠিগুলো দিলাম তোমায়
তুমিও তখন কিশোরী ছিলে;
আজও কি আমার শব্দ ছড়ায়!
তোমার বয়স প্রাচীন হলে।
যে নদীপথে নদী চলে যায়,
আকূল হয়ে সে
ঘোর বন্যায় দুকূল ভাসায়!
তেমনি আমার শব্দ কি ভাসে
সেসব চিঠির পুরোনো পাতায়!
যে সব শব্দে ভরেছিল ওরা,
অলীক স্বপ্নে, কিশোর কালে!
দিনের শেষে যেন ঘরে ফেরা
যেন কোনো ছলে
মনে মন দিয়ে খেলা করা।
চিঠিগুলো বুঝি আজো ধরা আছে
আহ্লাদে মোড়া;
একান্তে রাখা বাক্সের নীচে!
ওগুলোতে যেন আছে শব্দেরা,
প্রিয় যে শব্দ তোমার কাছে।
কেউ দূরে চলে গেলে
কেউ দূরে গেলে কান্না আসে না।
আমার মন তো আর
ইলেকট্রিক চুল্লী না, স্মৃতির
নাইকুন্ডলী মাটি চাপা দিয়ে
ভাসিয়ে দেব পবিত্র জলে!
কেউ দূরে চলে গেলে যে
পোড়া কাগজ থেকে যায়,
ঝটকা হাওয়ায় উড়ে গেলেও
আবার মাটিতে এসে পড়ে।
তাদের পোড়া গন্ধের শব্দ
ঘাই মারে সময়ে-অসময়ে!
কেউ দূরে চলে গেলে,
আঁচলে যে সুগন্ধি ছিল,
লেগে থাকে আমার বুকে, ঠোঁটে,
শরীরের খাঁজে, ভাঁজে।
তার কোনো তৃপ্তি অথচ
পিছনে পড়ে থাকে না।
কেউ দূরে চলে গেলে,
কেউ মনে রাখে না।
পাতারা সময়ে ঝরে, সময়ে ভরে।
সময়ের মত চাঁদ আসে, চাঁদ যায়।
জোয়ারে-ভাটায় জল বাড়ে-কমে।
কেউ দূরে গেলে তবু কান্না জমে।
==========================