এমিলি ডিকিনসন-এর কবিতা “আশা এক ডানাওয়ালা পাখি”
আলী সিদ্দিকী
“Hope is the thing with feathers” এমিলি ডিকিনসনের অন্যতম বিখ্যাত কবিতা, যেখানে তিনি আশার প্রকৃতিকে রূপকের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন। ১৮৬১ সালে রচিত এই কবিতাটি তিনটি স্তবকে বিভক্ত এবং এতে ABCB ছন্দরীতি অনুসরণ করা হয়েছে, যা ডিকিনসনের কবিতায় প্রায়শই দেখা যায়।
ABCB ছন্দরীতি বলতে বোঝানো হয় একটি বিশেষ ধরনের অন্ত্যমিলের কাঠামো, যেখানে প্রতিটি স্তবক বা চরণচতুষ্টয়ের (quatrain) দ্বিতীয় ও চতুর্থ চরণ মিল রেখে লেখা হয়, কিন্তু প্রথম ও তৃতীয় চরণ মিল থাকে না। যেমন:
Hope is the thing with feathers (A)
That perches in the soul (B)
And sings the tune without the words (C)
And never stops – at all (B)
এখানে দেখা যাচ্ছে:
• প্রথম চরণ (feathers) এবং তৃতীয় চরণ (words) এর মধ্যে কোনো মিল নেই।
• কিন্তু দ্বিতীয় চরণ (soul) ও চতুর্থ চরণ (all) অন্ত্যমিল সৃষ্টি করেছে।
এটিকে বলা হয় ABCB ছন্দরীতি, যা এমিলি ডিকিনসনের কবিতায় প্রায়শই দেখা যায়। এটি কবিতায় এক ধরনের ছন্দময়তা ও মাধুর্য সৃষ্টি করে, যা পাঠকের মনে সহজেই গেঁথে যায়।
পুরো কবিতাটি হলো:
Hope is the thing with feathers
That perches in the soul
And sings the tune without the words
And never stops – at all.
And sweetest – in the Gale – is heard
And sore must be the storm
That could abash the little Bird
That kept so many warm.
I’ve heard it in the chilliest land
And on the strangest Sea
Yet – never – in Extremity,
It asked a crumb – of me.
কবিতাটি একটি সুন্দর রূপকের মাধ্যমে শুরু হয়, যেখানে আশা-কে তুলনা করা হয়েছে একটি পাখির সঙ্গে—
“Hope is the thing with feathers
That perches in the soul
And sings the tune without the words
And never stops – at all”
এখানে ডিকিনসন আশা-কে একটি পাখি হিসেবে কল্পনা করেছেন, যা মানুষের আত্মার মাঝে বসবাস করে। পাখিটির অবিরাম গান আশার অবিচল ও চিরস্থায়ী প্রকৃতির প্রতীক। এটি “শব্দহীন সুর” গায়, যা বোঝায় যে আশা শুধুমাত্র ভাষার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় না; এটি মানুষের অভ্যন্তরীণ অনুভূতির এক সার্বজনীন, অতিপ্রাকৃত অস্তিত্ব।
ডিকিনসন আশা-পাখির এই রূপকটিকে আরও বিস্তৃত করেছেন—
“And sweetest – in the Gale – is heard
And sore must be the storm
That could abash the little Bird
That kept so many warm”
এখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যেও আশার গান সবচেয়ে মধুর শোনায়। “Gale” বা প্রবল বাতাস এখানে প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে জীবনের কঠিন সময়গুলোর জন্য। এই প্রতিকূলতার মাঝেও আশা গাইতে থাকে। ঝড় যদি এতটাই ভয়ংকর হয় যে এটি সেই ছোট পাখিটিকে স্তব্ধ করে দিতে পারে, তবে তা নিঃসন্দেহে এক চূড়ান্ত দুর্দশার সংকেত। কিন্তু সাধারণত, আশা সহজে দমে না এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও উষ্ণতা ও সান্ত্বনা প্রদান করে।
শেষ স্তবকে ডিকিনসন আশার নিঃস্বার্থ স্বভাবের কথা বলেছেন—
“I’ve heard it in the chilliest land
And on the strangest Sea
Yet – never – in Extremity,
It asked a crumb – of me.”
তিনি বলেন, তিনি আশা-কে শুনেছেন “শীতলতম ভূমিতে” এবং “অপরিচিত সাগরে”, যা সংকট ও অজানা বিপদের প্রতীক। কিন্তু যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক না কেন, আশা কখনো কিছু প্রত্যাশা করে না, কিছুই দাবি করে না। এটি এক নিঃস্বার্থ শক্তি, যা মানুষের পাশে থাকে কেবল আশার আলো জাগিয়ে রাখার জন্য।
ডিকিনসনের এই কবিতায় দীর্ঘ রূপকের (extended metaphor) ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা-কে একটি পাখির সঙ্গে তুলনা করার মাধ্যমে তিনি তার নতুন আশার হালখাতা, কোমলতা ও দৃঢ়তার সংমিশ্রণ ফুটিয়ে তুলেছেন। পাখিটির অবিরাম গান বোঝায় যে আশা চিরস্থায়ী, এমনকি যখন মানুষ একে উপলব্ধি করে না, তখনও এটি তাদের অস্তিত্বে বহমান থাকে।
এই কবিতায় আশা ও প্রতিকূলতার মধ্যকার সম্পর্ককেও তুলে ধরা হয়েছে। আশা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় তখনই, যখন মানুষ গভীর হতাশায় থাকে। কবিতার ভাষার বিন্যাসেও এটি স্পষ্ট—একটি কোমল পাখির চিত্র এবং ভয়ংকর ঝড়ের প্রতিকূলতা, যা আশার অপরাজেয় শক্তিকে তুলে ধরে।
কবিতার গঠন ও ছন্দ এটিকে এক সঙ্গীতধর্মী গীতিকবিতায় রূপান্তরিত করেছে। সহজ ভাষা ব্যবহার করা হলেও এতে অন্তর্নিহিত গভীর ভাবনার স্পষ্টতা রয়েছে, যা ডিকিনসনের কাব্যশৈলীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
“Hope is the thing with feathers” একটি অনন্য কবিতা, যেখানে এমিলি ডিকিনসন আশার সার্বজনীন ও চিরন্তন শক্তিকে তুলে ধরেছেন। তাঁর রূপক ও চিত্রকল্পের সাহায্যে তিনি দেখিয়েছেন যে, আশা মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বিরাজমান, বিশেষ করে তখনই যখন সবকিছু অন্ধকার ও দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই কবিতাটি যুগে যুগে মানুষের মনে আশার আলো জ্বেলে রেখেছে এবং এটি আজও মানব অভিজ্ঞতার অপরিহার্য এক দিককে স্মরণ করিয়ে দেয়।
************************************