You are currently viewing মাহবুব আলী || ফেরা না ফেরা

মাহবুব আলী || ফেরা না ফেরা

মানুষজন সেই ভিড়ের মধ্যখানে একটি তিনব্যান্ড ফিলিপস্‌ ট্রানজিস্টার রেডিওর দিকে সকল মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে রাখে। সেটির চকচকে ঊর্ধ্বমুখ অ্যান্টিনা, স্পিকারের ফুল ভলিউমে বেশ জোরালো ধারাভাষ্য চলমান। তারই মধ্যে মানুষের প্রতীক্ষার, আনন্দ কথপোকথন, উল্লাস-চিৎকার উঁকিঝুঁকি মেরে মাইক্রোফোনের তরঙ্গ বেয়ে ইথারে ভেসে ভেসে এখানেও নীরব-নিশ্চুপ শ্রোতাদের মধ্যে এসে পড়ে এবং অদ্ভুতভাবে অনেকের ভেতর একইরকম উপলব্ধি সংক্রমিত হতে থাকে। তখন ছেলেটি ভিড়ের গহিনে একে-ওকে দেখার বা চেনার চেষ্টায় অনেক কথা ও ঘটনার নিশ্চুপ প্রবাহে স্মৃতিকাতর হয়ে যায়। সে-সময় কেউ কেউ ঠিকই শনাক্ত করে ফেলে তাকে। তার কাঁধ ছড়ানো ঘন চুল, নাকের নিচে গোঁফের হালকা রেখা আর উদাস আকাশের মতো দীর্ঘায়ত চোখ যদিও অনেক অচেনা লাগে। সেই জটলায় কারও উৎসুক অথবা ভাবলেশহীন দৃষ্টি বৃত্তাকার ঘুরে আসতে আসতে পুনরায় খেই হারিয়ে ফেলে। কারও চোখে বিষাদ জানুয়ারির কুয়াশা-মেঘের মতো ভেসে উঠে স্থির অনড়। কেননা কথা বা প্রতিশ্রুতির সবটুকু যে নির্ঝঞ্ঝাট এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে, সে-সময় সেটি ধারণা করা কষ্টকর ছিল, যেহেতু কথা অনেকসময় কথার মতো থাকে না, বিবিধ কুটকৌশলে বদলে যায়, তখন কারও কাছে স্বপ্ন বা অঙ্গীকার ভিন্নরূপ পরিগ্রহ করতে পারে। যে ব্যক্তি আকার-ইঙ্গিতে বুঝে নিতে জানে তার মুখে কোনো কথা নেই। ছেলেটিও অপেক্ষায় নিশ্চুপ ছিল। সেই মৌনতার মধ্যে হাজারও কথা, সে যা বলতে চাইছিল না; অথচ কেউ একজন সরাসরি জিজ্ঞেস করে বসে, –
‘রাইসুল কেমন আছিস?’
‘এই তো!’
‘তারপর?’

Leave a Reply