ভাষাবিম্ব
ঋতো আহমেদ
[১]
কুড়ি বছর পেরিয়ে যাবার পর
একদিন কেমন দেখাবে আমাদের, আদ্যপান্ত
কেমন হবে দিনরাত্রির বয়ে চলা— এইসব
ভাবছিলাম সে’দিন। আর আজ
সেই কুড়ি-বছর-পর-টা যখন এলো,
তোমার হাত থেকে কখন যে পড়ে গেছে রাগিণীরেখা
ধূলিমলিন তোমার অবচেতন
ক্যামন ঘুরতে ঘুরতে
কেবল ১৮ই জুলাই ছাড়া আর কিছুই রইল না। অথচ,
তোমার জন্যে না আমি অতিক্রম করলাম জন্মাজন্মের ছায়া
না আমি ছাড়িয়ে এলাম সেই পুনর্লিখিত বাক্যের নির্জনতা।
সমস্ত স্বপ্নবীজ আমাদের শেষ পর্যন্ত এক
ঘনীভূত অরণ্যই হয়ে গেল।
কুড়ি বছর পর
[২]
তোমাকে এখন চিনতে পারে না কেউ।
অগুনখেকো মানুষের মুখের মতো হয়ে আছে তোমার প্রীত নীরবতা।
রক্তমাখা সেই আত্মজ্ঞানীও ঝরে গেছেন।
যাকে তুমি বিচ্ছুরিত আলোই ভেবেছিলে।
ভেবেছিলে বস্তুপৃথিবীর বাইরে সে তোমাকে পথ দেখাতে পারবে।
কবিতার কথার ভিতরে দাঁড়িয়ে
ক্রমপরিণতির ধোঁয়ার মতোই সে উবে গেছে।
এখন দূর থেকে ৪২ ডিগ্রির হাওয়ারা ভেসে আসছে কেবল।
হাঁটতে হাঁটতে
অক্ষরের মুঠো থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে তোমার উদ্ভ্রান্ত জীবন-যান।
সফলতার মানে বলতে কিছুই যে হয় না—এখনও বোঝনি।
এখনও অতীত ইন্দ্রজাল তার
অন্তর্ভেদী দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।
তুমি সেই চোখের থেকে পারো না তোমার চোখকে ফেরাতে।
কেবল নীলকমল যেই জলজ ময়দানে আত্মহারা হওয়ার কথা
একটি ভুল ভালোবাসার ফুলের সঙ্গে—
তুমি তার মৃত্যুগন্ধী ফেনা হয়ে
মিশে যাচ্ছ আর মিশে যাচ্ছ
মৃন্ময়তায়।
[৩]
ইউরোপা অতীন্দ্রিয় ছিল না কখনও।
তাকে তোমরা ভবিতব্যই ভেবেছিলে সবসময়।
আর এখন
সৃষ্টির অভিব্যক্তিময় মুখচ্ছবি যখন
তোমাদের সামনের থেকে অন্তর্হিত হতে চলেছে
হতচ্ছাড়া বিস্মরণের নেশা যখন পাগলপারাই হয়ে উঠছে
তখন আর কোথায়-বা যাবে তোমরা
কোথায় তোমাদের নৈঃসঙ্গের চিৎকার গিয়ে
হিমশৈলের স্তম্ভের মতো
নত হবে!
যাও
দ্বিরুক্ত হও
খুলে আনো মনুষ্যের চাবি।
পড়ে থাক অন্তর্দাহ
পড়ে থাক অর্ঘ্যকমল, আর
পড়ে থাক পাণ্ডুলিপি—
[৪]
যা কিছু ঘটছে তা অলীক নয় মোটেও।
কারণ, স্বপ্ন, জীবনের মতোই
গুরুত্বপূর্ণ,
অথবা জীবন, স্বপ্নের মতো।
কিন্তু যেই শব্দটা শুনতে পাও তোমরা মাঝেমধ্যেই, ভ্রান্তির ভেতর
কিংবা অভ্রান্তিরও—,
কীসের সেটা?
স্ফীত হয়ে ওঠা আত্ম-অবিশ্বাসের? নাকি মৃত্যুর?
না,
গাঢ় কোনও উপদেশ নয়
গূঢ় কোনও উদ্দেশ্যেও না
কালচক্রে
আমি একটা সৃজনতরঙ্গ ছুঁড়ে দিচ্ছি আজ;
অপেক্ষায় থেকো
যতক্ষণ না সেই তরঙ্গ তোমাদের স্থান ও কালকে অতিক্রম করে যাচ্ছে
যতক্ষণ না সেই ঢেউ এসে ওলটপালট করে দিচ্ছে সব পার্থিব গতি—
অফুরন্ত আয়নায় দেখবে
তোমাদের নির্বোধ সাহস ক্যামন অপচয়ই কেবল!
আর যারা উদ্ভ্রান্ত হয়েছ
যাদের সমস্ত প্রস্তুতির ওইপাড়ে দুলছে অনিবার্য প্রেতনিসর্গ মরীচিকা—
তাদের জন্য বলছি,
স্থির হও, আর, অন্ধকার থেকো না—
তোমাদের জন্যেও রেখে যাচ্ছি আমি
নির্নিমেষ আলোর প্রত্যাবর্তন।
[৫]
অতঃপর
ক্যামন হবে শব্দের বানান তোমাদের—নির্দিষ্ট করে নাও।
আসমান থেকে
ডান হাতের কব্জি বরাবর নিচে নেমে আসবে
নাকি
গভীর কোনও গিরিখাত যেমন কথা বলে ওঠে মাঝেমাধ্যেই—
সেই শৃঙ্গার-তন্ময়তায় ফুটিয়ে তুলবে কোনও
ফিসফাস কসমিক ঢেউ —ঠিক করে নাও।
অথবা সামনের থেকে, কিংবা পেছন থেকেও
যেভাবেই যুতসই লাগে তোমাদের
তুলে দিতে পারো, আর, নামিয়ে আনতে পারো
একেকটা আক্ষরিক আকৃতি
একেকটা ভাষাবিম্ব।
***************************
Thank you for the auspicious writeup It in fact was a amusement account it Look advanced to far added agreeable from you However how can we communicate
you are in reality a just right webmaster The site loading velocity is incredible It seems that you are doing any unique trick In addition The contents are masterwork you have performed a wonderful task on this topic