বিধান সাহার কবিতা
ফেরা
চলো, একদিন শৈশবের গ্রামে ফিরে যাই
চুপচাপ বসে থাকি কোনো এক উন্মুল বটতলায়
আর ছবি তুলি দমাদ্দুম।
এখন সরিষার সময় চলছে
গ্রামের মাঠগুলো হলুদে হলুদ হয়ে আছে
চলো, যাই—
হলুদ হই আমরাও।
সেই ছবিটার মতো—
একটা বটতলা, তার পাশ দিয়ে একটা পিচঢালা পথ
ঠান্ডা অজগরের মতো চলে গেছে—সেই রকম।
ধরো, সেই পথের মোড়ে, বটগাছকে কেন্দ্রে রাখা তে-মাথায়
একটা টিনের টোঙ দোকান
সারাক্ষণ চায়ের চুলো জ্বলতেই আছে আমাদের সমগ্র জীবনের মতো।
আর সমস্ত সকাল সেই চায়ের দোকানে
চা-বিড়ির ধোঁয়ার সাথে উড়ছে আটপৌড়ে জীবনের গল্প।
গ্রামের বয়স্ক লোকগুলোই
ক্ষণে ক্ষণে এই আড্ডায় প্রাণ সঞ্চার করে চলেছেন।
চলো, আমরা চুপচাপ সেই পথ ধরে আরেকটু এগোই।
সদানন্দের দেশে কখনও যাওয়া হবে না আমার।
মানাস-এর পাড়ে, সেই শিমুল তলায়ও যাওয়া হয় না বহুদিন
আলোর পাশে পড়ে থাকা একটা আলুথালু প্রাণ নিয়ে
চলো, আমরাও জীবন উড়াই।
তুমি হও নীল প্রজাপতি; আমি, তুমুল বটগাছ।
সুশোভন
সুশোভন দাস, আমিও বাড়ি যাচ্ছি। এখন বাসে। ক’দিন থাকব। নিজের সাথে। দুপুর দুপুর উদাসীনতার ভেতর দিয়ে আমি পাতাশূন্য গাছের হাহাকার দেখব। দেখব, ঝরাপাতার অনর্থক ওড়াউড়ি। আমি আমাকে দেখব সুশোভন দাস! বহুদিন আমি আমার ভেতরে নেই, তা তো তুমি জানো। আমি একটানা ঘুমিয়ে থাকব। রাত্রি নামার কালে শূন্য চরাচরে নাতিশীতোষ্ণ আদ্রর্তা মনে মাখব।
সুশোভন, প্রিয় সুশোভন দাস, সান্ধ্যরেখার চারপাশে, মাতৃছায়ায়, মুছে দিও আমার অসুখ।
**==**==**==**==**