তিনটি কবিতা || আশীক রহমান
আমরা
—-
প্রধান সড়কগুলি দখলে নিয়েছে বদমাশগুলি,
তাই আমরা হাঁটব হামেশাই
অলিগলিতে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে, অন্ধিসন্ধিতে!
যখন প্রধান সড়কে আসব, তখন এলোমেলো
হাঁটব নিজের পছন্দের নকশার
পোশাক পরে, যাতে ওইসব সড়ক
বিপর্যস্ত হয়ে যায়, ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়!
এই রক্তচোষা বেঢপ ফুলে ওঠা সুবেশি নগর যেন
চরম অস্বস্তিতে চিড়বিড় করে ওঠে, ক্ষেপে ওঠে -আমরা তা-ই চাই!
বিরক্তিতে ভদ্রবিত্তের চোয়াল পড়ুক ঝুলে!
—*—
ভেসে যায়
——
দেখি, চাঁদের আলো ঘন পাতার ফাঁক ও ফোঁকর
দিয়ে উঠানে আমার আছে ছড়ায়ে-ছিটায়ে
ছেঁড়া ছেঁড়া কাগজের মত সব!
দেখতে দেখতে রাত হয়ে যায়! ঘুমের পরী
আকাশগঙ্গা সাঁতরিয়ে দেয় পাড়ি!
আমি এইসব দেখি, দেখি আর ভাসি,
ভেসে ভেসে দেখি- হেসে হেসে খেলা করে
সোনালি বাল্যকাল! দেখি কিরকম সেইসব
হৈ চৈ দিন ভোকাট্টা চলে যায় কোথায়…!
দেখতে দেখতে রাত বেড়ে যায়! ঘুমের পরী
এই পাড়া ওই পাড়া করে বেড়ায়!
দেখি ছড়ায়ে ছিটায়ে আছে আকাশে আকাশে
আরশির টুকরা-টাকরা সব ঝিলমিল;
টুকরা শৈশব, টাকরা কৈশোর চলে যায় কোথায় উধাও!
চলে যায় পলাশী বাজার, লালবাগ, চানখাঁর পুল,
চলে যায় কোথায় নারদের পানি, জিলাপির গাছ জানি না!
গাদভরা স্রোতে ভেসে কোথায় যে যায় দেশ, জানি না!
—*—
সত্য যে কঠিন
————-
কেই-বা চায় ফেঁড়ে যাক বুক !
কে চায় বলুন,টলে যাক আরামের গদি,
যদি না হড়কে যায় কোনও ‘প্রাকৃতিক’ বিপত্তির ফলে?
ঘরদোর হারায়ে কার সাধ হয় উদ্বাস্তু হয়ে
থাকে সারাটা জীবন ? সত্য যে কঠিন,
তাহারে ভালবাসাও কঠিন !
সবাই, সবাই চায় কুলকুল বয়ে যাওয়া
বাধাবিহীন নদীর মত তরল জীবন,তাই
কঠিনের পাশ কেটে সটকে পড়াটা
জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি !
কে চায় সহজলভ্য লেহ্য,পেয় হারায়ে ফেলতে!?
কেনই-বা হারাবে মুখের কাছে ঝুলতে থাকা
আপেলের মত সুখ আর
কেন সে তাড়াতে যাবে বনের মহিষ নিজ-খেয়ে?
যদি ফেঁসে যায় পেট শিঙের গুঁতায়?
ভবলীলা শেষ হয়ে যায়?
…সত্য যে কঠিন খুব !
**********************