সুমন শামসুদ্দিনের কবিতা
উৎকর্ষভূমির দোলাচল
———————————————————
সৌন্দর্যের উৎকর্ষভূমি খনন করে-
পাচ্ছি শুধু বীভৎসতা!
যেখানে রোপিত হয়েছিল নিষ্পাপ প্রাণের বীজ
সেখানে নিষ্কণ্টক বৃক্ষরাজি কলুষিত ডালপালার ভারে-
নুয়ে পড়ে অসীতিপর বৃদ্ধের মতো!
অগভীর অন্ধকারে
শেকড়ের কাছে যদিও বিশীর্ণলতার মতো
লুকিয়ে আছে সবুজ সরলতা,
তবুও, লোভাতুর দিনগুলোর সংক্রামক ব্যাধিতে
ছেয়ে আছে বন্ধুর সমতল!
ভূমির উৎকর্ষতায় গাঢ় ধুলোর আস্তরণের নিচে
চাপা পড়ে থাকে উদ্বেলিত উৎসাহের মৃত্যু!
সরলতার সমাধির ওপর সংক্রামক অসাধুতা,
আর চাতুরীর পাঁচ আঙুলের অশুভ রেখাচিত্র!
জন্মাবধি বায়ান্ন শীত বায়ান্ন বর্ষা চলে গেছে
বসন্তগুলো বিস্তীর্ন ভূমির হায়েনার হাসিতে-
নীল-বেদনার উৎসবের অনুষঙ্গে মূলীভূত!
উৎকর্ষভূমির দোলাচলে অস্তিত্বের শেকড় আজ ক্লান্ত,
ভূমির ওপর থুবড়ে পড়ে থাকে সম্ভাবনার কৃষকায় বৃক্ষেরা!
মুক্ত মাটির নীড়
মা গো একটা শার্ট কিনেছি পরবো ঈদের দিন,
লাল-সবুজের আল্পনাতে বাজবে প্রাণের বীণ।
ওরা যদি আসতে না দেয় তোমার কোলে আজ-
জেনো আমি রক্ত দিয়েই পরবো বীরের সাজ।
শার্টটি পরে ঘুরতে যাবো তোমায় নিয়ে মা গো,
মাটির কানে বলবো ডেকে, বীর বাঙালি জাগো।
হয়তো ওরা করবে গুলি তোমার ছেলের বুকে,
তবু আমি থামবো না মা, দেবো জালিম রুখে।
রক্তে লেখা শপথ মা গো মাটির অধিকার,
নরপশুর বিরুদ্ধে তাই যুদ্ধ স্বধিকার।
শপথ নিলাম জহরমুক্ত করবো তোমার কোল-
সেই কোলেতে শুয়েই আমি পড়বো শান্তিবোল।
দোয়েল-কোয়েল মুক্তকণ্ঠে গাইবে মধুর সুরে,
শাপলাবিলে কাটবো সাঁতার তোমার শান্তিপুরে।
যমুনাস্রোত চলবে ধেয়ে বঙ্গসাগর প্রেমে,
সোনালি আঁশ, পালের নৌকো আঁকবো সবুজ ফ্রেমে।
মাটির কসম করবো বিনাশ পীড়নকরের ঘাঁটি,
মুক্ত করবো তোমার কোলের প্রতি ইঞ্চি মাটি।
ভেবো না মা আমি যদি না আসি আর ফিরে-
রক্তে রাঙা শার্টটি আমার উড়বে মুক্ত নীড়ে।
নিউইয়র্ক, মার্চ ১৯, ২০২৪
================