You are currently viewing দুইটি কবিতা || আজিজ কাজল

দুইটি কবিতা || আজিজ কাজল

দুইটি কবিতা || আজিজ কাজল

 

সাধারণের পুরস্কার

ধনুক হয়ে ঠেশে যাচ্ছে সরল মানুষের পায়চায়ি, সারাদিনের পরিশ্রম, ঘর্মাক্ত
শরীর— অস্পষ্ট ঝুলকালিতে রসুই ঘরগুলো লাল হচ্ছে।

পিঁয়াজ-সুদিন পেরিয়ে বাজারে যাই, ঘেঁটে ঘেঁটে বের করি সদাইপাতির চিঁটা—
হাজার বছরের বাংলার সোজা সাপ্টা ধ্যানগুলা, সিংহবিগলনে মেলে না হিসাব!

এদিকে শরবিদ্যা নিয়ে বসে আছে ভণ্ড নব দ্রৌণাচার্য;
সারা গায়ে ফোটায় আগুন দামের দন্তফুল—
এই করে মাঝে মাঝে কিছু মুখ দেখি
এই করে মাঝে মাঝে দেখি মুখোশ!
শরীর-মনের বিক্ষিপ্ত ব্যাকরণে প্রতিদিন আলগা হতে থাকি।

 

মধু-ফুলের মা

মা—আমরা প্রতিদিন তার একটা একটা করে পালক ছিঁড়েছি, অথচ তিনি ফলভার, নত ও
বিব্রত হয়েছেন।

মা—ফরশা ভাতের মুচা নিয়ে দরদ-চোখে চেয়ে আছেন; তার লালাজল মাখা পান-খয়েরের
মিঠা হাসি —ওম-পালকে, সব ছানাপুনাদের আগলে রাখতেন।

দুর্বিসহ পৃথিবী ঠুলে-ওঠলেই, পুরো পরিবার চিৎকার করে মায়ের বুকের কার্পাসে
ঢুকে পড়ি—আমাদের নিত্য চুনকাম, ব্যর্থ-শ্রাবণের কোটি কোটি বাষ্প-মেঘ
আরও ঘন হয়ে ওঠে— এইরক্তঋণকে হেলা করে, ঘুণে ধরা পৃথিবীর নিঠুরতাকেই জয়
করেছি!

ডোরা ভাঙা পথে, চঞ্চল চিহ্ন ধরে তিনি চলে যাচ্ছেন, তাকে ছুঁতে না পেরে, কত
ফণি মনসার খোপ, বদল-শ্রাবণের গাঁথুনি মেখেছি পালকে।

পৃথিবীর লোভী-শর্করা পিঠে মায়ের মহাপ্রাণ দুলছে—
আস্তে আস্তে মহাজাগতিক ধুলোয় মিশে যাচ্ছেন তিনি।

*********************