কবিতাত্রয়
তৌহীদা ইয়াকুব
প্রান্তিকে দাঁড়িয়ে
মেঘেদের পরিবর্তনের দীক্ষা
আর পৌরানিক বুনো ফুলের ফুটে থাকা
মনে করা যেতে পারে, কিছুটা নির্ভার
নির্জরা প্রেমের আটটি প্রহরও
এমনও নয় সব অন্তরায় মুছে যাবে।
পথে পথে কুড়িয়েছি যা কিছু পরিত্যাজ্য
এত ভুলে ক্ষমা কেউ কি দেখছে ?
স্মৃতি খুঁড়ে কিছু গল্পের অনিন্দ্য প্রহর
ধোয়াকুন্ডের ভেতর দু’একটা সুখটান,
এইতো এখন নামিয়ে রাখা যাবে
তামাদি দিনের ভার।
এবার ধ্যানস্থ ছবিতে সাজাবো
একাকিত্বের মোহ, হে আকাশ
হে রূপারঙা চাঁদ দিগন্ত থেকে
সরিয়ে নাও তোমার আনত
বাসনার চোখ,
সমুহ প্লাবনের দিন ।
—–০০০০——-০০—-
এসব মনে পড়ে
থেমসের পার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছবিটা
কুয়াশা আর ছেঁড়া মেঘে ভেজা ।
বৃষ্টিরঙা দিনের সংগুপ্ত ঢেউ নিয়ে
ভুট্টা-পোড়া গন্ধের যাযাবর হাওয়া
এলোমেলো করে গেছে মানুষের দেশ।
তখন স্বপ্ন, শুধুই স্বপ্ন নিয়ে
কথার দিন ছিলো রাত ছিলো ।
ক্লান্তিকর কাস্টমার সার্ভিসের বেলাশেষে
ক্যামডেনের ফেরা পথে
পাইনের সারির ভেতর ঢুকে যেতো
হিজল ,বটের উপকথার মতো বর্ষীয়ান মুখ
মায়ার নগর ।
ঠিকানা লেখা ছেড়াপাতা হারিয়ে গেছে।
অজানা মোড় এসে শঙ্কিত অন্ধকার ব্যবচ্ছেদ ক’রে
তুলে আনে কেবলই সান্ত্বনাহীন পথের পর পথ ।
সুর বা সুরা কিছুই থাকেনি গলায়
স্তব্ধতা বিষয়ে অনেক দুপুরের কথা মনে পড়ে
রাত্রির ট্রেনের সন্ত্রাস দূরে মিলায়ে গেলে
পাড়া জুড়ানো ঘুম নেমে আসে
দিন রাত্রির পৃথিবীতে ,মনে আছে।
ভাবি আমি স্বপ্নশূন্য , নির্ভার হবো
ছেড়ে যাবো প্রেম বাসনার অবয়ব
অক্ষয় হরকরা দেখো ,
কেবল তোমার দিকে
এই আমি অনন্তকাল হা করে আছি
—–০০০০—–০০০—
সংযোগ
মাঠের পার থেকে , দূর সমুদ্র থেকে
হাওয়া এসে ছুঁয়ে গেছে থেমে থাকা
নিভৃত বিহার ,অন্তরালের সুর
তাকে পাশ কাটিয়ে সঁপেছি প্রবাহের মুখে।
সন্নিধানের সব কিছু পরিপাটি করে
দেখা অমায়িক মুগ্ধতা।
কোন জটিল খেলা নয় ধৃষ্টতার ,
শুধু ব্যাস ভুলে যাওয়া ,
স্বপ্ন থেকে আত্মাকে বাঁচিয়ে
ফিকে হয়ে আসা
অপগত সময়কে অঞ্জলি দেয়া।
শুদ্ধ অবগাহনের কোন নদী নেই পৃথিবীতে আর
কোথা থেকে সংযোগ, মন্ত্রনা তবু উঠে আসে ?
অন্ধকার কিনারে একা হোলে
পঞ্চদশ নক্ষত্রের গায়ে রাত ও ঘ্রাণ
মিহি কথার পার্বণ সাজায়।
—–০০০০—–০০০—