You are currently viewing ষড়যন্ত্র সফল হবার পেছনে হাসিনার অযোগ্যতাই মূলত দায়ী- রাজু আলাউদ্দিন

ষড়যন্ত্র সফল হবার পেছনে হাসিনার অযোগ্যতাই মূলত দায়ী- রাজু আলাউদ্দিন

ষড়যন্ত্র সফল হবার পেছনে হাসিনার অযোগ্যতাই মূলত দায়ী
– রাজু আলাউদ্দিন

আশা করছি কুশলে আছেন। আপনার কী মনে হয়- ভালো থাকা, না- থাকা একটি রাজনৈতিক ঘটনা?

আপনার এই প্রশ্নের পর ভালো থাকা না-থাকার উত্তর আর সহজ থাকছে না, কারণ ভালো বললে তার একটি রাজনৈতিক অর্থ ও পরিস্থিতিকে বুঝাবে। কিন্তু, রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঠিক বয়ান হাজির করতে গেলে বলতে হবে ভালো নেই। বহুদিন থেকেই বাঙালি জনগোষ্ঠী ভালো নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষ অপরাজনীতি, দুর্নীতি, সামাজিক বিশৃঙ্খলা আর ধর্মান্ধতার কারণে অনেক বেশি অধঃপতিত। রাজনৈতিক নেতৃত্বে আদর্শ নেতার অভাব সাধারণ মানুষের জীবনকে দুঃসহ করে তুলেছে। এই দেশ এখন গুটিকয় লুটেরাদের স্বর্গ হয়ে গেছে, সাধারণ মানুষদের জন্য হয়ে উঠেছে নরক। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ভালো থাকা না-থাকাটা রাজনৈতিক না হয়ে উপায় নেই।

২০২৪-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে আপনি কীভাবে দেখেন? প্রধান উপদেষ্টা্র কথিত “ম্যাটিকুলাসলি প্ল্যানড” সম্পর্কে আপনি কি ভাবেন?

২০২৪-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে অনেকেই নানাভাবে ব্যাখ্যা করছেন। কেউ কেউ একে ইতিবাচক বললেও, কেউ কেউ নেতিবাচকও বলছেন। আমি বলবো এই পরবর্তনে দুটো দিকই আছে। এই পরিবর্তন অনিবার্য ছিল। যে-কোনো সরকারের পতনের পেছনে দুর্নীতি, অদক্ষতা, স্বেচ্ছাচার একটা বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা-সরকারের আমলেও তাই হয়েছে। হাসিনার অতিমাত্রায় ভারত-নির্ভরতা, তার দাম্ভিকতা, প্রধান বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপগুলো দেশের রাজনীতির অনেক ক্ষতি করেছে। ভিন্নমতকে দমনের সবরকম চেষ্টাই তিনি করেছেন, এই লক্ষ্যে করেছেন ডিজিটাল আইন। স্বৈরাচারী সংস্কৃতির সবগুলো লক্ষণই ছিল তার আমলে। তাছাড়া, লুটপাট, দুর্নীতি, আমলা ও পুলিশ-নির্ভরতা ও তাদেরকে অবৈধ সুযোগ সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে তিনি জননির্ভরতাকে চরমভাবে অবহেলা করেছেন। সাধারণ মানুষের কোনো পছন্দ ছিল না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও ওই সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল, কারণ বণিক গোষ্ঠীর স্বার্থ ওই সরকারের কাছে মূখ্য ছিল। এর ফল হিসেবেই তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। ২৪ সালের আগস্টে না হলেও, এটা ঘটতোই। আমি এই ঘটনাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখি। কথা হলো, পরিবর্তনের পরে এখন যা হচ্ছে তা ইতিবাচক কিনা। এর ইতিবাচক দিক হচ্ছে এই যে জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে গিয়ে ক্ষমতায় যে চিরকাল থাকা যায় না, তা শেখ হাসিনা সরকার এখন বুঝতে পারছে, এটা তাদের জন্য একটা বার্তা। তারা যদি আবার ক্ষমতায় আছে তাহলে তারা পুরোনো পদ্ধতি ও ভাবনা বদলাতে হবে। এবং এই শিক্ষাটা অন্য দলগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দেখুন, ম্যাটিকুলাসলি প্লানড নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। এই কথাটার অর্থ এই যে শেখ হাসিনাকে উৎখাতের পেছনে একটা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল—এটা প্রমাণ করতে চায়। কোন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয় না বা হয়নি, বলুন তো? প্রতিটি সরকার প্রধান কি সেটা জানেন না মনে করেন? ফিদেল কাস্ত্রোকে ক্ষমতাচ্যুত বা হত্যা করার পরিকল্পনা কতবার করা হয়েছিল, মনে আছে? কুবার সাবেক ইনটেলিজেন্স প্রধান ফাবিয়ান এস্কালান্তে ২০০৬ সালে জানিয়েছিলেন যে কান্ত্রোকে হত্যা করার ৬৩৪টি পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। এবং প্রতিটি পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে তিনি শেষ পর্যন্ত ৯০ বছর বেঁচে ছিলেন। শেখ হাসিনাকে হত্যা পরিকল্পনা হয়েছিল বহুবার। তিনি কি তা জানতেন না? ম্যাটিকুলাসলি প্লানড হচ্ছে– এটা তিনি নিশ্চয়ই জানতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চটিয়ে তিনি ক্ষমতায় ছিলেন, তিনি নিশ্চয়ই জানতেন যে তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক বা সরকার-প্রধান এই বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেন। শেখ হাসিনা এই পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেই ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। এর জন্য ম্যাটিকুলাসলি প্লান্ড নামক ষড়যন্ত্রতত্ত্বকে একমাত্র দায়ী বলে আখ্যায়িত করার কোনো মানে হয় না। ওই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়ার পেছনে তার নিজের অযোগ্যতাই মূলত দায়ী।

জুলাই আন্দোলনের শুরুতে আপনার বিবেচনা কেমন ছিল?

সত্যি বলতে কি, আমি ভেবেছিলাম শেখ হাসিনা এটি সামাল দিতে পারবেন, কারণ এর আগে শাপলা চত্বর তিনি সামাল দিতে পেরেছিলেন। কিন্তু অচিরেই লক্ষ্য করলাম তিনি এই আন্দোলনটিকে উস্কে দেয়ার মতো এমন সব দাম্ভিক উক্তি করলেন আর এমন সব নির্বোধ পদক্ষেপ নিলেন যে তা ধীরে ধীরে একদফায় গিয়ে রূপান্তরিত হলো। তিনি দূরদর্শী হলে এই আন্দোলনকে শুরুতেই সামাল দিতে পারতেন। কিন্তু পুলিশি ক্ষমতায় তার আস্থা এত বেশি হয়ে গিয়েছিল যে সেই ভুল বিশ্বাস তাকে চোরাবালির দিকে নিয়ে গেছে। তাছাড়া, আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগ দুর্নীতি, লুটপাট ও চাঁদাবাজিতে এতটাই মজে গিয়েছিল যে এই আন্দোলনকে প্রতিহত করার মতো সাংগঠনিক ও নৈতিক শক্তি আর ছিল না। ফলে, যা হবার তা-ই হয়েছে। আমি চাইছিলাম একটা পরিবর্তন আসুক। শেখ হাসিনা, দেশের প্রায় সবগুলো রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছিল। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে,সামিট গ্রুপ ও আলম গ্রুপরা কিভাবে ব্যাংকগুলো লুট করেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এত বেশি ব্যাংক এক সরকারের আমলে মাত্র দুই তিনটি মানুষের দ্বারা লুট হয়নি। আরও আশ্চর্য ব্যাপার হলো, এই লুটগুলো হতে দিচ্ছিল সরকার। জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী ও নেতৃত্বে থাকা সবাই এই দুর্বলতাগুলোকে পুজি করে আন্দোলনকে চাঙা করতে পেরেছিল। ফলে প্রথম দিকে পরিবর্তনে আশাবাদী না হলেও, ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে শেখ হাসিনা আর সামাল দিতে পারবেন না। এবং হয়েছেও তাই।

৫ই আগস্টের রাজনৈতিক রদবদলের পর আপনার ভাবনা, কী দুর্ভাবনা কোন বিষয়ে আবর্তিত হচ্ছিল?

নিশ্চিতভাবেই স্বাধীনতা ও প্রগতিশীল চেতনার প্রতীকগুলো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর হামলা দেখে দুর্ভাবনা হয়েছিল, সেটি এখনও হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা এই আন্দোলনের পর সংঘবদ্ধ হওয়ার সুযোগ ও প্রদর্শনের অবাধ সুযোগ পেয়েছে—এটাই প্রধান দুর্ভাবনা। মৌলবাদী শক্তির উত্থান ও তাদের কর্মকাণ্ড আমাদের রাজনীতি ও সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। আমরা স্বৈরাচারী সরকারের পতন চেয়েছিলাম, কিন্তু এই পতনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তির উত্থান ও অবাধ তাণ্ডব চাইনি। যখন জানতে পারলাম যে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ মৌলবাদী রাজনীতি ও চিন্তাচেতনার প্রতিভূ যারা ছাত্রলীগের ভেতরে বহু আগেই আত্মপরিচয় গোপন করে প্রবেশ করেছিল, তখন প্রতারিত বোধ করেছি।

জুলাই অভ্যুত্থানকে আমাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের নিরিখে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

জুলাই অভ্যুত্থান অনিবার্য ছিল, কারণ হাসিনা-সরকার যেভাবে নিপীড়ক, লুটেরা ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠেছিল, তাতে করে মানুষ এ থেকে মুক্তি চেয়েছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শক্তি যে প্রগতিশীল চেতনার ছিল না তা এখন অনেকটাই স্পষ্ট। তারা প্রগতিশীল চেতনার না হওয়ায় তারা নিশ্চিতভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে অবস্থান করে। তা যে করে সেটা বুঝা যায় তারা যখন ফেব্রুয়ারিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে রাস্তায় রাস্তায় যে-পোস্টার সেঁটে দিলো সেখানে ৫২ থেকে লাফ দিয়ে ২৪-এর আন্দোলনের কথা বললো, কিন্তু ৭১কে রাখলো ওই ঘোষণার বাইরে। এ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে তাদের অবস্থান ও উদ্দেশ্য পরিস্কারভাবে বুঝা যায়।

এতো রক্তপাতের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শক্তির পতন হলো। মানুষ আশাবাদী হলো। প্রধান উপদেষ্টার বলা “রিসেট বাটন চেপে দিয়েছি” প্রচারিত হবার পর থেকে দেশে ব্যাপকভাবে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, স্থাপনা, স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস করা হলো। মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন দেয়া হলো। এসব ঘটনাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

আপনার আগের প্রশ্নের উত্তরেই এই বিষয়ে খানিকটা বলা হয়েছে। পুনরুক্তি করে আবারও বলি: ফ্যাসিস্ট শক্তির পতন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যারা এসেছে তারাও ফ্যাসিস্ট চরিত্রেরই। ড. ইউনূসের গাল-ভরা কথাগুলো শুনতে ভালো লাগে বটে, কিন্তু রিসেট হয়নি কিছুই। যা হয়েছে তা এক নবীন যদুর বংশ। তিনি রিসেট বাটন টিপে পরাজিতদেরকে মুক্ত করেছেন আর তাদেরকে অবাধ কর্মকাণ্ডের সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা ‘মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, স্থাপনা, স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস করছে, ‘মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন’ দিচ্ছে। স্বৈরাচারী হিসেবে শেখ হাসিনা বা তার অনুসারীদের প্রতি তাদের এই আক্রমণ ও ধ্বংসগুলো পরিচালিত হলে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি হতো না। কিন্তু তারা বেছে বেছে স্বাধীনতার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে আক্রমণ করছে।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাজনীতির মাঠে একটা বল ক্রিয়াশীল আছে-সুস্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে, এরা কট্টর ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী- যারা বলছে ধর্মীয় মূল্যবোধ ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ গঠিত হতে পারে না। এই বয়ানকে আপনি কীভাবে দেখেন?

‘ধর্মীয় মূল্যবোধ ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ গঠিত হতে পারে না।’ যারা বলছে তারা মানুষের ইতিহাস ও রাজনীতির ইতিহাস সম্পর্কে হয় কিছুই জানেন না, কিংবা জেনেশুনেই মিথ্যাচার করছেন। পৃথিবীতে ধর্মীয় মূল্যবোধহীন বহু রাষ্ট্র আছে যারা অত্যন্ত গণতান্ত্রিক। আপনি স্ক্যান্ডিনিভিয় দেশগুলোর দিকে তাকান, আপনি এশিয়ার জাপানের দিকে তাকান—এই দেশগুলোর গণতন্ত্র কি ধর্মীয় মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত? ধর্মীয় মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র সবসময়ই পরস্পরবিরোধী। ধর্ম মানে পক্ষপাত। ধরে নিচ্ছি আপনি রাষ্ট্রে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রয়োগ করবেন। কোন ধর্মের মূল্যবোধ প্রয়োগ করবেন আপনি? ইসলাম? তাহলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মূল্যবোধ কেন নয়? যদি গণতন্ত্রের কথাই বলেন তাহলে সংখ্যালঘুরও অধিকার আছে তার ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রয়োগের। যেহেতু প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীদেরই অধিকার থাকতে হবে, তাই আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ধারণায় ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে যাতে করে কোনো ধর্মের প্রতি পক্ষপাত না জন্মায়। যারা গণতন্ত্রও চায় আবার ধর্মীয় মূল্যবোধও প্রয়োগ করতে চায়, তারা নিশ্চিতভাবেই গণতন্ত্র চায় না, মূলত গণতন্ত্রের ধুয়া তুলে শুধুই ধর্মীয় মূল্যবোধ, বিশেষ করে ইসলামি মূল্যবোধই প্রয়োগ করতে চায় আফগানিস্তানের অনুসরণে।

ইসলাম একত্ববাদী। ইসলামিস্ট দলগুলোর বহুত্ববাদের শ্লোগানকে আপনি কিভাবে দেখেন?

এই দেশের কোনো ইসলামি দলই বহুত্ববাদে বিশ্বাস করে না, সেটা তাদের কর্মকাণ্ড থেকেই বুঝা যায়। তারা এখন বহুত্ববাদের কথা বলছে মূলত জনসমর্থন আদায় করার লোভে। আমি এটাকে তাদের মোনাফেলি বলবো।

বাংলাদেশকে দ্বিতীয় রিপাবলিক হিসাবে দেখতে আপনি আগ্রহী, নাকি আতঙ্কিত?

১৭৮৯ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সে যে বিপ্লব হয়েছি তার পেছনে ছিল সত্যিকারের চিন্তা দ্বারা উদ্ভুদ্ধ বিপ্লব, সেটা সত্যিকার অর্থেই বিপ্লব, নিছক আন্দোলন বা অভ্যুত্থান নয়। আমাদের এখানে সেই ফরাসি বিপ্লবের অনুসারে দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা বলা হচ্ছে, এটা স্রেফ অজ্ঞতাপ্রসূত কথা। তারা দ্বিতীয় রিপাবলিকের চিন্তাগত পার্থক্য সম্পর্কে হয় কিছুই জানেন না, নয়তো দ্বিতীয় রিপাবলিক বলে আমাদেরকে বোকা বানাবার চেষ্টা করছেন। আমি আতঙ্কিত নই, স্রেফ বিরক্ত তাদের অজ্ঞতায়।

দেশের বর্তমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে মানুষ শঙ্কিত, সন্ত্রস্ত। এমন বাস্তবতায় সামগ্রিকভাবে আপনি কেমন বাঙলাদেশ দেখতে চান?

চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ যেভাবে বেড়েছে তাতে পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। তারপরও আমি হতাশ নই; প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন দিয়ে দেশটিকে পুনর্গঠিত করতে পারবে। আমি অসাম্প্রদায়িক এক গনতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন দেশ চাই যেখানে প্রতিটি ধর্মের এবং নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমান অধিকার ভোগ করবে। যেখানে নারীকে স্বাধীনভাবে পোষাক আশাক ও ধুমপানের জন্য হেনস্তার শিকার হতে হবে না। যেখানে শক্তির দাপট থাকবে না। যেখানে প্রতিটি নাগরিকের রাষ্ট্রের মৌলিক অধিকারগুলো ভোগ করার নিশ্চয়তা পাবেন।
*****************************

রাজু আলাউদ্দিন
কবি, লেখক ও অনুবাদক
*****************************

Leave a Reply