তিনটি কবিতা
মানিক বৈরাগী
উত্তরের জলপাই বনে
পচন ধরেছে ডাইনে আর বামে
পচন ধরেছে চেতনাদর্শের আস্তাবলে
পচন ধরেছে ক্ষমতার খোয়াড়ে, অলি – গলির অলিন্দে
ক্লীব কর্তার ধ্বজভঙ্গ শিবদন্ডও খাঁড়ায় কামজ্বরে
বাৎস্যায়নের দ্যাশে দ্রুত বীর্যপতন রোগের উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে
আগাম বসন্ত বাতাস বইছে উত্তরের জলপাই বনে
মালী – মালীপ্রধানেরা উফশী অগ্নিবীজ শোকাচ্ছে রোদে
বহুদিন নাড়াচাড়া হয়নি, মরছে পড়েছে জলপাই লাঠিতে
কতোদিন তারা শীতঘুমে ছিলো, খায় আর ঘুমায় কর্তার আদেশে
এভাবে অলস দেহে মেদ জমেছে, জং পড়েছে লৌহ- দেহের কলকব্জায়।
জলপাই চাষা,মজুর, মালিদের দক্ষতা – সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে
পূর্ব-উত্তর মেঘনা – গোমতীর চরে নয়া – উপনিবেশিক চাষাবাদের কর্ম – কৌশলের
অতিব গোপনীয় উচ্চতর বৈজ্ঞানিক গবেষণা, কর্মশালা, ফিসফাস, চুপচাপ বৈঠক চলছে
সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক জমিনে গবেষণালব্ধ জলপাই অগ্নিবীজের ফুলকি ফুটবে ।
সংঘবদ্ধ জলপাই অগ্নির সমুখে পুড়ে যায় সংবিধান, আইন, আদালত, বিচারক।
জলের কুচকাওয়াজ
খিড়কির ফাকগলে বৃষ্টিভেজা কিরণ
আসে শ্রাবণ মুখর প্রভাতে
মেঘাশ্রিত ধোঁয়াশে আলোয় আকাশ যেনো কাঁদছে
কবিতার খাতারা আজ বড়ো বিষন্ন
মধ্য শ্রাবণের মেঘে ঢাকা পূর্ণিমা চাঁদের কিরণও ভূতুড়ে বিবর্ণ
কান্নারত বৃষ্টিরা প্রভাতের আলোয় খুব ক্লান্ত অবসাদগ্রস্ত
বিষন্ন – বিষাদ ধীরেধীরে ঘুণপোকার মতো
চুষে নিচ্ছে উচ্ছ্বাসের অনুরনন
কোথাও কারা কোন কোন খোয়াড়ে পদধ্বনি শোনা যায়
জলের কুচকাওয়াজ
সারারাত তাদের উপর খুব দখল গেছে
মেঘনা-গোমতির খরস্রোত আজ থেকে গতিহারা।
পুড়ে চুরুট জ্বলি আমি
জেগে থাকি রাতভর, আশায় আশায়
কুয়াশাভোর, পোড়া তামাকের গন্ধমাখা হিমেল বাতাস
ধীরে ধীরে কুয়াশার যোনি ভেদ করে আলোর কোলাহল
পাখির কলরোলে দিনমণি ধীরে ধীরে জাগে মানুষপ্রাণী
গন্ধরাজের সুভাষ নিতে ভ্রমর গুঞ্জরিছে ফুলমালি আসে
সবিতার কিরণে সবিতা আসেনি।
পূর্ব দিগন্ত রেখায় অলৌকিক রঙমহলে হাসির ফোয়ারার হলাহল
ভোর কুয়াশায় কি অদ্ভুৎ সুন্দর অপসারী হাসে
সবিতা তুমি কি তেমন হাসো কুয়াশার আলো-আঁধারে?
আশায় আশায় পুড়ে যায় চুরুট, জ্বলে যাই আমি
এভাবেই আলোকিত অন্ধকারে ঘুমিয়ে পড়ি।