You are currently viewing শিক্ষকরূপে ঔপন্যাসিক চিনুয়া আচেবে/ অনুবাদ: আলম খোরশেদ

শিক্ষকরূপে ঔপন্যাসিক চিনুয়া আচেবে/ অনুবাদ: আলম খোরশেদ

শিক্ষকরূপে ঔপন্যাসিক চিনুয়া আচেবে

অনুবাদ: আলম খোরশেদ

আমি যে-ধরনের লেখালেখি করে থাকি তা আমাদের অ লে তুলনামূলকভাবে নতুন, তাই আমার লেখার সঙ্গে পাঠকের যে-জটিল সম্পর্ক সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনার সময় এখনো হয়নি। তবুও আমি মনে হয় এই সম্পর্কের অন্তত একটা দিক নিয়ে নাড়াচাড়া করতে পারি, কালেভদ্রে যার উল্লেখ করা হয়ে থাকে। ইউরোপীয় শিক্ষার কারণে আমাদের লেখকেরা যদি ভেবে থাকেন যে, ইউরোপীয় লেখকের সঙ্গে তাদের পাঠকের যে-সম্পর্ক তারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে আফ্রিকায় তবে তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া যায়। আমরা ইউরোপ থেকে জেনেছি যে, একজন লেখক কিংবা শিল্পী থাকেন সমাজের প্রান্তে- তার মুখে দাড়ি, পরনে অদ্ভুত পোশাক আর ব্যবহার পাগলাটে। সমাজের বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহ, বদলা হিসেবে সমাজও তাকে শত্রুতার না হলেও সন্দেহের চোখে দেখে। তাকে কোনো দায়িত্ব দেয়ার কথা সমাজ ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করবে না।

এ সবই আমাদের জানা, যে-কারণে আমাদের কেউ কেউ খুব উন্মুখভাবে সমাজের কাছ থেকে শত্রুতা প্রত্যাশা করে কিংবা এমন ভাব দেখায় যেন সমাজের কাছ থেকে তারা ঠিক সেই ব্যবহারই পাচ্ছে। কিন্তু আমি এই মুহূর্তে লেখকেরা সমাজের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করে সেটা জানতে আগ্রহী নই, সে তো তাদের বইয়েই আছে, অন্তত থাকা উচিত। যার তেমন উল্লেখ নেই সেটা হচ্ছে, সমাজ তার লেখকদের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করে।

অবশ্য আমি ধরেই নিচ্ছি যে, আমাদের লেখক এবং তার সমাজের অবস্থান এক জায়গাতেই। আমি জানি আফ্রিকান লেখকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উত্থাপিত হয় যে, তাদেরকে ইউরোপীয় ও মার্কিনি পাঠকদের জন্য লিখতে হয়, কেননা আফ্রিকান পাঠক, যদি আদৌ তা থেকে থাকে, পড়ে কেবল পাঠ্যবই। এ নিয়ে অনেক বাকবিতন্ডাও হয়েছে। আমি জানি না আফ্রিকান লেখকেরা সবসময়ই এই বিদেশি পাঠকদের কথা ভাবেন কি না। আমি যা জানি তা হচ্ছে, তাদের তা ভাবার দরকার নেই। অন্তত আমার নেই। গত বছর আমার থিংস ফল অ্যাপার্ট বইয়ের সুলভ সংস্করণের বিক্রির খতিয়ানটা এ-রকম : ব্রিটেনে ৮০০ কপি, নাইজেরিয়ায় ২০,০০০ কপি, অন্যত্র ২,৫০০ কপি। নো লংগার অ্যাট ইজ বইয়ের বেলাতেও এটা সত্যি।

আমার অধিকাংশ পাঠকই তরুণ। তারা হয় স্কুল কলেজের ছাত্র নতুবা সদ্য পড়াশোনা শেষ করেছে। তাদের অনেকেই আমাকে তাদের এক ধরনের শিক্ষক হিসেবে ভাবে। এইতো সেদিন আমি উত্তর নাইজেরিয়া থেকে নিচের চিঠিটা পেয়েছি:

প্রিয় চিনুয়া আচেবে,

আমি সাধারণত লেখকদের কাছে চিঠি লিখি না, তা তাদের লেখা যত আকর্ষণীয়ই হোক না কেন, কিন্তু আমার মনে হয়েছে আমার অবশ্যই আপনাকে বলা উচিৎ আপনার থিংস ফল অ্যাপার্ট ও নো লংগার অ্যাট ইজ বই দুখানি আমি কতখানি উপভোগ করেছি। আমি আপনার পরবর্তী বই অ্যারো অভ গড পড়ার জন্যও উন্মুখ হয়ে আছি। আপনার উপন্যাসগুলো তরুণদের কাছে উপদেশরূপে কাজ করে। আমি বিশ্বাস করি আপনি ভবিষ্যতে এরকম আরো অনেক বই লিখবেন।

বন্ধুত্বময় শুভকামনায়,

 

আপনার বিশ্বস্ত,

আই. বুবা ইয়েরো মাফিন্দি

এটা খুব পরিষ্কার এই বিশেষ পাঠকটি আমার কাছ থেকে ঠিক কী প্রত্যাশা করে। কিংবা ঘানার সেই পাঠকটির উদ্দেশ্য বিষয়েও বিশেষ সন্দেহ থাকে না, যে খুব করুণ এক চিঠিতে আমাকে লিখেছিল, আমি কেন থিংস ফল অ্যাপার্ট বইয়ের শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বটি যোগ করতে অবহেলা করেছি, সেই সঙ্গে এমন আব্দারও জুড়ে দিয়েছিল যেন আমি তাকে সেগুলো লিখে পাঠিয়ে দিই যাতে করে সে পরের বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারে। প্রাকৃত নাইজেরীয়তে আমি এই জাতীয় পাঠকদের ’নাবালক পাঠক’ বলি এবং আশা করি এদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এই ঘানাতেই আমি এক তরুণী স্কুলশিক্ষকের দেখা পেয়েছিলাম যে আমাকে সাক্ষাৎমাত্র ভর্ৎসনা করতে শুরু করেছিল আমার নো লংগার অ্যাট ইজ বইয়ের নায়কের সঙ্গে তার প্রেমিকার পরিণয় না ঘটানোর জন্য। কোনো গালভারি সমালোচক এসে যখন আমাকে বলে আমি বইটি এভাবে না লিখে অন্যভাবে লিখতে পারতাম তখন আমি সাধারণত যেরকম দুর্বোধ্য সব শব্দ করে থাকি তার বেলাতেও তা-ই করেছিলাম। কিন্তু আমার সেই নারী শিক্ষকটিকে এত সহজে ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছিল না। সে রীতিমত সিরিয়াস। আমি কি জানি, সে আমাকে প্রশ্ন করে, যে আমার বইয়ে যে-রকম বর্ণনা করেছি ঠিক সেরকম অবস্থায় প্রচুর মেয়ে রয়েছে যারা খুবই উপকৃত হত যদি আমি দেখাতে পারতাম প্রথার বিরুদ্ধে যাওয়ার মত সাহসী অন্তত একজন পুরুষও আছে ?

অবশ্যই আমি তার সঙ্গে একমত হইনি। কিন্তু সেই তরুণী এতটা আবেগ দিয়ে কথা বলছিল যে, যুবসমাজকে তাদের খামখেয়ালিপনা বিষয়ে জ্ঞানদানের এক দুর্লভ সুযোগ নষ্ট করেছি আমি, তার এই অভিযোগে (খুব সিরিয়াস অভিযোগ নিঃসন্দেহে) খানিকটা অস্বস্তি অনুভব না করে পারছিলাম না। এখানে এ কথা বলে নেয়া দরকার যে, কোন আত্মমর্যাদাবান লেখকই তার শ্রোতাবর্গের কাছ থেকে নির্দেশ গ্রহণ করে না। সমাজের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণের এবং প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার মত স্বাধীন থাকা উচিত তার। কিন্তু আমি আমার উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে চাই খুব সতর্কতার সঙ্গে। আমি কেন নাইজেরীয় সেই পত্রিকা সম্পাদকের মত ইউরোপীয় শিল্পোন্নয়ন ও কারিগরি সভ্যতার ’হৃদয়হীন দক্ষতা’-র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে যাব, যখন আমাদের সমাজের ঠিক এই জিনিসটারই দরকার খুব ?

বিভিন্ন সমাজের নিজস্ব চাহিদা বিষয়ে আমার চিন্তা ধারালো হয়েছিল অল্প কিছুদিন আগে একটি ইংরেজি পপ গান শুনে যার শিরোনাম ছিল ’আমি গোসল করবো না পাক্কা সাতদিন’। প্রথমে আমি অবাক হয়েছিলাম এটা ভেবে যে, যেখানে এর চেয়ে আরো অনেক অর্থপূর্ণ ওয়াদা করার সুযোগ রয়েছে সেখানে সে কেন এমন এক অদ্ভুত প্রতিজ্ঞা করতে গেল ? পরে আমার মনে হলো যে, এই গায়ক এমন এক সাংস্কৃতিক স¤প্রদায়ের সদস্য যারা আত্মসন্তুষ্টির আদিযুগে পরিচ্ছন্নতাকে ঈশ্বরবিশ্বাসের সমতুল্য বলে প্রায় ধর্মদ্রোহের অপরাধ করেছিল। আমি তখন তাকে নতুন আলোকে দেখতে পাই- প্রতিশোধের এক স্বর্গীয় প্রতিনিধিরূপে। যদিও আমি সাহস করে বলতে পারি যে, আমাদের সমাজে তার এই বিশেষ গুণটির তেমন প্রয়োজন পড়বে না কেননা আমরা স্বাস্থ্যকে ঈশ্বরে পরিণত করার মত পাপ করিনি এখনো।

বলাবাহুল্য, আমাদের নামের পাশে আমাদের নিজস্ব পাপ ও ধর্মদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে। আমি যদি ঈশ্বর হতাম তাহলে তার মধ্যে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক বলে গণ্য করতাম আমাদের জাতিগত অধমর্ণতাকে – তা সে যে-কারণেই হোক- বিনাপ্রশ্নে মেনে নেয়াটাকে। এখন এ নিয়ে উত্তেজিত হওয়া কিংবা অন্যকে দোষারোপ করার জন্য অনেক দেরি হয়ে গেছে, অন্যেরা তার জন্য যত দায়ীই হোক না কেন। আমাদের যা করার দরকার, তা হলো পেছন ফিরে দেখা এবং বোঝার চেষ্টা করা কোথায় আমাদের ভুল হয়েছিল, কখন বৃষ্টি আমাদের হারিয়ে দিতে শুরু করেছিল।

বিজাতীয় শক্তির দাসত্বের কালে আফ্রিকান মানসে যে বিপর্যয়গুলো ঘটে গিয়েছিল তার দুয়েকটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক। আমার বাবাদের প্রজন্মের খ্রিস্টানেরা ১৯৪০ এর দশকের গোড়ার দিকে স্থানীয় মেয়েদের স্কুলে যখন গস্পেলের আবির্ভাব বার্ষিকীতে নাইজেরীয় নাচ হয়েছিল তখন যে-ধাক্কাটা খেয়েছিল তার কথা আমার পরিষ্কার মনে আছে। এ যাবৎকাল তারা সভ্যভব্য, খ্রিস্টীয় একটা নাচই উপস্থাপন করত, যার নাম আমার যদ্দুর মনে পড়ে, মেপোল। সেই দিনগুলোতে- আমি যখন বড় হয়ে উঠছিলাম- আমার মনে আছে গরীবগুর্বো, অখ্রিস্টানেরা ছাড়া আর কেউই স্থানীয় গ্রামীণ পণ্যসামগ্রী ব্যবহার করত না। খ্রিস্টান ও বড়লোকেরা (সাধারণত সমার্থক তারা) তাদের টিন ও অন্যান্য ধাতুসম্ভার প্রদর্শন করত। আমরা কখনো জলপাত্র নিয়ে ঝর্ণার ধারে যেতাম না। বয়সোপযোগী ছোট্ট একখানা গোলাকার বিস্কিটের টিন ছিল আমার, আর বাড়ির বড়রা নিয়ে যেত চার গ্যালনের কেরোসিন টিন।

আজ অবস্থা অনেক পাল্টেছে, তাই বলে একথা ভাবা বোকামি হবে যে, ইউরোপের সঙ্গে আমাদের প্রথম মোকাবিলার অভিঘাত আমরা পুরোটা সামলে উঠতে পেরেছি। তিন কী চার সপ্তাহ আগে আমার স্ত্রী, যে ছেলেদের স্কুলে ইংরেজি পড়ায়, একটি ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করে, সে কেন ’হারমাটান’-এর কথা বলতে গিয়ে, শীতের বর্ণনা দিয়েছিল। সে বলেছিল অন্য ছাত্ররা তাহলে তাকে গেছোমানব বলত! এখন, আপনি নিশ্চই ভাবতেন না আপনার আবহাওয়ায় লজ্জার কিছু থাকতে পারে, ভাবতেন কি?  কিন্তু দৃশ্যত আমরা তা ভাবি। এই ভয়ঙ্কর লজ্জাকে কীভাবে উৎপাটন করা যেতে পারে? আমি মনে করি লেখক হিসেবে এটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এই ছেলেটিকে এই কথা বুঝিয়ে বলা যে, আফ্রিকার জলবায়ু লজ্জার কিছু নয়, যে, তালগাছও কবিতার যোগ্য বিষয় হতে পারে।

এখানে আমার জন্য একটা প্রকৃত বিপ্লবের সুযোগ রয়েছে- দীর্ঘদিনের তাচ্ছিল্য আর আত্মঅবমাননার গøানি ঝেড়ে ফেলে আমার সমাজকে আমি তার নিজের ওপর বিশ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করতে পারি। এবং এটা নিঃসন্দেহে শিক্ষারই প্রশ্ন, শব্দটির শ্রেষ্ঠ অর্থে। এখানে আমি মনে করি আমার লক্ষ্য ও আমার সমাজের আকাক্সক্ষার মিলন ঘটে। কেননা কোনো চিন্তাশীল আফ্রিকানই তার আত্মায় যে গভীর ক্ষত তার বেদনাকে এড়াতে পারে না। আপনারা সবাই আফ্রিকান ব্যক্তিত্ব, আফ্রিকান গণতন্ত্র, আফ্রিকান সমাজতন্ত্র, আফ্রিকান কৃষ্ণত্ববাদ ইত্যাদির কথা শুনেছেন। এসবই আমাদেরকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে তৈরি করা পাটাতন বিশেষ। একবার নিজের পায়ে দাঁড়ানর পর আর সে-রকম কিছুর দরকার পড়বে না আমাদের। কিন্তু আপাতত মনে হয় এটা বস্তুর ধর্মের মধ্যেই পড়ে যে, আমদেরকে বর্ণবাদের বিরোধিতা করতে হবে, সার্ত্র কথিত বর্ণবাদবিরোধী বর্ণবাদ দিয়েই, শুধু এটাই প্রমাণ করতে যে, আমরা আর সবার সমকক্ষই শুধু নই, তাদের চেয়ে অনেক বেশি উন্নতও বটে।

লেখক তার ওপর অর্পিত শিক্ষা ও চেতনার পুনর্নবীকরণের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার প্রত্যাশা করতে পারেন না। সত্যি বলতে কি তাকে সবার আগে এগিয়ে চলতে হবে। কেননা তিনি হচ্ছেন- এজেকিয়েল এমফাহলেলে তাঁর আফ্রিকান ইমেজ বইয়ে যেমন বলেন- তার সম্প্রদায়ের সবচেয়ে স্পর্শকাতর সদস্য। ঘানার দর্শনের অধ্যাপক উইলিয়াম আব্রাহাম একই কথা অন্যভাবে বলেন : ”আফ্রিকান বিজ্ঞানীরা যেখানে আফ্রিকার বৈজ্ঞানিক সমস্যাগুলোর সমাধানে তৎপর, আফ্রিকান ঐতিহাসিকেরা আফ্রিকার ইতিহাসের গভীরে প্রবেশে উন্মুখ, আফ্রিকার রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা আফ্রিকার রাজনীতি নিয়ে ভাবিত সেখানে আফ্রিকান সাহিত্যিকদের কেন এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে, যাকে তাঁরা নিজেরাই অত্যন্ত জরুরি বলে বিবেচনা করেন ?”

আমি অন্তত এ থেকে মুক্তি পেতে চাই না। আমি খুব খুশি হব যদি আমার বইগুলো (বিশেষ করে যেগুলো অতীতাশ্রয়ী) পাঠকদের শুধু এটুকুই শেখাতে পারে যে, তাদের অতীত- তার সমস্ত অসম্পূর্ণতা সত্ত্বেও- বর্বতাময় এক দীর্ঘ রাত্রি ছিল না, যা থেকে তাদের উদ্ধার করে ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপী ইউরোপীয়রা। হয়তবা আমি যা লিখি তা বিশুদ্ধ শিল্প থেকে একেবারে আলাদা ফলিত শিল্পমাত্র। এই দুটোকে আমি পরস্পরবিচ্ছিন্ন বলেও ভাবি না। হাউসা লোককথার এক সাম্প্রতিক সঙ্কলনের একটি গল্প, প্রথামত আশ্চর্য সব ঘটনা বর্ণনার পর এভাবে শেষ হয় : ”তারা সবাই আসে এবং একসঙ্গে সুখে জীবনযাপন করে। তার একাধিক পুত্রকন্যা ছিল, যারা বড় হয়ে দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে।”

আমি যেমন অন্যত্র বলেছি, আপনি যদি একে একটি নির্বোধ পরিসমাপ্তি বলে মনে করেন, তাহলে আপনি আফ্রিকা সম্পর্কে বেশি কিছু জানতে পারেন না।

(১৯৬৫ সালে লিড্স বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া এই বক্তৃতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় লন্ডনের নিউ স্টেট্স্মেন পত্রিকার জানুয়ারি ২৯, ১৯৬৫ সংখ্যায়। ডাবলডে অ্যাঙ্কর বুক্স থেকে ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত মর্নিং ইয়েট অন ক্রিয়েশন ডে গ্রন্থে তা অন্তর্ভুক্ত হয় পরে।)

 

লেখক পরিচিতি :

আধুনিক আফ্রিকী কথাসাহিত্যের জনক চিনুয়া আচেবের জন্ম ১৯৩০ সালে নাইজেরিয়ায়। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক চিনুয়া ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ঞযরহমং ঋধষষ অঢ়ধৎঃ এ আফ্রিকার গ্রামজীবনের লোকাচার, লোকভাষা ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে এক নতুন আফ্রিকী ইংরেজির জন্ম দেন, যা পরবর্তী প্রজন্মের আফ্রিকী লেখক ও শিল্পীদের বিপুলভাবে প্রভাবিত করে। ঔপনিবেশিক শক্তির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরোধিতায় তিনি তাঁর লেখনীকে সদা সচল রাখেন। তাঁর অপরাপর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে No Longer at Ease, Girls at War, Arrow of God, Anthills of Savannah ইত্যাদি। ২০১৩ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।