কেয়া ওয়াহিদের কবিতা
পুনর্জন্ম
নিটোল জলের আয়নায় সবুজাভ মায়া
স্তব্ধ বিটপী পল্লব, রংহীন মেঘ,
ভারী অভিমান নিয়ে মাছরাঙা দুপুরের অপেক্ষা
এক ঝাপটা বাতাস…
ভালোবাসা আজন্মই সুসরল, ষোড়শী__
ষোলোআনাই চায় জলের আগুন
তোমার ফিরে যাওয়ায় আধেক ছেড়ে যায় দখলধারী আকাশ।
বিফলা বিদীর্ণ অগ্নিকুন্ডের কোমল চাওয়া
মেঘমন একাকী হতে না পারার ব্যর্থতায়__
ঈশান, অগ্নি, নৈঋতে নামে বরিষণ
শুন্যতার শুশ্রূষায় শিশির শবনমে হোক পুনর্জন্ম!
যশোর রোড
জলমগ্ন হিজলের বেদনা ততটা অনপনেয়,
যতটা অপরিমেয় প্রতীক্ষার ব্যাসার্ধ কিংবা উচ্চতা
ছায়া সড়কের দুই পাশে সারি সারি রেইন ট্রি
শতবৰ্ষী স্বাক্ষীসনদ নিয়ে দাঁড়িয়ে—
ডাকবাক্সের ফেরত চিঠিগুলো কতটা স্পর্শকাতর ছিল!
তনয়া ঠোঁটে ক্রিমসন রেড লিপস্টিক;
ভেজাচুলে কাঠ গোলাপের ছিল বেমানান সখ্যতা;
নির্জন পথে চলতে চলতে প্রণয়কাব্য হারিয়ে ফেলেছে
নিঃসঙ্গ ঝরা পালক।
শেষ বিকেলে আলপথে ফিরে যাওয়া সূর্যের মোহটান
আজও ভাবায়–
আমারওতো একটা আকাশ ছিল!
যশোর রোড–
নির্ণিমেষ তাকিয়ে থাকা তোমার শেষ প্রান্ত
বিলুপ্ত করেছে আমার চোখের আলো।
সম্পর্কহীনতা
ঠিকানাবিহীন পথ লেগে থাকে পথিকের পায়ে
বেদনার ক্ষত হয়ে কিংবা বুকের ভেতর চিনচিন ব্যথা হয়ে—
শিশির প্রতিবিম্ব ছোঁয়া ঘাসফুল,
লজ্জাবতী হালকা বেগুনি চোখ,
বেয়াড়া অভিমান আগলে রাখে ছায়াপথ।
পথের সাথে পথিকের সম্পর্ক হয়না,
কেবল সন্ধি হয়—
হলদে দুপুরে এক্কাদোক্কা খেলা তন্বী আলো,
লুটেরা হাওয়ায় বেসামাল এলো চুল,
গলা গ্রীবা জড়িয়ে স্ফটিক জলঘাম
ঝুমকো জবা আর জুঁই ফুল।
পথ ফুরিয়ে যায় গোধূলির দেউড়িতে—
পথের সাথে পথিকের সম্পর্ক হয় না,
মধুকূপী গালিচায় মখমল পাদুকা অপেক্ষায় থাকে—
পথ কিংবা পথিকের।
*************************