দুইটি কবিতা || শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়
ছন্নছাড়া
তুমি আমায় কেমন করে ডাকো
ভাবি, যাবো না হয় খানিক পরেই
একটু দেরী, কীই বা বিশেষ ক্ষতি
ঠিক তখনই আকাশ ভেঙে পড়ে
একের পর এক এসে দাঁড়ায়
বন্যা, মারী ভয়ঙ্কর অতি
তুমি আমায় কেমন করে দেখো
যে দেখা সব সয়ে নেয়
উসকো খুসকো চুল,
ভুলে যাওয়া আয়না, আলমারি
কখন যেন সাজবো বলে কিনেছিলাম
চৌকো পাতায় আঠায় লাগা টিপের রংবাহারী
তুমি আমার নিমন্ত্রণ নিলে, বলেছিলে
বিশেষ কোনো আয়োজনের নেই প্রয়োজন
হাটের পাশে বংশীধারী ঐ ছেলেটা
এমন একটা বিশ্রী মিঠে সুর বাজালো
উনুন, আগুন সবের ওপর জল থৈ থৈ
কেমন করে বরণ করি তোমার আগমন?
এই যে ভীষণ ছন্নছাড়া
পথের ধুলোয় উড়ছে পাখী
নুন আনতে পান্তা ফুরণ দিন গোছানো
তোমায় যদি তেমন করে গুছিয়ে আবার
হারিয়ে ফেলি কোথাও অন্যমনে
চলো, এই কথাটাই বলতে বলতে
একটু বসি পা ঝুলিয়ে নদীর ধারে
নৌকো ভিড়লে দেখে নেবো ফিরলো কতজনে।
———————————
সেদিন
সেদিন দুপুর থমকে ছিল রোদে
বৃষ্টিতে ভিজে বিকেল
মেখে নিয়েছিল স্পর্শকাতরতা
রাত বলেছিলো
নদীর ধারে জিরিয়ে নেবে দু দণ্ড
ঘাসফুল শিশিরে মুখ দেখবে বলে
আড়মোড়া ভেঙেছিল ভোর
তারপর একজন হঠকারী কবি
বৃষ্টি, নদী, ঘাসফুল, রোদ সবাইকে
জোর করে ঢুকিয়ে দিলো কবিতার খাতায়
আর পরিত্যক্ত অন্যমনস্ক প্রেমিকের মতো
পার্কের বেঞ্চিতে ঘুমিয়ে পড়লো সময়।
**************************