একগুচ্ছ কবিতা/ রিজোয়ান মাহমুদ
অজ্ঞেয়বাদী কারখানা
আমি কি আকশটা কে চিনি
পোশাকে না স্বভাবে – অথবা একঘেয়েমি অসহ্য পলকা বাতাস ;
অন্ধশহর বেজির কাছে ফেরত চাইছে সাপের ঝগড়া- এ-সব খেলা কত আগে জীবনানন্দে হয়েছে শেষ – এখন ফুলে ফেঁপে ডোল হওয়া ইদুর পায়ের কাছে ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র।
সুপারি বনের পাশে কোনো ঝিল নেই যেখানে বসবে বক। এখন হাইরাইজ দালানের ফাঁকে অপরাহ্নে বিষণ্ণতা নিয়ে বক খুব একা,
বিল ও জলের যেখানে রোদন
বক মানে মানুষের ডানা ও শরীরের ঘ্রাণ নিয়ে
একটি অভিসন্দর্ভ
বকের পাখার নিচে মিশকালো জোছনা না হলে আকাশ পড়েনা চোখে।
কখনো রাতের অন্ধকারে গৃহত্যাগী হলে,
নিজেকে চিনি না
অন্ধকারে হাতড়াই নিজের বংশলতিকা
এক নারী এসে বসিয়ে দেয় হাতভাঙ চেয়ারে
এক লোকমা ভাতও খাইয়ে দেয় মুখ পুরে
আমি তাকেও চিনিনা।
সম্মোহন
ন্যাক্রোমেন্সি যদি জানতাম সে-ই কবে তোমাকে গাছের পাতা বানাতাম। এর ব্যাখ্যা উদ্ভিদ বিজ্ঞানে নেই,
প্রজননক্ষেত্র নিড়ানির চেয়ে গঠনের স্তব করে বেশি। আহা! কত স্তব্ধতা এখানে; তুমি আছ পাতার শিরায়। মা ও বাবা মাঝখানে উৎকণ্ঠাহীন। আহা ইল্লিন !
পাতা বানানোর সপক্ষে সুস্পষ্ট যুক্তি ; আমি পাখি হয়ে পাতা ছুঁতাম নিজের মতো। বুকে ছোঁয়াতাম
সবুজ পাতার শিরা। আরোগ্যহীনতা নিয়ে যাওয়াটা আবেগ সম্মত।
কত ফলের রসাভু খেয়ে তোমার ঠোঁটের দিকে এলিয়েছি – এ-সব অস্বাভাবিক নয়। এখানে অপ্রাসঙ্গিক ন্যাক্রোমেন্সি। আমার পা, হাত, হাতের আঙুল চোখের শিরা থেকে শুধু রক্তের নালিতে ডুবে
যখন ভেবেছি বৃষ্টি হবে। গলা অব্দি ডুবে যাবে কেউ,
ভাবি, তাকে ধরেই বাঁচবো। শব্দগুলো দু’কদম হেঁটে হেঁটে আখরোট হয়।
ন্যাক্রোমেন্সি আমাকে দিয়েছে সম্মোহন
কেবল তুমি-ই দিয়েছ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ।
লোচনদাসের পোস্টকার্ড
লোচনদাস কারিগর,
পোস্ট কার্ডে স্নেহার্দ্রতা ভরে লিখেছেন ; মাহমুদ
তোমার কবিতা পড়ে বাংলাদেশের ভূমিজ কৃষিকে কিছুটা বোঝা যায় ; ঢেউ চুষে নিলে জলের রমণ চেনা যায়। পাখিরা বিছানা পেতে শয্যা নেবে সভ্যতার সংকটে ; এতদঃ সংক্রান্ত পরিবর্তন ও আঁচ করা যায়। এছাড়া, তিস্তার ডুবোজলে শব্দ সাঁতরে কখনো মিলে একটা নদীর দেশ, মিঠে গ্রাম শহরের ভগ্নাংশ,শীত মৌসুমে তোমার শরীর শুষ্ক…
জান কি গজলডোবা একটা মরণফাঁদ
সেখানকার আকাশে চাঁদ জাগে সারারাত,
জোছনা ও পাহাড়ের সংগমতাড়নায় মিতুঘাস জন্ম নেবে। জলের করুণ ধারা সাফ সাফ বিহারের মেচী নদীতে ভ্রমণে যায়। তুমি খড়খড়ে শীত ঋতুবুকে রোশনাই ত্বকটি হারাও।
চৌরঙ্গীর মোড়ে প্রেম রেখেছ যেখানে মুসিবতের পিঁপড়ে সাঁতরাতে পারে না কখনো।
পাশের খালাতো বোন ভালো না বাসলে চোখ
পুকুরপাড়ে আটকে যায়। তিনি বলতেন,
তোমাদের কবিতায় রুপান্তর আছে, রূপনারানের কূল নাই একদম।