ইউসুফ মুহম্মদ-এর কবিতা
দোঁহা
৩৪২
মনেরে আমার পাঠিয়েছি দূর, মনের আসল বাড়িতে
মনটি কেমন! রয় পড়ে কার জীবন-নাভির নাড়িতে!
৩৪৩
জিততে জিততে হার মেনেছি, চলতে ফিরতে হার
হারতে হারতে হলাম মুগ্ধ,ভবনদী পার।
৩৪৪
অল্প আঁচেই অগ্নি সাবাড় বাষ্পতে রণসজ্জা
হৃদয়ের পাতাবাহারে জমেছে তাবৎ মনন-মজ্জা।
৩৪৫
সেদ্ধ বীজে ফসল হয়না, প্রার্থনাও প্রস্তুতিপ্রবণ
চোখ-কান-ভুরু ললাটের চেয়ে কাছে মনের শ্রবণ।
৩৪৬
ঠোঁটের আদলে এঁকে রাখি একফালি আধমরা চাঁদ
শ্রাবণধারায় উতলা ঠোঁটের দুফালি আর্তনাদ।
৩৪৭
মেঘের আড়াল বুঝে, বৃষ্টিতে লুকায় মন-কাজী
কে চাটে জলের ফেনা মাটি নিঃসৃত নুনের সাঁজি!
৩৪৮
কবির পরান ঘাই মারে রুমুঝুমু মেনকা নূপুরে
কে ডাকে ইমন রাগে, ঝরো ঝরো বৃষ্টিমুখর দুপুরে।
৩৪৯
প্রাকৃত চোখে জোনাকি কুড়তে কুড়তে
আলোর হাসিতে বন্দি হয়েছি নিজে
রাতভর রাত একাই দাঁড়িয়ে থাকে;
ভেতরে চরক ঘোরে- সেও গেল ভিজে।
৩৫০
কেউ তো লেখে না চিঠি, চোখ খুললে উড়ে আসে এসএমএস মেইল
প্রেম যায় হাওয়া খেতে, উলু বনে মুক্তো ঝরে মনের ইশারা ফেইল।
৩৫১
বেহেড বলোনা,বড়ই ঘাতক মিথ্যার দানা,
বায়ু ভরা ট্যাবু- ডাঙা জুড়ে পাখি-ছানা উন্মনা!
৩৫২
বাসনার জ্বর-তাপে পুড়ে যাবে যদি
অন্ধ হলেই তো পারো; ভয়-তুচ্ছ কে না জানে
সংসারের ডাল ভেঙে বৃন্তচ্যুত হলে
কিছু কি নিজের থাকে এখানে ওখানে!
৩৫৩
ক্লান্ত বহুবিধ রথ- পথের বেসাতি শুনে
পুড়ে পুড়ে ছাই হলো জয়শ্রী-নগর-শিস,
রহিম ও বুদ্ধ-জরথুস্ত্র, যিশু-সনাতন
হাজার পথ ও মতে ছড়ালো বিদ্বেষ-বিষ;
কাঁটাহীন শূন্যে তাই ঝুলে আছি একা একা…
আমার ভালোবাসায় টলে ভার্জিন জানালা
প্রার্থনা গৃহের অন্ধ দরজা আমাকে হাঁকে,
মন মাঝি মানুষের নামে মুক্ত রাখে তালা।
ঋদ্ধ আয়োজন। সাধু সাধু। ❤️