You are currently viewing একগুচ্ছ কবিতা: আইলিয়া কামিনস্কি, ভাষান্তর: ঋতো আহমেদ

একগুচ্ছ কবিতা: আইলিয়া কামিনস্কি, ভাষান্তর: ঋতো আহমেদ

একগুচ্ছ কবিতা: আইলিয়া কামিনস্কি

ভাষান্তর: ঋতো আহমেদ

 

আইলিয়া কামিনস্কি

কবি আইলিয়া কামিনস্কি সোভিয়েত ইউনিয়নের ওডেসা শহরে ১৯৭৭ সালের ১৮ই এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে এটি ইউক্রেনের একটি শহর। ঠাণ্ডা লাগায় চার বছর বয়সে একবার যখন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে তখন তাঁর মাম্পসের ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় সম্পূর্ণ শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর, অনেক পরে, ১৯৯৩ সালে নিউ ইয়র্কের রচেস্টারে বসতি স্থাপনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করে। আর, ১৯৯৭ সালে তাঁর বাবার মৃত্যুর পর, কামিনস্কি ইংরেজি ভাষায় কবিতা লিখতে শুরু করেন। তিনি অ্যাডিরনড্যাক রিভিউয়ের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি ইংরেজিকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ আমার পরিবার বা বন্ধুবান্ধব কেউই এটি জানত নাকী লিখেছি পড়ে কেউ বলতে পারতো না। আমি নিজেও ভাষাটা তেমন জানতাম না। ব্যাপারটা ছিল সমান্তরাল বাস্তবতার মতো, উন্মাদ সুন্দর স্বাধীনতা। এখনও আছে।”

কামিনস্কি জর্জটাওন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি.এ করেন। আর ক্যালিফোর্নিয়ার হেস্টিংস কলেজ অফ ল থেকে জে.ডি করেন। পালোমা কপাননার সাথে তিনি পোয়েটস ফ পীস সহ-প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা ত্রাণ কাজের পক্ষে বিশ্বব্যাপী কবিতা পাঠকে স্পনসর করে। তিনি জাতীয় ইমিগ্রেশন আইন কেন্দ্র এবং বে এরিয়া লিগ্যাল এইডের কেরানি হিসাবেও কাজ করেছেন।

একই সাথে সরল আর ভাবে আবিষ্ট রূপকথার আশ্চর্য এক ভাষায় কামিনস্কির কবিতাগুলি যুগে যুগে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের প্রেম, শোক, আনন্দ আর হাসি ডেকে আনার জন্য কণ্ঠ দেয়। তাঁর কবিতাগুলি মানুষের জীবন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে চলে। জ্ঞাত এবং অজ্ঞাত, হারিয়ে যাওয়া পৃথিবীর মিষ্টি এবং তিক্ত গল্পগুলিকে মূল স্রোতে সংযুক্ত করে। কামিনস্কির ‘ডান্সিং ইন ওডেসা’ (২০০৪) বইটি টুপেলো প্রেস ডরসেট পুরস্কার, আমেরিকান একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস ‘মেটকালফ অ্যাওয়ার্ড এবং ফরওয়ার্ড ম্যাগাজিনের সেরা কবিতা বইয়ের বর্ষ পুরস্কার জিতেছে। তিনি ফরাসি আর রোমানিয় ভাষায় অনুদিত হয়েছেন। তাঁর ‘ট্রাভেলিং মিউজিসিয়ান’ (২০০৭) মূলত রুশ ভাষায় রচিত তাঁর কবিতার একটি নির্বাচিত সংকলন। তাঁর সাম্প্রতিক সংগ্রহটি হচ্ছে ‘ডিফ রিপাবলিক’ (২০১৯)। এটি একটি আশ্চর্য বই।

তিনি সুসান হ্যারিসের সাথে আন্তর্জাতিক কবিতা (২০১০) এর ইকো অ্যান্টোলজির সহ-সম্পাদনা করেছিলেন এবং পোলিনা বার্সকোভা’স দ্য লামেন্টেবল সিটি (২০১০) এর সম্পাদনা ও সহ-অনুবাদ করেছেন। অনলাইন জার্নাল ইন পোজ রিভিউর সম্পাদক হিসাবেও কাজ করেছেন।

তার পুরস্কারের ঝুলিতে রয়েছে হুইটিং রাইটার্স অ্যাওয়ার্ড, মিল্টন সেন্টার অ্যাওয়ার্ড ফ এক্সিলেন্স ইন রাইটিং, ফ্লোরেন্স কাহ মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, কবিতা ম্যাগাজিনের লেভিনসন পুরস্কারের পাশাপাশি তাদের রুথ লিলি ফেলোশিপ, ফিলিপস এক্সেটার একাডেমির জর্জ বেনেট ফেলোশিপ, ল্যানন ফাউন্ডেশনের ফেলোশিপ এবং একাডেমি অব এমেরিকান পোয়েটস ফেলোশিপ।

তিনি সান দিয়েগোতে থাকেন।

বর্তমানে তিনি তাঁর জন্মভূমির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইউক্রেন শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য সংগঠিত করে যাচ্ছেন মানুষকে। বিশেষত ইউক্রেনের শরণার্থী লেখকদের আশ্রয় দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। 

 

কবিতা 

জিজ্ঞাসা

মানুষ বলতে কী বোঝায়?

দুই বোমা হামলার মধ্যবর্তী নিস্তব্ধতা।

 

কবির প্রার্থনা

মৃতদের মুখপাত্র হতে চাইলে, আমাকে ছাড়তে হবে

দেহের অভ্যন্তরের পশুটারে,

বারবার একই কবিতা লিখতে হবে, যেহেতু

শূন্য পৃষ্ঠা মানেই তাঁদের আত্মসমর্পণের সাদা পতাকা।

যদি কথা বলতে চাই তাঁদের হয়ে, আমাকে চলতে হবে

আত্ম’র সীমানা বরাবর, বাঁচতে হবে অন্ধের মতো

ঘরের কোনও আসবাবপত্রে ধাক্কা না-খেয়েই 

চলতে পেরে। 

হ্যাঁ, বাঁচি আমি। “এখন কোন সাল” জিজ্ঞেস করতে করতে পেরুতে পারি রাস্তা।

ঘুমের রাজ্যে নাচতেও পারি আর হাসতে

পারি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।

যেন আমার ঘুমই আমার প্রার্থনা, প্রভু, দ্যাখো

তোমার পাগলামির প্রশংসায় পঞ্চমুখ আমি, আমার নয় 

এমন অনাত্মীয় ভাষায় আমাদের

 

জাগিয়ে তুলে চালিত করার সেইসব গানের 

কথাও বলি, যেনযা কিছুই বলি আমি

 

করছি নিবেদন ভঙ্গিমায় এই 

কালোতম দিনগুলোর প্রশংসা। 

 

শান্তির সময়ে

 

পৃথিবীর চল্লিশ বছরের মতো বাসিন্দা এই আমি

একবার নিজেকে সম্পূর্ণ শান্তির এক দেশে খুঁজে পেয়েছিলাম। সেখানে দেখি প্রতিবেশীরা তাদের

সেলফোন দেখছে, পুলিশ

একটা লোকের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চাইছে। আর লোকটি তার ওয়ালেটের দিকে হাত বাড়াতেই, পুলিশটা

গুলি করে। গাড়ির জানালায়। ধমাধম গুলি।

কিন্তু এই দেশ শান্তিপূর্ণ।

তাই আমরা এইসব দেখেও ফোনটা পকেটে ভরে চলে যাই।

কেউ দাঁতের ডাক্তারের কাছে,

কেউ শ্যাম্পু কিনতে,

কেউ স্কুল থেকে বাচ্চাদের আনতে,

কেউবা যাই পুদিনা পাতা সংগ্রহে। 

আমাদের এমন এই দেশে পুলিশের গুলিতে বিদ্ধ ওই ছেলেটি ফুটপাতে পড়ে থাকে প্রায়

ঘণ্টা খানেক।

 

আমরা তার উন্মুক্ত মুখমণ্ডলে

দেখতে পেয়ে যাই

সমগ্র জাতির নগ্নতা।

 

আমরা দেখি। আর দেখি যে

অন্যরাও দ্যাখে।

 

ছেলেটির দেহ ফুটপাতে পড়ে থাকে ঠিক ছেলেটির দেহের মতোই।

 

এই দেশ শান্তির দেশ।

 

নাগরিকদের দেহ এখানে ছেঁটে ফেলা হয় 

অনায়াসে, যেভাবে রাষ্ট্রপতির পত্নী তার পায়ের নখ ছেঁটে ফ্যালেন।

 

এরপরও আমাদের সবাইকে

দাঁতের ডাক্তারের সাক্ষাৎ পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়,

তৈরি করতে হয় 

সামার সালাদ: পুদিনা পাতা, টম্যাটো, কী আনন্দ, টম্যাটো, আর একটু নুন।

 

এখন শান্তির সময়।

 

আমি কোনও গুলির শব্দ শুনি না,

শহরতলীর পেছনবাড়ির উঠোনে বরং শুনতে পাই পাখির কিচিরমিচির। কী উজ্জ্বল আকাশ

যেন পথ তার আপন অক্ষে ঘুরছে।

কী উজ্জ্বল আকাশ আহা (মাফ কোরো প্রভু) কী উজ্জ্বল!

 

বোমা হামলার পর, সোনিয়া

সাবান-পানির ফেনায় থুতু ফেলার আগ পর্যন্ত 

আমি তাকে 

স্যামনের মতো ঘষে মেজে গোসল করাই। ‘শুওর’ বলে হাসিও

 

লোকটার গায়ের গন্ধ তার দেশের গন্ধের চেয়ে অন্তত ভালো

আমি তার জুতা 

আর চশমা খুলে হাওয়ায় ছুঁড়ে দিই,

 

তার মোজা আর টিশার্টটাও খুলে হাঁটু গেড়ে বসি 

মহান সাশা পেত্রভের সম্মানে

যাঁর অঙ্গবিচ্ছেদ হয়েছিল, লেশা ভেতকীর সম্মানেই ওই নেয়া।

 

বাথ-টাবে গ্লাস ডুবিয়ে, 

নোংরা পানি পান করি আমি।

পবিত্র মনে 

 

একসাথে শরীরে সাবান লাগাই আমরা, একসাথে মুখ ধুই,

যে কাউকে হয়তো

চোদা যায় কিন্তু একসাথে কার সাথেইবা পানিতে বসা যায় বলো?

 

জড়িয়ে থাকা যায়

ঘুমানোর আগে!আর সকালের

পিঠ-চুলকানো। অবশ্যই আমার পিঠ, তোমার না!

 

আমি জানতাম মাছ ধরেছি

আর সেও জানতো তাকে ধরা হয়েছে।

আমি তার বুক আর নুনু মুছে দিতেই সে গান ধরে

 

“সোনিয়া, কতো যে আনন্দে ছিলাম তোমার সাথে একদিন

 

যা শুনতে পাই না আমরা

তখন সকাল, সকাল তখন, মে মাসের কোনও এক সকাল সেটা, সামান্য-উজ্জ্বল এক সকাল

ওরা আর্মি জিপে এসে সোনিয়াকে ধাক্কা দেয়

 

হ্যাঁ, ওরা তাকে ধাক্কা দেয়

আর সে এঁকেবেঁকে ভেঙে ঘুরে পড়ে যায় নিরবতায়

 

নিরবতাতার আত্মার আওয়াজ ছিল।

সোনিয়া বলেছিল, আমারে গ্রেফতারের সময় পিয়ানো বাঁজাতে থাকবো আমি। 

 

আমরা দেখতে পাই চার জন লোক

তাকে ধাক্কা দেয়

 

ভাবি যে আমরা দেখছি আরলেমভক্স থেকে তেন্দা স্ট্রিট পর্যন্ত শত শত প্রাচীন পিয়ানোর সেতু তৈরি হয়ে গেছে আর সে 

প্রতিটি পিয়ানোর কাছে থামছে কিছুক্ষণ

আর তার রেশ রয়ে যাচ্ছে 

 

হাতের আঙুল নেড়ে কথা-বলা 

এক পুতুলের মতো,

 

রয়ে যাওয়া পুতুল মানেই যেন এই নারী, থেকে যাওয়া

রেশ (ওরা নিয়ে গেছে তোমায়, সোনিয়া)মানেই তার ওই অশ্রুত কণ্ঠপরিষ্কার স্বর।

 

আলফোনসোকে ধরে নিয়ে যেতে দ্যাখে পুরো শহর

এখন আমরা প্রত্যেকেই একেক জন

সাক্ষাৎ সাক্ষী: 

ভাসেঙ্কা আমাদের দেখতে দ্যাখে চারজন সৈনিক আলফোনসোকে ফুটপাতে ছুঁড়ে ফেলছে।

আমরা তাকে ধরে নিয়ে যেতে দিই ওদের, সব আমরা কাপুরুষ। 

কেবল যে কথাগুলো বলতে পারি না

আমাদের সুটকেস, কোটের পকেট আর আমাদের নাকের ছিদ্রে করে বয়ে নিয়ে যাই আমরা।

রাস্তার ওপাশে তারা ওকে ফায়ার-হোশ দিয়ে ধুয়ে দেয়। প্রথমে চিৎকার করলেও

পরে সে থেমে যায়।

এতো রোদ

একটা টিশার্ট নিচে পরে গেলে এক বৃদ্ধ সেটা উঠিয়ে তার মুখ মোছে।

আশপাশের লোকেরা তাকেও দেখতে পায় নাটকীয়ভাবে ফুটপাতে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। 

এমনই তীব্র রোদে

কী করে যে দাঁড়িয়ে থাকলাম আমরা প্রত্যেকে

সাক্ষী হয়ে: 

ওরা আলফোনসোকে ধরে নিয়ে যায়

কিন্তু কেউ রুখে দাঁড়াই না আমরা, কেবল নিরবতা ছাড়া।

 

একটি টোস্ট 

 

তোমার কণ্ঠে আছে রহস্যময় গুণ,

এক পায়ের ৫৩ হাড়েই বেরিয়ে আসে শ্বাস-প্রশ্বাসের চতুর্মাত্রা, 

 

পাইন, রেডউড, সোওর্ন-ফার্ন, পেপারমিণ্ট 

হাইসিন্থ আর ব্লুবেল লিলির কাছে,

 

দড়িতে বাঁধা ট্রেনের কন্ডাক্টরের গাধার কাছে,

লেবুর ঘ্রাণ পেতে, ছেলেটা গাছেদের গোরার কাছে দুর্দান্তভাবে প্রস্রাব করছে।

 

অতএব, অসুস্থ না-হওয়া পর্যন্ত পৃথিবীর প্রতিটি বাস্তুকে আশীর্বাদ করো,

যতক্ষণ না অপ্রতিরোধ্য প্রতিটি হৃদয় স্বীকার করে নেয়: “নিজেকে বিভ্রান্ত করেছি আমি

 

তবুও ভালোবেসেছিআর ভালোবাসা

ভুলেও গেছি, আর এই ভুলে-যাওয়া আমার জীবন-জার্নিকে করেছে মহিমান্বিত,

 

প্রভু, সাহস করে আমি যে তোমার কাছেই চলে গিয়েছিলাম।”

 

একটা সিগারেট

 

দ্যাখো

ভাসেঙ্কার লোকেরা জানেইনা যে যুদ্ধের সময় তারাই সবচে’

 

সুখি মানুষের নজির, 

প্রত্যেকেই যেন হাসির একেকটা ছিঁড়ে-যাওয়া নথি-টুকরো।

 

হে ঈশ্বর,

বধিরদেরও বলার কিছু থাকে যা

নিজেরাই শুনতে পায় না 

তেমনি আমারেও দেখবে তুমি, ঈশ্বর, 

বোবা কবুতর-ঠোঁটের মতোই  

ঠোকরাচ্ছি

প্রতিটি দিকে, আকস্মিক বিস্ময়ে।

 

আর যদি ওঠো

বোমা হামলাকৃত কোনও শহরের সেন্ট্রাল স্কয়ার বিল্ডিঙের ছাদে, আমাকে আর আমার লোকদের দেখবে

কেউ হয়তো একটা সিগারেট চুরি করে এনেছে,

আর কেউ হয়তো কুকুরটারে খাওয়াচ্ছে

এক পাঁইট সানলিট বিয়ার।

 

যুদ্ধের সময় আমরা সুখে ছিলাম

 

আর যখন অন্যদের বাড়িতে বোমা মারছিল তারা, আমরা 

প্রতিবাদ করেছিলাম,

তবে তা যথেষ্ট ছিল না, আমরা বাধাও দিয়েছিলাম কিন্তু তাও

পর্যাপ্ত ছিল না। আমি তখন 

শুয়ে ছিলাম আর আমার বিছানার চারপাশে অ্যামেরিকা 

পড়ে যাচ্ছিল: অদৃশ্য ঘরে অদৃশ্য ঘরের উপর অদৃশ্য ঘরে।

বাইরে চেয়ার পেতে পেতে সূর্যোদয় দেখেছি। 

ছ’মাসের ওই

বিপর্যয়ের রাজত্বে টাকার ঘরে

টাকার রাস্তায় টাকার শহরে টাকারই দেশে, আহ্‌

আমাদের টাকার এই মহান দেশে, আমরা (ঈশ্বর মাফ করুন)

যুদ্ধকালীন সময়ে খুব সুখেই বেঁচে রইলাম।

 

অনুসন্ধানী টহল

 

জিনা, ৭, আর আনুস্কার, ২, চোখ ঢেকে দিই

সার্চে তাদের বাবাকে প্যান্ট খুলতে হয়েছে, শরীর কাঁপছিল তাঁর

 

চারপাশে

লজ্জাকর নিরবতা আর পেটের ঝাপটানি। ভিড় থেকে সবাই তা লক্ষ করছিল।

 

এবং বাচ্চারা আমাদের দেখতে দ্যাখে

সৈনিকেরা ন্যাংটো লোকটারে হিঁচড়ে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাঁর সন্তানদের হাতকে কষ্ট দিতে শেখাই তখন

 

এমন ভাষায় যে

দ্যাখো কীকোরে বধিরতা আমাদের শরীরে পেরেক ঠুকে দেয়। আনুস্কা

 

রাস্তার কুকুরগুলোর সাথে কথা বলতে শুরু করে, যেন ওরা মানুষ,

কথা বলছে মানুষেরই সাথে

 

হ্যাঁ, যেন ওরা মানুষই

হাড়ের ক্রাচে ভর-করা আত্মা নয় কেবল।

 

আর শহুরে মানুষগুলো 

বাচ্চাদের দেখতে থাকে, কিন্তু ওদেরকে নিয়ে তাদের অনুভব তাদের চিন্তার অন্তঃসারশূন্যতায় 

শহরের স্তব্ধ পাথরের মতো।