You are currently viewing বইমেলার খোলাচত্বর: কথোপকথন/ কবি মাসুদ খান

বইমেলার খোলাচত্বর: কথোপকথন/ কবি মাসুদ খান

বইমেলার খোলাচত্বর: কথোপকথন/ কবি মাসুদ খান

অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে মন-মানচিত্র কবিসাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্মের বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ আমরা কথা বলেছি কবি মাসুদ খান-এর সাথে।

মন-মানচিত্র: গ্রন্থ মূলত দীর্ঘ একটা সময়ের সাধনার ফসল। এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে আপনার প্রকাশিত গ্রন্থের ব্যাপারে জানতে চাই। গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ায় আপনার অনুভূতিও যদি শেয়ার করতেন।

মাসুদ খান: আমার কবিতা, গদ্য, ছড়া সব মিলিয়ে বই মোট ১২টি। প্রথম প্রথম বই প্রকাশে যত আনন্দ, উত্তেজনা থাকত, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছে। তবুও, বইটি প্রকাশ পেল, কেমন হয়েছে তার সজ্জা, ছাপা, বাঁধাই, পাঠকের কাছে কতটা কীভাবে পৌঁছাচ্ছে, সংবেদী পাঠকদের সাড়া কেমন, কেমন তাঁদের পাঠপ্রতিক্রিয়া এসবের জন্য একটা আন্তরিক কৌতূহল তো থাকেই। আমার নতুন এই বইটি একটি কবিতার বই। নাম দুঃস্বপ্নের মধ্যপর্ব। ছোটবড় মোট ৫৩টি কবিতা আছে বইটিতে। আমার অন্যান্য অনেক বইয়ের মতো এই বইয়ের শেষ কবিতাটি একটি দীর্ঘ কবিতা। তবে এবারের বইয়ের কবিতাগুলি নিয়ে আমি কেমন-যেন অতটা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। মনে হয়, ভালো কবিতা, ঊনকবিতা সবই আছে বইটাতে। আগের বইগুলিও যে খুব উঁচুমানের হয়েছে, তা-ও মনে করি না।

নিজের বই সম্পর্কে এরকমই এক মিশ্র অনুভূতি আমার। বইটি প্রকাশ করেছে চৈতন্য প্রকাশন। পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় চৈতন্য-র স্টলে (নম্বর ৫৭৬ – ৫৭৭)। এ ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে বাতিঘর-এর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বইয়ের দোকানে। ঢাকার কাঁটাবনের উজান-এ। অনলাইনে পাওয়া যাবে রকমারি ও বাতিঘর-এ। চৈতন্য-র নিজস্ব পেজে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে বইটি।

মন-মানচিত্র: আপনার পূর্বে প্রকাশিত সাহিত্যকর্মও কি পাঠকরা গ্রন্থমেলা থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন?

মাসুদ খান: হ্যাঁ, পারবেন। এ বছরের নতুন বইটিসহ আমার যে বইগুলি মেলায় পাওয়া যাচ্ছে :
চৈতন্য (স্টল ৫৭৬ – ৫৭৭) : দুঃস্বপ্নের মধ্যপর্ব, ২০২২ (কবিতা), গদ্যগুচ্ছ, ২০১৮ (প্রবন্ধ/নিবন্ধ), প্রজাপতি ও জংলি ফুলের উপাখ্যান, ২০১৬ (উপাখ্যান), পাখপাখালির গান, পাগলাঝোরার তান, ২০১৯ (ছড়া)।
কাগজ প্রকাশন (স্টল ৩৮০) : শ্রেষ্ঠ কবিতা, ২০১৮ (কবিতা)। বাতিঘর (স্টল ৩২৭ – ৩২৯) : ঊর্মিকুমার ঘাটে, ২০২০ (কবিতা)। পাঞ্জেরী (প্যাভিলিয়ন ২৭) : প্রসন্ন দ্বীপদেশ, ২০১৮ (কবিতা)।

মন-মানচিত্র: অমর একুশে গ্রন্থমেলা লেখক-পাঠকদের মধ্যে শুধু সেতুবন্ধনের কাজটিই যে করে তাই নয়, এইসময় গ্রন্থপ্রেমিকদের মধ্যে খুশির আমেজও পরিলক্ষিত হয়। গ্রন্থমেলাটিকে প্রাণবন্ত করার ব্যাপারে আপনার অভিমত জানতে চাই।

মাসুদ খান: একুশে গ্রন্থমেলা তো এমনিতেই প্রাণবন্ত থাকে, প্রতিবছরই। এবারে কোভিড পরিস্থিতির কারণে সময় ও পরিসর সীমিত থাকায় হয়তো-বা একটু কম, এই তো।

মন-মানচিত্র: গ্রন্থমেলার সাথে প্রকাশনার সাথে জড়িত মানুষের রুটিরুজির সংস্থানের ব্যাপারটিও জড়িত। এই ব্যাপারে আপনি যদি আপনার মতামত শেয়ার করতেন।

মাসুদ খান: একটি বই মূলত লেখক-প্রকাশক-পাঠক– এই তিনের ত্রিভুজ-সম্পর্কের রসায়ন ও ফলাফল। এবং এই তিন মূল কারক ও অপরাপর অনুঘটক… সবার সম্মিলিত কৃতি ও কৃত্যের অভিপ্রকাশ ঘটে বইমেলাকে কেন্দ্র করে । মেলাকে ঘিরেই মূলত আবর্তিত হয় তাদের মিথস্ক্রিয়া, তাদের পারস্পরিক প্রেষণা,  লক্ষ্য এবং আকাঙ্ক্ষা । আর প্রকাশনা ও মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের জীবিকার সংস্থানের বিষয়টা তো আছেই।

মন-মানচিত্র: বইমেলার পর প্রকাশিত বইয়ের আর খোঁজ বিশেষ থাকে না। আমাদের দেশে বইয়ের দোকানও স্বল্প। এই পরিস্থিতিতে বই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে আপনার ভাবনা যদি জানাতেন।

মাসুদ খান: বই, বিশেষ করে সাহিত্যের বইয়ের বেলায় ব্যাপারটা কেমন যেন বইমেলা-কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। তবে দেশে বইয়ের দোকান তো আছেই, পাশাপাশি আছে বেশ কিছু অনলাইন বুকশপ। পাঠক এখন ঘরে বসে পেয়ে যাচ্ছে তার চাহিদামতো বই। আমার কাছে মনে হয়, যেটা দরকার সেটা হচ্ছে সমাজে শিল্পসাহিত্যের পাঠক বাড়ানো, দরকার সাহিত্যপুস্তকের প্রচার, প্রসার, চাহিদা বাড়ানো। দরকার বইপড়া আন্দোলন।


মন-মানচিত্র: কোভিড পরিস্থিতিতে বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, পাঠকদের প্রতি আপনার বার্তা যদি শেয়ার করতেন।

মাসুদ খান: কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই বছর দুয়েক ধরে বইমেলা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও হবে কিনা ভবিতব্যই জানে। পাঠকের কাছে এটুকুই বার্তা যে, বইমেলায় যাওয়া যদি সম্ভব না হয়, আশা করি আপনার প্রিয় বইগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে পাঠ করবেন।