নাহিয়ান অপু
দুইটি কবিতা
বিষণ্ণতার ধ্বনি
চাঁদোয়া রাতের সারাৎসারে
থিতু জ্যোৎস্নার পায়ে পিষ্ট চোখ
সময়ের ক্ষেপণ আঘাতে সভ্যতা গিলছে
নির্মম অবাস্তবের দেহ।
খুন হওয়া গত স্বপ্নের চোরাচালান শেষে
আঁধার গিলছে ভিসুভিয়াস।
নদীতট রাতের জমিতে
জোছনার রোদ্দুর ঝরে পড়ে।
মৃত শরতের ধ্বংসাত্মক সেজে
আঁধার শাবকের অন্তর্লীন চুম্বনে
সময়ের ফসিল আগামীর তিরস্কারে হারিয়েছে পথে।
বাতাসের ফুসফুস
ঘূর্ণায়মান বিষাক্ত বিষে নীল হয়ে পড়ে আছে যত্রতত্র।
……………………………………
বসন্ত কিংবা আকাঙ্খিত মৃত্যু
নৈশঘুুমের আহ্বানে
শরতের বাতাসে ভেসে
একদিন মৃত্যুর দূত
অন্ধকারে ডানা ঝাপটিয়ে
টেনে নেবে প্রাণের অবলম্বণ।
সেদিন হয়তো কাশবনে
বেদনার আহ্লাদে
নেচে উঠবে ঘরহারা
মৌমাছির দল।
পালের নৌকায় বাঁধা ধানশালিকের
দেশ থেকে আমার এক তরফা জীবন
পালিয়ে যাবে
ভাবতেই জলের স্রোত
আমাকে ভাসিয়ে নিচ্ছে যেন।
বেগবান সময়ের চোরাবালি
আমাকে ডুবিয়ে দেবে
পৌষালী পেঁচার
ডানা ঝাপটানোর মতন।
আমার কম্পমান দৃষ্টির চোখ
আমাকেই খুঁজবে
সোনালি শামিয়ানা টানানো
বটবৃক্ষের তলার বায়ূময়
ঠান্ডা হিমের নিচে।
বেদনার অক্সিজেন
প্রাণের আকুতি
বেদনাকেই খুঁজবে যেন
আঁধারের শরীরে।
জেনো হে পৃথিবী জেনো
জেনো হে হাওয়ার রাত
হে মানুষ জেনো
তোমাদের গহিন হৃদয়
আমাকে একবারই পাবে
পাবে না ‘ক আর।
হে কস্তুরী আভা ছড়ানো
রাতের কামিনী
হে নাইটিংগেল
তোমাদের সুরে
বেদনার তটস্থতায়
আমার বিস্ময়কর জীবন কেটেছে
শীতের আগমনী লেবুফুলের
গন্ধে মাতাল একলা প্রকৃতির মতো।
আমাকে সঙ্গ দাওনি
রাতের লকলকে জ্যোৎস্না
অথচ তোমাকে ভাবতাম
আমার কাঙ্খিত নারীর মতন।
নিঃসঙ্গ বিকেলের টলমলে আলো
রোজ আমার শয়নকক্ষের জানলায়
পড়তে ঠিকই
তবু উঁকি মেরে দ্যাখোনি কখনও
আমার একা থাকার মিথ্যে অজুহাতের
অন্তরালের আমার দুঃখকে।
*****************************