You are currently viewing তিনটি কবিতা/ ফেরদৌস আরা রুমী

তিনটি কবিতা/ ফেরদৌস আরা রুমী

তিনটি কবিতা/ ফেরদৌস আরা রুমী

 

গুম

প্রতিদিন কত স্বপ্ন গুম হয়ে যায়

অজানায় গুম হয় মানুষ

হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা তথাকথিত অপরাধীর আড়ালে

কোটি চেয়ে লাখে রফা না হলে গুম হতে হতে বেঁচে যায় ভাগ্যের বরাতে কিংবা নিছক দুর্ঘটনায়

সব গুমের খরব কি আসে পত্রিকায়

সংবাদ কিংবা সংবাদকর্মী গুম হয় খবর ছেপে

শ্রমজীবী মায়ের স্বপ্ন গুম হয়

মালিকের চোখ রাঙানির তোয়াক্কা না করে

অসুস্থ সন্তানকে অপত্য স্নেহ ঢেলে দিয়ে

চাকরিটাই খুইয়ে ফেলে

গুম হয়ে যায় বেকার ছেলের উন্নত জীবনযাপন

হাত ছেড়ে দেয় প্রেম তার

শিক্ষিত বেকাবের ভারে নুইয়ে পড়ে দেশ আরও

সাধারণ মানুষের ভাত কাপড় গুম করে

উন্নয়নের গল্প রোজ লেখা হয় দিস্তায় দিস্তায়

দেয়ালে দেয়ালে ডিজিটাল ব্যানারে লেপ্টে দেওয়া হয় অশ্লীল সেসব গল্প

বিপ্লবীর বক্তৃতা মঞ্চে দাঁড়ানোর আগে গুম হয়ে যায় পেটের ভিতর কথা

লেখার সময় শতবার কেটে ছেঁটে নিজে গুম না হওয়ার উপযোগি করে তোলা হয়

একেকটা পোস্ট

রোজ আমাদের গুম হওয়াটা কুৎসিতভাবে ইংগিত করতে থাকে যাবতীয় অক্ষমতা।

 

প্যালিনড্রোম

আজকের তারিখটা অন্য রকম
রাত্রির জোয়ারের পানির মতো
ধরা হয় না
যেমন ধরা দাও না তুমি
শালিকের দিনে আমি ছায়া কুড়াতে নেমেছি
শীতল গভীরে
দূর থেকে নিমজ্জিত থেকে
অনেক কথা বলে ফেলি তোমার সাথে
এইসব বসন্ত দিনে যুগলরা যেমন বলে দুপুর ফুরানোর আগে।

আজ সোনার দামে কিনেছি
আলতো নরম রোদ
মুঠোয় পুরে দিবো, সেই
চিঠিযুগের দিনে আমরা অপেক্ষায় যেমন থেকেছি পরস্পরে

ধুলাওড়ার দিনে
তোমার চটিজোড়া
শিশিরে ধুলায় মাখামাখি হয়ে থাকতো
আমাদের মনে থাকতো না সেসব
মনে থাকতো না বেড়ে দেওয়া গরম ভাতের কথা
ফাল্গুনী বাতাস দোলা দিয়ে যেতো
সেইসব দিনগুলো এখনো মনে আছে
উপলক্ষ ছাড়া
আজকের মতো জানতাম না তখন
প্যালিনড্রম তারিখ নিয়ে হৈচৈ হয়
আমি এখনো সেই
ময়দানে একা সাহসি সৈন্যের মতো
হেঁটে চলেছি তোমার দিকে
তুমি কোন ভ্রম ছিলে অথবা আছো
অন্তরাল না প্রাচীন কোন প্রাসাদ
এই ঘোর লাগা দুপুরে
আমার ভালো লাগে এই রহস্যটুকু।

 

পৃথিবীর কেউ না

 

দূরের জানালা বেয়ে নেমে যাচ্ছে তোমার স্মৃতি

শিরিষের শব্দের সাথে মিশে

দূর লোকালয়ে

তুমি যাও দূর পথে, ভুল পথে

স্থির নাটকের মধ্যে যারা ছিল বিভিন্ন চরিত্রে রূপদানকারী

অবিকল আসলের মতো

তাদের নেপথ্যে প্রেম ছিল, অপ্রেম ছিল

একে একে ঘিরে ফেলেছে তোমাকে?

পৃথিবীর প্রবল মূহুর্তে জেনে গেছি

আমি তোমার কেউ হই না

বিপুল শূণ্যতা নিয়ে

সূর্যের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে থেকেছি।

 

নিয়তি আমার সুবিচার করেনি

রুগ্ন আমি

একা পথ হাঁটি

চালকবিহীন

বহু বছর

অন্ধকারে

দিকভ্রান্ত আমি

এই পৃথিবীরও কেউ হই না।