কবিতাত্রয়/ পিয়াস মজিদ
মৃত্যু মূলত মিউজিক
বাবা আমাকে
পাতাল থেকে তুলে
পৃথিবী দেখিয়েছিল,
সেই বাবাকে আজ
পাতালে রেখে এসে
ব্যাকরণ-অজ্ঞ আমি বুঝি
সকল অমল
ধবল হয়
কবরের কালো পরিভাষায়।
পৃথিবীতে তারাদের তহবিল
খালি হয়ে এলে
সন্তানের বুকের ভেতর
প্রয়াত পিতার সমাধি জ্বলে।
থেকে থেকে
এই পাষাণপ্রহর
জানায় আমাকে,
মৃত্যু মূলত মিউজিক
প্রতিটি কফিনে
কিছু সুর লেগে থাকে।
কবি
তমসা মিনার ফেটে
বেরিয়ে গেছ।
আরো উঁচু আঁধারের
উড়ন্ত চুম্বনের
পিছু পিছু গেঁথে
এখন শুনছ
ফুলের স্বর।
নিরক্ষর তুমি;
এই গন্ধভাষায়
জরিপ করো স্বপ্ন।
রাত্রিভর
নক্ষত্রকল্লোলে
নিহত তুমি
আবার জ্বালাও মোম
সমূহ শবের উপক‚লে।
যেহেতু,
যুক্তাক্ষরময় পৃথিবীতে
তুমিই একমাত্র
সোজাসাপ্টা ব্যথা।
শিল্পী
কাকভোরে ঘুম ভেঙে যায় মার
সেই সকাল থেকে শুরু হয়
তার শিল্পকলার আয়োজন।
গনগনে উনুনের আঁচ সইতে সইতে
আর নাশতার টেবিল সাজানোর মধ্য দিয়ে
তিনি রচনা করেন অনুপম ভৈরবী।
দুপুরের দিকে এই গীত
আরো ঘন হয়
মধ্যাহ্নভোজের চকমকি বাহারে।
সূর্য ডুবতে না ডুবতেই
আবার তার ওপর ভর করে
রন্ধন-পূরবী।
রাতের খাবার শেষে
আমরা টের পাই
দিনভর মায়ের গেঁথে তোলা গানটার
সম্পূর্ণ সুর-তাল-লয়।
আজন্ম দেখছি
মায়ের এমন নিবেদিত সাধনা।
এখন আর কাউকে
তার চেয়ে বড় শিল্পী মনে হয় না।