উৎপল দাস
রাইটার্স ব্লক
লেখা সম্ভব হচ্ছে না আর, জটিল ভাবনাগুলো একে অপরকে ভাঙছে। শুয়ে বা বসে স্রেফ আত্মোপলব্ধি। নয়কে ছয় অথবা ছয়কে ঊনসত্তর করার ঠেকা নিয়েছে যেন। মুখের সামনে আয়না ধরলে যে প্রতিবিম্ব ভেসে ওঠে ওপারে, সে ছুঁতে চায়। কিন্তু কাকে? অথচ শোয়ার পাশে কোনো আয়না নেই, নেই কোনও প্রতিচ্ছবিও। তবু দ্যাখা যাচ্ছে অন্তঃকরণ। রৌদ্রকরোজ্জ্বল আঘ্রাণ-পৌষের সকাল। কুয়াশা নেই, মেঘও নেই চিন্তায়। তবু লেখা যাচ্ছে না কেন?
এ এক অদ্ভুত সমস্যা, ব্যাকুল করছে অন্তরকে। অজস্র বিরক্তি। কম্বলের ভেতর থেকে বেরোতে চাইছে না। মাথা ভারি হয়ে আসে। অবচেতন জানান দেয়— আরও কিছুক্ষণ আশ্রয় নেওয়া যাক। কোন অবাঞ্ছিত কারণে আবার ঘুমাতে চায় ভোরের কুয়াশা বা রাতের জোনাকি? অন্তর্দ্বন্দ্ব কখন অন্তরঙ্গ হয়ে উঠবে, সে অপেক্ষার মুখোমুখি হতে হবে নিজেকেই। ততক্ষণে ধৈর্যের চাদর মুড়ি দিয়ে এক চুমুক ঠান্ডা জল পান করতেই সর্বস্ব ওলট-পালট করল কে!
দূর থেকে শোনা যাচ্ছে “চোখ ভরা কথা নিয়ে, নির্বাক শ্রোতা হয়ে…”, অস্পষ্ট স্বরে। ভেতর ভেতর লিরিক্স গুনগুন নাকি প্রশ্নবোধক চিহ্নের আওড়ানো কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। যেন কনকনে শীতে জম-জমাট অবয়ব-আকার একাকার হয়েছে। সিঁড়ি ক্রমশ নীচের দিকে নেমে যাচ্ছে। গভীরতম স্রোতে গা ডুবিয়ে নির্বিকার থাকা যাচ্ছে না, উল্টো-স্রোতে এগিয়ে গেলে অচেনা কয়েকটি খড়-কুটোর সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যা তুচ্ছ। শ্লীল-অশ্লীল ঢেউয়ের বাইরে কোথাও উপবৃত্তাকার ছায়া প্রসারিত হচ্ছে, যার উপকেন্দ্র থেকে আগুনের গোলা গড়ানো হলে ফিরে আসবে কেন্দ্রে অর্থাৎ নিজের খুব কাছাকছি যে পর্দা অত্যন্ত আড়াল করে সত্ত্বার উপলব্ধিকে তারই অন্তর্নিহিতে নিয়তি লুকিয়ে থাকে।
**********************************