আজিজ কাজলের কবিতা
হঁলা ঘাটে
বরফ-শীতের মই ঘাটে এখনো তুলে আনি তোমার নিশিন্দা খই—উষ্ণ মেঘের পালক ছড়িয়ে জেগে আছো
দুর্লভ পতঙ্গ শিহরণে।
আমার ধ্যানস্থ গানে বাঁশ-কলমের ঝাঁক, কুলাপাতার শীত শীত বাহুডোরে বাঁধো তারে—
পলকে পলকে ধরি তোমার কুল-বংশের গান, নতুন ঘ্রাণের গহন বাতাসে।
শালুক শালুকে
প্রতিদিন সোনা ধরতে পুকুর ঘাটে যেতাম; চিঠিদিন আসে নি, কবুতরের লাল ঠোঁট তখনো উষ্ণ হয়নি;
মানুষ চোখের ইশারায় কথা বলতো, আমিও তোমার মুখের লবণ দেখে বুঝে নিতাম সকাল কি দুপুর।
এই অসহ্য বোমারু বানে, প্রাণহীন নক্ষত্রে, তোমার নমিত শরীরে লেগে আছি-চাঁপাগন্ধের বিচুলি।
কাঁচা পাটের পুতুল শরীরে ঢুকে যাচ্ছে খরস্রোতা নদী— লাল শজারু-চিঠির ই-যন্ত্র— ত্রিফলা চোখের প্রত্ন-খামে লিখি ইতিহাস ভুল!
পারুল কণ্ঠের ভানে
দুধশাদা পায়ে বিচুলি-ঘাসের লতা, বুক চিনচিন করে মায়া বাড়ে।
কী-সুন্দর এই মোহ মুক্তির মধু! সরিয়ে দাও লাল-ঝরণা অবগুন্ঠের পাতা
সারিময় বাঁশের পালের গোদায় এখনো আটকে আছি ; তোমাদের মতো এতো সভ্য’র ভান চিরজনমেও
আর ধরা হবে না; বাঁধা হবে না লাউঝুট মাচাময় নব-ফিকিরে।
মহাপতঙ্গ জ্বরে
আরো কিছু পতঙ্গ ওড়াই; যাহাদের লালা আর নি:শ্বাসে জড়িয়ে আছে সঘন আমিষের ঝুল।
তোমার দুধ-সার বলি রেখার ফাটল আরো দীর্ঘ হয়;
নিলামে যাচ্ছে স্মৃতিভাঁজের সেই নির্মোহ ভালবাসা— অথচ অবুঝ অবুঝ নগর-খেলা চলছেই!
তোমার কনকপাতার সাহসে রিনিঝিনি সূর্য-ঢোল বাজে না— এই নগর সামর্থ্য দিনের রোজ নামচায় ভজে আছি একটি সরল ঘুমের প্রার্থনা।
সেই কলরবে যারা হারিয়েছো
সুমহান পেয়ারাগন্ধের পায়ে আছি। এখনো তোমার নোলকপাতা লতিয়ে ওঠে; আপেলে রোচে না মন,
তাই রোজেনারা গীত গায় ইহাই সর্বোচ্চ মধু বলে সারাক্ষণ! তুমিও যাচ্ছেতাই করে শুনিয়ে যাও রাহু-মাতের গান।
আমি জানি তোমরা সবাই পৃথিবী ফেরত বাসিন্দা— বঁধুয়া কোথায় নিয়ে এলে?
তোমার আপেল মন ফেলে দুলছি পেয়ারা ফুলে।
============================