You are currently viewing মোজাম্মেল মাহমুদ-এর কবিতা

মোজাম্মেল মাহমুদ-এর কবিতা

হাওয়া এসে পর্দায় নাড়া দিয়ে যায়
মোজাম্মেল মাহমুদ

১.
হাসপাতালের বেডে লেগে আছে ইন্টার্নির ধমক
রঙচটা নোটগুলো ইঁদুরে খেয়ে ফেলেছে
আমার চিকিৎসা শুরু করবেন না, স্যার?

২.
কাল থেকে ধুলোমাখা চাকা পথ থেকে পথে
কাল থেকে চাঁদের কুয়াশামোড়া যৌবন মাতম
ধুলোর পাখায় চড়ে কামিনীরা আসে

৩.
শূন্যতাই সার শূন্যতায় সংসার
বাতাসের করাত কাটে প্রেমের পেখম
বিরান গহ্বরে পিঁপড়ের জগত-সংসার

৪.
স্নেহের আচ্ছাদনে সুন্দরবন ডোবে
সখা ওহে, এ অরণ্যে পাখিদের মৃত্যু হলে
অমৃতের সন্তানের বিষণ্ণ বোধন

৫.
নিঃসঙ্গতা রাতে আসে ঘুমোতে
পরিযায়ী প্রেম ডাকে পাখনার শিষে
প্রেম কি পূর্ণ হয় শুধুই চুমুতে?

৬.
পথে পথে হাঁটতে গিয়ে ধুলি মেখে সন্ন্যাসী সেজেছি
রাতের রক্তাভ ফ্রেমে উঁকি দেয় পূর্ণিমার চাঁদ
পৃথিবী দুলছে, আমাকে ডাকবে না কেউ

৭.
হাওয়া এসে পর্দায় নাড়া দিয়ে যায়
অন্ধকার নিকটে এসে শুষে নেয় শরীরের সব আর্দ্রতা
অপাংক্তেয় প্রেম ঢালে সামুদ্রিক জল

৮.
অন্তর্জালে লেগেছে ঠোকর টাল খেয়েছে প্রেম
থার্টি ফার্স্ট পটকা ফাটাচ্ছে
পুলিশগুলোও যেমন; তুমি ঠিক আছো তো বেবি?

৯.
দিব্যজ্ঞানের অতলপুরে লালন সাঁইয়ের বাড়ি
রাতকানাদের মতিভ্রমে ফোস্কা পড়ে গায়ে
মাঝির আশায় বসে আছি ভাঙছে নদীর পাড়

১০.
বেদনায় কুঁকড়ে ওঠে ইতিহাসের পাতা
গাড়ি সজোরে ব্রেক কষলে মাছের মায়ের পুত্রশোক বাড়ে
আয়নায় নিজের মুখ বিদঘুটে অলস দুপুরে

১১.
তোমাকে ঠিকঠাক বুঝে শরীরবৃত্তে অগস্ত্যযাত্রা
সংগনিরোধক বালখিল্যে মুখ চাপে নিরালোক রাত
ছায়া ও শূন্যতার প্রতিশ্রুতি লুকিয়ে রাখে ডাকপিয়ন

১২.
কথক, উত্থিত হও, প্রশান্তচিত্তে এসো নেমে
ব্যক্তিগত সমুদ্রস্নানে পর্যটক প্রেমমত্ত আজ
এ সৈকতে বালিয়াড়ি খুঁড়ে কাঁকড়ারা থাকে

১৩.
এ কেমন ধাবমান প্রণয়াকাঙ্ক্ষা? আদ্যন্ত হাতড়ে
আকস্মিক উপলব্ধির পর একা একা, কথা সামান্যই—
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে অর্বাচীন পিপাসাও নিরুদ্দেশ

১৪.
এর কাছে ওর কাছে কিছু চেয়ে তখনো ভিখারি হইনি
কয়েক পৃষ্ঠা ইতিহাস তোমার জন্য সাদা রয়ে গেছে
অনেকবছর পরে পৃষ্ঠাগুলো খুলে দেখি ছোপ ছোপ দাগদাগ

১৫.
আগুনপোড়া বিভীষিকা মনে রেখো না, অভিসম্পাত দিয়ো না
বস্তুত দেশপ্রেম থাকা না থাকা নিয়ে কোনো প্রশ্নও তোলা হচ্ছে না
কিছু খেলায় রক্তক্ষরণের মাত্রা জয়-পরাজয় নির্ণয় করে

১৬.
মোড়ের দোকানে জটলা লেগেছে তর্ক বেঁধেছে
রাস্তার ধারে পঁচা বেড়ালটা তিনদিন পড়ে আছে।
অমীমাংসিত তর্কের পর অটুট গন্ধ নাকে লেগেছে।

১৭.
করো স্নান, অনুতাপ ধুয়ে পরিশ্রুত হতে পারলে ভালো।
দিনকাল যাচ্ছে গড়িয়ে, ধূপের ধোঁয়ায় বাড়ছে অপুণ্যার্থীর মনস্কাম
এ নগরে আগুনের উৎসবে পতনোন্মুখ পতঙ্গেরা আসে।