ঈশ্বর
কচি রেজা
ঈশ্বর জানে আমি তার মতোই
কিন্তু আমি কি স্বতঃস্ফূর্ত তাকাই তার দিকে?
বরং অঙ্কুরোদগমের চক্র দেখি বিষন্ন আগ্রহে
ছোবলের ভূমিকা নিয়ে অজ্ঞাত ছিলাম
পূর্বপুরুষ যার নাম দিয়েছে শ্রদ্ধা
আমার স্বাতন্ত্র নিয়ে আজ আমি কৃষিজীবী
একদিন ঈশ্বরের মূর্তির চারপাশে উন্মত্ত নেচেছি
তবু কোনোমতেই তরঙ্গে ভেসে আসা ভেনাস নই
নির্দোষিতা থেকে সরে এসে অটুট গৃহপালিত বটে
এখন বিপজ্জনক আমি তার কাছেই
ঈশ্বরকে আমি বোকা বলি আর ঘেন্না করি
কিন্তু বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে চুম্বন করি তার প্রতিভা
শত ষড়যন্ত্রেও সে আমার উত্তরণ ঠেকাতে পারেনি
এখন আমার নিজস্ব একটি ঘর
শালীনতার ভান বর্জন করে একা হাতে শাসন করি সে সাম্রাজ্য
সেখানেও কদাচিত প্রবেশাধিকার ঈশ্বরের!
২
অবিশ্বাস বেড়ালের নূপুর
মাটি তার আত্মজীবনী নিজেই লেখে বলে মাটির ঘরে কোন মিথ্যে কলম নেই। জন্মেরও বাড়াবাড়ি নেই।
এতটাই আত্মবিশ্বাসী মাটিকে তাই একচুলও মিথ্যার দিকে নিতে পারি না। আমরা ঠিকানা হারিয়ে
বিপদের ঘরগুলো কেটে দিয়েছি। এখন হাঁটছি ভাড়া করা পথে। ভাড়া করা পথের নিঃশ্বাসের কি নিজস্ব
অক্সিজেন থাকে? কত আশঙ্কা নিয়ে ভোর হয়, প্রায়ই সারসগুলো ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে সংঘ হারিয়ে ফেলে।
বুদ্ধের বাণীর মতো সারারাত বরফ পড়ে পড়ে ঘুমগুলো জমে যায়। এভাবে হেঁটে কতক্ষণে নৈঋতে পৌঁছুব?
বিষুবের ওপর দাঁড়িয়ে দেখব পৃথিবীর মুখ?
পৃথিবীর বৃক্ষগুলো ভালো নেই, মানুষের অনিদ্রা সংক্রমিত করেছে বৃক্ষের মিহিন ধর্ম।
ভূগোল হারানো প্রাণ আমাদেরও, ভূগোলের মেয়েটি সবুজ টিপ পরে। আমরা কি সবুজ মেয়েটিকে আর খুঁজে পাব?
বেদ ধর্মের কোন মন্ত্র শেখাব তাকে? আমরা পরাজিত মানুষ, নিজস্ব নিঃশ্বাস নেই তবু বিপদের পোতাশ্রয়ে
যে যুদ্ধাস্ত্র তাক করা সবই কিন্তু আমাদের দিকে। এভাবে আমরা যে অন্তিম ঘরে পৌঁছে যাই, সে ঘর কি ভাড়া হয়?
আর যদি নাই জন্মাই এতো কেনো কাঁদলাম?
৩
মনে করো
যে বিষাদ আর বিষন্নতা আমি বিচ্ছিন্ন করতে পারি নি , সেই দৃষ্টি ও চোখের চাহনি বিষ্মিত ভঙ্গিতে দেখে
আমার মুখমন্ডল । এইযে পার্থক্য , যা আবিষ্কার করে আমার আনন্দ আর এই ভেদের কারণেই আমি এত প্রশ্নবিদ্ধ !
ধাতুর হাড়ে ভর দেয় যে শিরদাঁড়া , তাদের যৌথসংঘর্ষও আমাকে চমকে দেয়
সেই শব্দে বিশ্বাস হয় আমি এবং চরাচর শুধুমাত্র অন্ধকারেই আবৃত নয় নিজেরও আছে গায়ের গন্ধ ।
রোদের ঝাঁঝ থেকে তখন গিটারের ধ্বনি , তখন কেমন এক স্বরে কথা বলে পাথুরে কুয়াশা ।