You are currently viewing পিপুফিশু- ১৭ || আলী সিদ্দিকী

পিপুফিশু- ১৭ || আলী সিদ্দিকী

পিপুফিশু

আলী সিদ্দিকী

কিস্তি- ১৭

আদিব আবিরের স্বপ্নপাখা

আদিবকে ল্যান্সডেল মেমোরিয়াল পার্কে ড্রপ দিয়ে আবিরকে নিয়ে চলে এলাম নরগুয়েন-এর মাঠে। আদিব এখন বয়স অনুযায়ী কনিম্যাক-এ খেলছে। হ্যাটফিল্ড ওর পছন্দ হলেও আইনানুযায়ী স্ব-শহরের কনিম্যাকে খেলাটা বাধ্যতামূলক। তাই সে ল্যান্সডেল কনিম্যাক আয়োজনকারী ক্যানোনিয়ার্স-এর ফল কনিম্যাকে খেলছে। আর আবির এখনো লিটল লীগে খেলছে। আগামী বছর মেজর লীগে যাবে। ল্যান্সডেল লিটল লীগের ফল টিম না থাকায় ওকে নর্থ ওয়েলস্ -এর নরগুয়েন টিমে ভর্তি করেছি। তাই একই দিনে দু’জনের খেলা থাকলে আমাকে দু’দিকে ছুটোছুটি করতে হয়। আর তা দেখে উপস্থিত বাবা-মা’রা হাসে।
পুট দ্য ট্যাক্সি সাইন অন ইউর কার- আবিরের টিমমেট ড্রুর মা উইনডি হাসে আমার ছুটোছুটি দেখে।
তা খাসা বলেছো- আমিও মজা করে বলি।
লাকি য়্যু- ব্রাইসের বাবা দীর্ঘদেহী কোচ ডীন সানফ্লাওয়ার সীডের প্যাকেটটা এগিয়ে দিয়ে বলে।
আবিরের ব্যাগটা ডগ-আউটে রেখে বেরিয়ে আসতেই আলেক্স-এর মা সুইনির সাথে দেখা।
হাই আফসার।
হাই সুইনি।
ইটস্ ফর য়্যু- বলে সে ওয়াওয়া কফি এগিয়ে দিলো আমার দিকে।
থ্যাঙ্কস্ । কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হাতে নিলাম।
মাই প্লেজার। বলে সুইনি হোমটিম প্যাভেলিয়নের দিকে পা বাড়ালো। আমি তাকে অনুসরণ করি।
মাত্র কয়েক সপ্তাহের পরিচয় সুইনির সাথে। ছেলে আলেক্সের জন্যে প্রত্যেক খেলার দিন সে আসে আমার মতো।
ঝরঝরে রোদের বন্যায় প্রকৃতি সমুজ্জ্বল। ঘন গাঢ় সবুজ ঘাসের চাদরে ঢাকা মাঠের ওপর দিয়ে বয়ে চলছে হালকা ফুরফুরে বাতাস। গাছের পাতা আর ঘাসের মোলায়েম দেহ ছুঁয়ে ছুটে আসা বাতাস আমার চুলে আর মুখমন্ডলে আদরের পরশ বুলিয়ে দেয়। আমার কর্মক্লান্ত চোখজোড়া প্রশান্তিতে বুঁেজ আসতে চায়। মনে হতে থাকে আমি যেন নদীর পাড়ে বসে পাড়ে বসে আছি আর আউলা বাতাস এলোমেলো করে দিচ্ছে আমাকে। স্মৃতি বড়ো দুর্মর আর মন বড়োই গতিশীল। দেশ থেকে কতোদূরে আছি অথচ মন সারাক্ষণই আমাকে নিয়ে যায় স্মৃতিময় প্রান্তরে। এ এক অদ্ভূত সম্পর্ক। এ সম্পর্কের কি নাম দেয়া যায় ?
আর ইউ ওকে ?
ইয়েস, আই য়্যাম- সুইনির কথায় বেসবল মাঠে ফিরে এলাম।
বাট, ইউ লুকস নট- সুইনি ঘাড় বাঁকা করে তাকালো।
আমি হেসে মাঠের দিকে দৃষ্টি ছুঁড়ে দিলাম। ছেলেরা প্র্যাক্টিস করছে। একটু পরেই ম্যাচ শুরু হয়ে যাবে। আবিরের টিম বেশ ভালো করছে। ওদের টিম বারো ম্যাচে অপরাজিত। আজকের সেমি-ফাইনালে জিতলে কাল ফাইনাল খেলবে। টিমে আবিরের পজিশনটাও ভালো। যদি টিকে থাকতে পারে তাহলে এ লাইনেও ওরা ভালো করতে পারবে। আদিবের একটু সমস্যা হচ্ছে ওর কোচদের পক্ষপাতিত্বের কারণে। গতবছরও ওকে একই সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো। আমি অনেক ফাইট করেছি। কিšত্ত এখানে ফাইট করে কোন লাভ নেই। বরং আরো কষ্টে পড়তে হবে। আমার আরেক বন্ধু এরিক ফিশার বলে, ডোন্ট ফাইট আফসার, ইউ নো, পিপল আর সো স্টুপিড, ইউ নট গন আ গেট জাস্টিস। জাস্ট লেট হিম প্লে। হি কুড ফাইন্ড হিস ওন ওয়ে ওয়ান ডে।
এরিকের কথা শুনে আমার একটা দৃশ্য মনে পড়ে গিয়েছিলো। সীজনের শুরুতেই আদিবকে নিয়ে গেছি হ্যাটফিল্ড লিটল লীগের ফিল্ডে। শীতের আমেজ তখনো কাটেনি। মাঠ থেকে অনেক কষ্টে বরফ সরিয়ে খেলার উপযোগী করা হচ্ছে। মাঠে ঢোকার মুহূর্তে এক কিশোর আদিবের দিকে তীর্যক চোখে তাকিয়ে সাথে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজনকে জিগ্যেস করলো, হোয়াই হি ইজ হেয়ার ?
তখন এরিকের ছেলে কোলিন বললো, ডোন্ট বি রেসিস্ট। দ্যাটস্ নট য়্যুর কোয়ালিটি। ট্রাই টু বি আ হিউম্যান বিয়িং। হি হ্যাজ রাইট টু প্লে।
আমি কিছু বলতে উদ্যত হলে কোলিন আমার দিকে তাকিয়ে বললো, য়্যু ডোন্ট হ্যাভ টু সে এনিথিং, আদিব ইজ মাই ফ্রেন্ড, আই উইল টেক কেয়ার হিম।
সে কথা এরিককে বলার পর সে হেসেছিলো, দিস ইজ দ্যা ওয়ে টু ফাইট আফসার। টেক ইট ইজি।
হেই আফসার, সুইনি হাত দিয়ে মৃদু ধাক্কা দিলো, আর ইউ ও কে ?
ভাবছিলাম, আমি ঈষৎ হেসে স্বাভাবিক হতে চাইলাম।
কি এতো ভাবছো বলো তো ? ইউ ক্যান শেয়ার উইদ মি- সহানুভূতি মাখা চোখে তাকালো।
ভাবলাম কি বলি, আর বলেও বা কি হবে। যে বিপ্রতীপ সময়ের ভেতর দিয়ে আমি যাচ্ছি তা এদেশে আসা সকল প্রবাসীদের জীবনগাঁথার অংশ। এদেশে যারা আসে তারা নিজস্বতাকে বিসর্জন যেমন পুরোপুরি দিতে পারে না, তেমনি এখানকার সবকিছুকে গ্রহন করেও নিতে পারে না। বিশেষ করে পরিণত বয়সে যারা আসে তাদের ক্ষেত্রে এটা এক ভীষণ সংকট হয়ে দেখা দেয়। যেমন নাথবাবু। দীর্ঘদিন ধরে এদেশে আছেন। ছেলে-মেয়েকে দেশে রেখে বড়ো করে এনেছেন, বিয়ে দিয়েছেন। বাড়ী কিনেছেন। ইনকাম মন্দ নয়। কিšত্ত উনাকে দেখলে যে কেউ বলতে পারবে লোকটা যেন বেঁচে নেই। মুখে সাবলীল হাসি নেই, চলাফেরায় প্রাণ নেই, কথাবার্তায় কোন দৃঢ়তা নেই। কেমন যেন ভাঙাচোরা একটা মানুষ। একদিন আমি জিগ্যেস করাতে গম্ভীর হয়ে গেলেন। যেন দূরে কোথাও ডুব মারলেন।
সত্যি বলতে কি, মৃদু এবং ধরা গলায় বললেন, গত চৌদ্দ বছরের মধ্যে একটু সময়ের জন্যেও আমি এখানে এডজাস্ট করতে পারিনি। এখানে মনে কোন ফূর্তি নেই। প্রাণ খুলে কথা বলার, গলা ছেড়ে গান করার কিংবা আড্ডা দেয়ার মতো কোন বন্ধু নেই। কলুর বলদের মতো শুধু সংসার আগলে পড়ে আছি। এটা সুস্থ কোন মানুষের জীবন হতে পারে না।
আমার অসুস্থ মনটা হয়তো চেহারায় ছায়া ফেলে, তাই আপনার চোখে পড়েছে।
এসব কথা সুইনিকে বলে কি লাভ ? সে হয়তো এটাই স্বাভাবিক বলে সাšত্ত্বনা দেবার চেষ্টা করবে। বলবে, পরবর্তী জেনারেশনের কাছে এ সব অনুভূতির কোন মূল্য থাকবে না।
কই, তুমি যে আবার ডুব মারলে, সুইনি একই ভঙ্গীতে তাকালো, হাউ ইজ য়্যুর ওয়ার্ক ?
কোম্পানী মুভিং টু মেক্সিকো নেক্সট মান্থ। বললাম ঠিকই, কিন্তু নিজের কানেই তা হালকা ভাবে ধরা দিলো।
এখন সব অঘটন ঘটার সময় আফসার, সুইনি উঠে গিয়ে ট্র্যাশক্যানে কফি কাপটা ফেলে এলো, প্রত্যেক সাম্রাজ্য প্রতি দু’শ বছর পর ভেঙে পড়ে। এটা হচ্ছে একটা সাইক্লিক অর্ডার। রোম, বৃটিশ এমন কি তারও আগেকার সাম্রাজ্যগুলোর ইতিহাস দেখো, এর সত্যতা খুঁজে পাবে। আমেরিকা যে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে তার পচন ধরেছে। এরও পতনের লক্ষণগুলো স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। আমেরিকার শক্তিমত্তা নির্ভর এই সাম্রাজ্যও দ্রুত এগিয়ে চলেছে পতনের দিকে। একে রোখার সাধ্য কারো নেই। কারণ চিরস্থায়ী বলে কিছু নেই।
এসব কেন বলছো?
বলছি, কারণ আমি অনুভব করি, সুইনি তার ঝাঁকড়া চুলগুলোকে পেছনে ঠেলে দিয়ে সিগারেট ধরালো। এক মুখ ধোঁয়া উড়িয়ে বাদামী চোখজোড়া ছোট করলো, দেখো যুক্তি আর সততা বাদ দিয়ে যখন কোন রাষ্ট্র বা সমাজ ব্যবস্থা শুধুমাত্র শক্তিমত্তার ওপর নির্ভর করে সবাইকে দাবড়িয়ে বেড়ায় তখন তার পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। আমাদের হয়েছে হয়েছে এখন সে অবস্থা। মুষ্টিমেয় কর্পোরেটের হাতে পুরো দেশটাকে ছেড়ে দেয়ার কারণে কর্পোরেটের মালিকরা তাদের প্রতিপত্তি ধরে রাখার, বলতে পারো আরো নিষ্কন্টক করার জন্যে সারা দুনিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সামরিক শক্তি দেখিয়ে ক্ষয়িঞ্চু আর্থিক প্রতিপত্তির ঘা ঢাকা দেবার চেষ্টা করছে। যাকে তাকে ছোবল মারছে। গণতন্ত্রের নাম দিয়ে প্রত্যেক সভ্যতা আর সংস্কৃতিকে জবরদস্তি ভেঙে ফেলে নিজেরটা চাপিয়ে দিতে চাইছে। ফলে সংঘাতকে সর্বত্রই অনিবার্য করে তুলছে। আরো পুঁজি, আরো মুনাফা কর্পোরেট মালিকদের উন্মাদ করে তুলেছে। তারা উন্নত জীবনের টোপ দিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষকে এখানে জড়ো করছে। কিšত্ত উন্নত জীবনের আশায় ছুটে আসা মানুষগুলো যেমন মোহান্ধ হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে এবং শুধু টিকে থাকার জন্যে দু’তিনটা কাজ করের অমানবিক নিম্নমানের জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে, পাশাপাশি এখানকার মানুষদের জীবনযাত্রাকে টেনে নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা কি তুমি বুঝতে পারো ?
হ্যাঁ পারি, আমি সায় দিলাম, আমি জানি সস্তা শ্রমের আশায় বহু বড়ো কোম্পানী এখন লাতিন আমেরিকা, এশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ কাজ হারাচ্ছে। শ্রমের প্রতিযোগিতা বাড়ছে, কমছে শ্রমমূল্য। কমছে জীবন মান, কমছে সামাজিক সেবা।
হানড্রেট পার্সেন্ট কারেক্ট, উৎফুল্ল গলায় বলে সুইনি, এজন্যেই তোমাকে আমার ভালো লাগে। তুমি অনেক আপডেট।
কিšত্ত আমি বুঝতে পারছি না তোমরা সমাজের এসব অসঙ্গতি বুঝতে পেরেও কেন চুপ করে থাকো, আমি বললাম, কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের কোন সঙ্ঘবদ্ধ হবার অধিকার নেই- যদিও শ্রম বিক্রির স্বাধীনতা নামের মুখভরা বুলি আছে- তারাও কি করে প্রতিক্রিয়াহীন থাকে ?
অই যে বললাম, সুইনি হাতের শেষ হওয়া সিগারেটটা দূরে ছুঁড়ে ফেলে পা জোড়া সামনের বেঞ্চে তুলে হেসে তাকায় আমার দিকে, পড়ন্ত সূর্যের আলো ঝিলিক দেয় তার দাঁতের শুভ্রতায়, জীবন ধারণের জন্যে যে মানুষকে দৈনিক দেড়টা কিংবা দু’টি কাজ করতে হয় সে কিভাবে অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে ?
তাহলে কি কোন উপায়ে জগদ্দল হয়ে বসা শোষণের এই পাথর সরানো যাবে না?
যাবে, তবে অনেক সময় লাগবে।
সে সময় কখন আসবে বলে তোমার ধারণা?
যখন সারাবিশ্বে ঘৃণার ঝড়ে আমাদের ঔদ্ধত্যের পাহাড় ধ্বসে পড়বে, দূর আকাশে গোধুলির লালিমায় অপূর্ব হয়ে ওঠা মেঘমালা থেকে চোখ সরিয়ে সে মাঠের দিকে তাকালো।
কিšত্ত তার আশু সম্ভাবনা কি তুমি দেখতে পাচ্ছো?
তুমি তো দেখছি পাপারাজ্জি হয়ে উঠেছো? সে হাতে হাত ঘঁেষ, সময় তার যাত্রা শুরু করেছে। তুমি কি তার চলার শব্দ শুনতে পাচ্ছো না?
তোমাদের নির্বিকার মুখ দেখে তা কি বোঝার উপায় আছে?
তা খাসা বলেছো, সিস্টেম আমাদের নির্লিপ্ত করে তুলেছে, তাছাড়া- লুক, আবির ব্যাটিং নাউ- হঠাৎ প্রসঙ্গ পাল্টে সে আমাকে মাঠে নিয়ে এলো। দেখলাম আবির ব্যাট করার জন্যে দাঁড়িয়েছে।
ওকে, বলে আমি উঠে দাঁড়ালাম, আই নীড টু টেক সাম পিকচার্স-।
গো, সে প্রাণবন্ত হাসে।
আমি ছুটে ডগহাউসের পেছনে চলে এলাম।
আবির দুইটা স্ট্রাইক মিস্ করলো। তাকে অস্থির দেখাচ্ছে। আমি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম, ইউ ক্যান ডু ইট আবির।
সে হাসলো এবং প্রবল জোরে আগত বলটাকে মাঠের শেষ প্রান্তে ছুঁড়ে দিলো। মাঠের চতুর্দিকে সবাই সোর করে উঠলো, গো আবির, গো, রান রান রান !
আবির দৌড়ে থার্ড বেস পেরিয়ে হোমে চলে এলো। ওদের টিম জয়ের দিকে পয়েন্টে এগিয়ে গেলো।
ওর দৌড়ানোর ভঙ্গীতে আমার ছায়া দেখতে পেলাম। এক মুহূর্তের জন্যে মনে হলো আমিই বুঝি দৌড়াচ্ছি পিডিবি’র খেলার মাঠে।
কিন্তু সকলের উচ্চকন্ঠের চিৎকারে আমার ক্ষণিক স্মৃতিপরায়ণতার চ্যূতি ঘটলো।
নরগুয়েন টিমের অভিভাবকদের উল্লাসে আমি মাঠে ফিরে এলাম। আবিরের কাছে গিয়ে বললাম, হ্যাভ ফাইভ।
সে হাত বাড়িয়ে হাতে হাত মিলালো। মুখে ফুটে উঠলো জয়ের হাসি।
উইনডি ছুটে এলো, ইউ ডিড গ্রেট জব জি।
থ্যাঙ্ক য়্যু। আবির ডগহাউসে ঢুকে গেলো।
খুশীর একটা হাওয়া আমার বুক ছুঁয়ে গেলো। চোখে ভেসে উঠলো ভবিষ্যতের এক অনন্য ছবি।
এ দৃশ্য বিশু দেখলে আজ খুব খুশী হতো। কিন্তু কাজের জন্যে সে উইক ডে-তে আসতে পারে না। অবশ্যই কাল ফাইনাল দেখতে সে আসবে। কাল শনিবার।

*******************************