কর্ণফুলিতে জন্ম তার
চাই বা না চাই চেতনে বা অবচেতনে
এইভাবেই অগোচরে পরিত্রাণ হতো তার
চাওয়ার সঠিক হিসেব মেপে দেখোনি।
জন্মাবধি বড় বেশী উদাসীন ছিলে তুমি
তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে আর ঘৃণায় ভরা ছিলো
বেলা অবেলার সেই আরণ্যক কথাগুলি ।
এখন পরিমাপ করে কি আর হবে
সময়ের কাজ সময়ে করলে না
অসময়ে ডাক দিয়ে কি লাভ বলো!
আত্মার মতো হারিয়ে গেছে যে মন
তাকে কেন মিছে ডাকো বারবার।
কর্ণফুলীর জলে দেখো শুশুকের পিঠে
নীল অবেচেতন দেহ তার ভেসে যায়।
নদীতে নেমে ঢেউ যদি চোখে পড়ে তার
সেখানে চোখে ভাসে কানের ফুল
যেন কোন আটপৌরে ধীবর বালিকা।
এই নদীর উজানে ভাটায় ছলাৎ ছলাৎ
জলের তােড়ে সে ফিরে আসে বারেবার
কারণ আর কিছু নয়, ভেবে নিতে পারো
এই নদীতেই জন্ম নিয়ে ছিলো সে
এই নদীতেই দেহ ভেসে গিয়েছে তার।
কৃষ্ণ বালক
এখনো আড়ালে আবডালে অসংখ্যবার
হাত ধরাধরি করে হেঁটে গিয়েছি ব্রজধাম
তোমার মনে আছে কিছুটা অথবা না থাকার মতো।
পড়িমরি করে গঙ্গাফড়িং এসে বলেছিলো
আ হা হা করোকি করোকি
অতদূরে আর যেওনা শ্যাম,
অভিমান হতে পারে রাধিকার ।
প্রেমে মত্ত দিক্বিদিকে ছুটতে ছুটতে
যে দ্রাক্ষারস পান করতে চেয়েছিলে
সেটা আর ছিলোনা বিশেষ কিছুই
ছিলো সেই দার্শনিকের পান করা
এক ফোটা নীলকন্ঠ হেমলক।
সেই নীল প্রায় পান করার ভয়ে
তোমার সেকি ত্রাহি অবস্থা।
এই সেইদিনও অভিমানে কাতর
কতইনা মৃত্যু কামনা ছিলো আমাদের।
মৃত্যু তখন দুহাত দূরে দাঁড়িয়ে
বাঁচবার তেমন আকুতিও ছিলোনা
তবুও বাঁচার সেকি দুরাশা!
জীবনের পাতা উল্টে পাল্টে দেখলে
এইরকম অসংখ্য অসংখ্য ভুলে ভরা
জারক সময়গুলো হুটহাট করে
বেরিয়ে আসে সময় অসময়ে।
বেগানা একরত্তি সেই আদিম কিশোর
চিরটাকাল হাহুৎকার এইভেবে
ঝরে জলে এখোনো একা একা সঙ্গীবিহীন
কোন ঠিকানা ছাড়াই ছুটে যায়
নিগম সময়ের পথে পথে অন্য অজানায়।
বিপ্রতীপ সময়ের ডায়রি
একেবারে চমকে যাওয়ার মতো কথা ছিলো সেটা
অন্তহীন পথযাত্রায় যেতে যেতে খানিকটা থমকে যাওয়া
হয়তো চোখের ইশারায় বিনিময় হয়েছিল কিছু কথা
তারপরে দূর থেকে ক্রমাগত দূরতর হয়েছে ঘনিষ্ট চাওয়া।
ফেলে আসা মাঘের নরম হাওয়া নিস্তেজ দুপুরে
চৈত্রের দহন নিয়ে ফিরে দেখে আর বলে যায়–
যাও শূন্যতা ছেড়ে হেমন্তের ন্যাড়া মাঠ ছেড়ে যতদূর
ক্রমাগত ঘুড়ি আর লাটাইয়ের সুতো ধরে বহুদূর।
অন্তহীন পথ যাত্রার কখন যে সঙ্গী হয়েছে নিজের ছায়া
আগে পিছে ছিলোনা তেমন কেউ, হঠাৎ চমকে দেখি
কপাল কুণ্ডলা, গাছে গাছে শিস্ দিয়ে শুনি–
‘নবকুমার কাপালিক সময় লিখে গেছে নিয়তি লেখা।’