You are currently viewing তিনটি কবিতা || রুদ্র সুশান্ত

তিনটি কবিতা || রুদ্র সুশান্ত

তিনটি কবিতা || রুদ্র সুশান্ত

 

মৃতভাবে বেঁচে আছি

যেখানেই হাত দিই- “না”
এতো “না” নিয়ে কি করে বেঁচে থাকি বল?

ফুলের গন্ধ নিতে গেলে- না
পার্কে গল্প করতে গেলে- না
পুকুরে সাঁতার কাটতে গেলে- না
নদীতে নৌকা বাইতে গেলে- না
জোছনা খুঁজতে গেলে- না
ল্যাম্পপোস্টের আলোয় বসে গল্প করতে গেলে- না
মাঝ রাতে রাস্তায় একা হাঁটতে গেলে- না
চুল লম্বা রাখতে গেলে- না
বুকপকেটে চিরুনি রাখতে গেলে- না
শার্টের বাটন খোলা থাকলে- না
প্রেমিকার হাত ধরে হাঁটতে গেলে- না
চুমুতে ধর্মতন্ত্রের সকল পাপ লেগে আছে, ওরে বাপ!
চুমুর কথা মনেও করা যাবে না, চুমুতে পাপতান্ত্রিক “না”।

যেখানেই হাত দিই- “না”
এতো “না” নিয়ে কি করে বেঁচে থাকি বল?

জীবনানন্দ রবীন্দ্রনাথ পড়বো,
কবিতা পড়া কবিতা শোনা কবিতা বলা এগুলোতে এই ধার্মিক সমাজের এলার্জি,
কবিতা পড়া যাবে- না
গল্প লেখা যাবে- না
প্রেমিকাকে চিঠি লেখা যাবে- না
ফুঁ দিয়ে বেলুন ফোলানো যাবে- না
পোষা পাখি রাখা যাবে- না
ফুল নিয়ে খেলা যাবে- না
স্মৃতিসৌধ শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া যাবে- না
ঢোল তবলা মৃদঙ্গ বাজানো যাবে- না
একতারা দোতারা সুর তোলা যাবে- না
বাঁশিতে ফুঁ দেওয়া যাবে- না
গান! বাপরে বাপ! গান গাওয়া যাবে- না
গানে তো মহা পাপ।

যেখানেই হাত দিই- “না”
এতো “না” নিয়ে কি করে বেঁচে থাকি বল?

 

ভালোবাসা এমোন হয়

জীবন সুন্দর, জানি-
ভালোবাসার আহবানে বৃক্ষলতা
গাছের সবুজ পাতা
দেবদারু বেয়ে উঠা তরুলতা
উর্দ্ধমুখী প্রাণ ছুটে চলে অনায়াসে।

ভালোবাসা জীবনের হুমকির মতোন
আসে যায়
আসে যায়,
যায় আর আসে না।

ধরতে গেলে- উড়ে,
ছেড়ে দিলে জুড়ে বসে।

 

বিদায় নাও বৈশাখ

রৌদ্র-বৈশাখ, তুমি বিদায় নাও,
তোমার খরা তাপে প্রোজ্জ্বলিত হয়ে
সময়ের সাথে সাথে প্রেমিকার নির্মল ওষ্ঠ শুকিয়ে গেছে।
তুমি নির্দয় বৈশাখ, আর কত্তো কঠোর হবে?

চাষার লাঙ্গল তোলার অভিপ্রায়ে মাথা নত করে, তুমি বিদায় নাও।

এ নদী ফের যৌবন ফিরে পাক,
পৃথিবীর নাভিস্থল থেকে সুমধুর জোছনা ঝরে পরুক – প্রেমিকার কটিদেশ ছুঁয়ে সর্বাঙ্গীন আঙ্গিনায়,
অথবা
প্রতিটি ছাল ছেঁড়া গেহে।
এ রৌদ্র স্নান বন্ধ করো,
আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি,
এবার তো শুনো,
শুনো, শুষ্ক হৃদয়ের আর্তনাদ, ডাক।

প্রেমিকারর নগ্ন স্তনে জোছনার আলো আসুক,বর্ষার শীতাদ্র জড়িয়ে।
জোনাকিপোকার আলোয় প্লাবিত হোক –
বৃষ্টিতে ভিজে, ছোট্ট কুটির সব।

বৈশাখের বিদায় হলেই
প্রেমিকার পাকস্থলী হতে কন্ঠনালী দিয়ে বেরিয়ে আসবে ভালবাসার উদ্যম বাক্য।
বৈশাখ! রুদ্রমূর্তি বৈশাখ!
তুমি একটু বুঝো।

================