You are currently viewing নুসরাত সুলতানার কবিতা

নুসরাত সুলতানার কবিতা

নুসরাত সুলতানার কবিতা
 
 
মৎস্য কন্যা
 
 
আমি ছিলাম এক মৎস্য কন্যা,
আর তুমি সাম্পান মাঝি।
কোন একদিন তুমি সায়রের বুক চিরে বেয়ে যাচ্ছিলে সাম্পান।
তোমার সুঠাম বাহু,লম্বা চুল, দরাজ গলার গান শুনে
জীবনের তরে মরলাম আমি!
তারপর তোমাকে অনুসরণ করলাম।
পৌছে গেলাম তোমার গাঁয়ে,
প্রতিদিন কত ভাবে বুঝিয়েছি
তোমাকে আমার চাই!
বুঝলে না তুমি।
মানুষেরা বুঝি প্রেম বোঝে না?
ম্রিয়মান আমার চোখের পানি
সইতে পারলেন না বিধাতা।
বললেন কি চাস তুই?
আমি বললাম —
আমাকে সাম্পান মাঝি করে দাও
আর তাকে মৎস কন্যা
জন্মান্তরে আমি সাম্পান মাঝি
তুমি মৎস কন্যা
আজ তীরে বসে থাকো
আমি না দেখে চলে যাই—-
এ জন্মে আমি মানুষ যে!
 
 
 
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর
 
 
হ্যাঁ মহাপরাক্রমশালী ঈশ্বর
আপনাকেই বলছি-
আপনি সর্বশক্তিমান, ইচ্ছের রাজা-
আপনি হ বললেই হয়ে যায়।
তো আপনার ইচ্ছে হল-
আপনি মানুষ সৃষ্টি করবেন –
যে কিনা আপনার আনুগত্য আর দাসত্ব করবে।
আপনি তাকে ক্ষুধা দিলেন, যৌনতা দিলেন।
ব্যথা, যন্ত্রণা, মৃত্যু সব দিলেন।
দিলেন ভালো কথা।
সেসব কষ্ট, যন্ত্রণা, দুঃখ  সয়ে মানুষ জীবন
অতিক্রম করে মরে যাবে।
অতঃপর আপনি আবার বিচারও করবেন।
তা আপনার তো ক্ষুধা লাগে না, হাত কেটে
রক্ত বের হয় না, প্রেমিকাকে চুমু খেতে ইচ্ছে হয় না।
যৌনতার কষ্ট হয় না-
একবার মানুষের জীবন যাপন করে দেখুন না
অপার স্রষ্টা।
অতঃপর না হয় বিচার করবেন!
 
 
নেফারতিতি
 
 
হাঁটু গেড়ে করজোড়ে প্রেমের কাছে
প্রার্থনা করে বলেছি
আমাকে গ্রহণ কর পরম প্রশ্রয়ে।
আমি যাপিত জীবনে সভ্য হলেও,
ভেতরে একেবারেই ব্রাত্য, নদীর মতো প্রাকৃত।
প্রেম বলেছে, তোমার চোখের তারায়
সে গল্প লেখা আছে নন্দিনী।
কিন্তু আমিই তো  একেবারে রুগ্ন
এই অতি প্রযুক্তির পুঁজিবাদী ধরায়।
আমি বলেছি আজও
তোমার জন্যই মন্দিরে ঘন্টা বাজে।
চামড়া ঝুলে যাওয়া বৃদ্ধাকে বৃদ্ধ স্বামী বলে
তুমিই আমার নেফারতিতি।
 
 
পুরোহিত
 
জীবন এক ছদ্মবেশী পথিক
তার ডাক নাম মোহ
আসল নাম সাধনা।
ক্ষুধায় তার কাতরতা,
সঙ্গমে তার প্রশান্তি।
স্বপ্ন তার মূর্চ্ছনা।
আশা, আকাঙ্খা পথ চলার প্রদীপ।
প্রকৃত পক্ষেই সে এক পুরোহিত
কেবল সেই জানে যাপনের মন্ত্র।
 
===================
****************************