ফুয়াদ হাসানের কবিতা
কাব্যসংকোচন
১.
সব অঙ্ক মিলবে না, এটাও অঙ্কের একটা নিয়ম
২.
আজব এ পৃথিবী, সূর্যের চেয়ে চাঁদের প্রশংসা বেশি
৩.
কাগজফুলে আমি সুগন্ধি লিখতে গিয়েছিলাম
৪.
তাদের রিমান্ডকাল বোধ হয় অ্যানাস্থেশিয়া মাখানো
৫.
একটি ফানুশ আকাশ ভেদ করে উড়ে যেতে চেয়েছিল
৬.
মমির শহরে মমো খেতে এসে তুমিও নির্বাক
৭.
আত্মহত্যা আত্মপ্রেমের সর্বোচ্চ অপপ্রয়োগ
৮.
আমি সিজদার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম
৯.
কাটা নখ থেকে গজিয়ে উঠেছে কয়েকটি চারা
১০.
এ জীবনটাকে এতো ভালোবাসার কী আছে
১১.
একটি শব্দ নিয়ে খেলতে-খেলতে ঘুম এসে যায়
১২.
নিজস্ব কিছু স্বপ্নের ভেতর আমরা ঘুরপাক খাই
১৩.
এ শহর দিনদিন মাইক্রোওভেন হয়ে যাচ্ছে নাকি ডিপফ্রিজ
১৪.
বিদ্যুৎ বিভ্রাট আজকাল বিভ্রমের জন্ম দেয়
১৫.
ছবি তুলতে দাঁড়ালে হাত দুটি নিয়ে বড় বেকায়দায় পড়ি
১৬.
গাছের মতো মানুষগুলো দাঁড়িয়ে রয়েছে
১৭.
মানভাষায় কী-করে বুঝাই অভিমান
১৮.
পুরো পৃথিবী একদিন একটা নগর হয়ে যাবে
১৯.
ক্লোরোফিলের অভাবে কেমন হলুদ হয়ে যাচ্ছে সময়
২০.
রান্নাঘর একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান
২১.
অন্যভাষায়ও নিশ্চয়ই কিছু বাংলাশব্দ ঢুকে গেছে
২২.
পর্দা টেনে দাও, অন্ধকারটা বড় বিরক্তকর
২৩.
জলযোগ শেষ হলে নদীসব আবার পাহাড়ের দিকে ফিরে যাবে
২৪.
কোন-কোন জানালা আজন্ম বন্ধই থেকেছে
২৫.
একদল মাছি চিড়িয়াখানার বাঘের পিঠে খেলছে
২৬.
জলের মেঘমল্লারে মিলিয়ে যাচ্ছে মাল্লাদের হল্লা
২৭.
পাতার উঠোনে এইমাত্র যুক্ত হলো আরেকটি মরাপাতা
২৮.
নিরক্ষর অক্ষরগুলোর সঙ্গে এ কেমন আক্ষরিক সম্পর্কের দিন
২৯.
স্বপ্নের চোরাগলিতে মৃত স্বজনের সাথে মাঝেমধ্যে দেখা হয়ে যায়
৩০.
ট্রাউজার থেকে লুঙ্গি ভালো, তোয়ালে থেকে গামছা
৩১.
শব্দের চেয়ে বড় কোন কবিতা নেই
৩২.
ভাঙাচোরা মেরুদণ্ড নিয়ে প্রত্যেকে কী সুন্দর দাঁড়িয়ে আছি
৩৩.
মানিপ্ল্যান্টের জঞ্জাল, টাকা বাড়ে না
৩৪.
খানাখন্দ দেখলেই খন্দকের যুদ্ধের কথা মনে পড়ে যায়
৩৫.
কালোকাগজের জঙ্গলে লেখাগুলোকে ভীষণ কালো দেখায়
৩৬.
প্রত্যেকের আস্তিনের নিচে চিরপরিচিত চামরার খঞ্জর
৩৭.
মশাটা মরেনি, খামোখা নিজেই নিজের থাপ্পর খেলাম
৩৮.
পাহাড়ের মত চট করে রাত নেমে আসে
৩৯.
স্বপ্ন ও বাস্তবের মধ্যে একসুতো দূরত্ব
৪০.
তোমার কাছে মরুগোলাপের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত চাইনি
৪১.
সময় কত দ্রুত চলে যায়, কত মন্থর
৪২.
এপাশ-ওপাশ করতে-করতে ঘুম এসে যাবে
৪৩.
সভ্যতা শব্দ করে চা-খাওয়ার স্বাধীনতাও ছিনিয়ে নিয়েছে
৪৪.
কুকুরের ডাকে রাতের ঘুম ভেঙে যায়
৪৫.
ব্যান্ডেজ লাগানো কল থেকে রাতভর টপ টপ করে রক্ত পড়ছে
৪৬.
মাঝেমধ্যে নিজের রাগ দেখে নিজেরই ভয় হয়
৪৭.
ভূতে অবিশ্বাসীদেরও ভূতের ভয় থাকে
৪৮.
লাস্যময়ী শব্দটাও বেশ লাস্যময়ী
৪৯.
কথারা অপভ্রংশ হতে-হতে কোথায় চলে যায়
৫০.
কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর মত বৃষ্টি এখন আর নেই এই বাংলায়
৫১.
আকাশও ডানা ছাড়া এক পাখি, উড়ে বেড়ায় মহাকাশে
৫২.
ভাঙা চেহারা পরিষ্কার আয়নায় বিদীর্ণ দেখায়
৫৩.
দুঃস্বপ্নের ভয়ে ঘুমাতে পারি না
৫৪.
ভুল বুঝে ভুলে যাবো বলে ভুল করে ভুলতে পারি না
৫৫.
বন্ধুত্ব ক্ষণিকের, শত্রুতা চিরস্থায়ী
====================