মেহনাজ মুস্তারিনের কবিতা
রৌদ্রছায়া
সারাদিনের সংগ্রহ নিয়ে ফিরে গেছে বাছাধন!
ফুরালো দিন—
কিছু ভাবনা, কিছু কথা তবু রয়ে গেল
কিছু পাওয়া কিছু না পাওয়ার পাল্লা হল
ফাঁকা! কিছু স্বপ্ন তবু মুখ কেলিয়ে হাসে—
দেখে, টনটনে ব্যথা বুকের পাশে
জেগে ওঠে থেকে থেকে!
এই দীর্ঘশ্বাস আড়ালে রেখে
পারো কি তুমি সুখি হতে!
পারো কি তবে অল্প করে ভালো থাকা
অল্প আলোয় স্বপ্ন দেখা, অল্প ভালো বাসতে থাকা
ছোট্ট নীড়ে সুখি হতে!
কী এত ভাবনা তোমার! ফাঁকা চর থাক না পড়ে
আপন ফেলে যাসনে দূরে,
স্পর্শ যদি কিছু পেয়েই থাকিস, উষ্ণতা দিয়ে ঢেকে রাখিস
হৃদয় তটে—
বলি চিহ্নহীন যত ভালোবাসা, রেখে গেছে সূর্যাস্তের ছায়া!
এই মাটি এই ভবে মুখ বাড়িয়ে দেখ দেখি,
জীবনের আলো হাসি গান মুগ্ধতা সব, সবকিছুই!
মেঘলা কোন দুপুর বেলায়, নৃত্যানন্দে দোলা দিয়ে যায়
রাগ অনুরাগে! কেন তবে অঝোরে ঝরাস বিন্দু জল!
ঝাপসা চোখে কেন মুছিস স্বপ্নজাল !
একটু আলো একটু আঁধার, আবছায়া কোন রৌদ্রজ্বল!
বলি, জীবন যেন ছন্দে দোলে
কল্পতরুর সুনীল কোন মায়ার জালে!
১৯.৩.২৩
বাসন্তি ঘ্রান
কাক দুটো পাশাপাশি
পাতার আড়ালে,
আড়াল করে শরীর! দেখি
ঠোঁটে ঠোঁট! তপ্ত দেহ তপ্ত মন!
পাখা ঝাপ্টে সুস্তির সুখ ওদের নিশ্বাসে!
এদিকে,
শীত যেতেই খ্যাপাটে রোদ
আছড়ে পড়েছে এক চিলতে বারান্দার
দেহজুড়ে! দেখছি,
পাতার গায়ে পাতা;
ফুলের শরীর ছুঁয়েছে ফুল,
ভাঙা ডাল কাত হয়ে আছে
আরেক ডালে! তপ্ত রোদে গাঁদা ফুলের উজ্জ্বল হাসি,
ছড়িয়ে দিয়েছে সৌরভ! ওরাও খোঁজে
প্রেমসুধা! ওরাও তাকিয়ে থাকে বিস্ময়ে!
বসন্ত এলো বুঝি দুয়ারে!
তোমার আমার দু’জনের বেলা
যেন,
মিলেমিশে আমাদের এবেলা!
১৬.৩.২৩
পান্ডুলিপির কান্না
শব্দ!
বাক্য!
নিঃশব্দে কথা বলে পান্ডুলিপির সাথে।
বলে, পুস্পরেণুর গায়ে গায়ে দোল
খায় মৌমাছি! ঘাস ফড়িং
দুলিয়ে দেয় শরীর—
সেকি আনন্দ তার!
পান্ডুলিপির শব্দের ভাজে ওরা কী খোঁজে!
আনন্দ! উচ্ছ্বলতা! সূর্যের
প্রথম আলো! আর—
যত বিরহ ব্যথা সব সবই
কেটেকুটে কাটছাঁট, টুকরো টুকরো!
ঠিক তখন পান্ডুলিপির মুখজুড়ে
একখন্ড মেঘ! বৃষ্টির শরীর জুড়ে তৃষ্ণা!
পান্ডুলিপির তৃষিত চোখ ভাবে,
চাইলেই কি জ্বলন্ত সূর্য হওয়া যায়?
১৪.৩.২৩
==================