You are currently viewing গুচ্ছ কবিতা/ পলাশ করিম

গুচ্ছ কবিতা/ পলাশ করিম

গুচ্ছ কবিতা/ পলাশ করিম

 

১// ফিরে যাও পাখি

 

এবার ফিরে যাও পাখি

পুণ্ড্রনগর অশোকের দেশে

কালিদহে এখনো জেগে আছে মরা চাঁদ,

নিভে গিয়ে জ্বলে ওঠা রাতের জোনাকি

ক্ষীয়মান ক্লান্ত করতোয়া

এখনো বুকের উপর জল ধরে রাখে

বেহুলার ঘরে কেউ নাই; ঝিনুক নিঝুম

প্রদাহের ব্যাথা নিয়ে আলোর ছুরি

কেউ তারে কোনদিন দেখে নাই

জাহাহঘাটায়  ফিরে যাও

এখানে  ক্লান্ত নগর

ধুসরের দেশ, অচেনা আচার নির্মম

সর্পিল সময় কেড়ে নেয় সোনালী পালক

এবার চলে যাও পাখি।

 

ডানায় ডানায় উদ্দাম ঝড় তুলে

স্থিরজলে  চঞ্চুর ঢেউ তোলা অদেখা সাগর

দখিনে পরে থাক বালির পাশে

পলাতক সময় ছুড়ি বিধে চলে যাও

চলে যাও অশোকের দেশে।

 

২// 

হাতের উপর হাত

একটা কাল রাত

ভোর হয়ে কি যায়

অমোঘ সূর্য ওঠে?

 

কথার পিঠে কথা

কথক কেবল শ্রোতা

কথার কলি ফোটে

আঙুল ডুবা ঠোটে

 

বুকের মাঝে বুক

আদরে উন্মুখ

কষ্ট রাখা বায়ে

ঝর্ণাধারা সুখ

 

কোলের কাছে মাথা

খোলা চোখের পাতা

রাখছে ঢেকে তনু

আদর উষ্ণ কাঁথা

 

চোখের দিকে চোখ

দৃষ্টি অমূলক

আঁধার ঘন রাত

চাচ্ছে কিছু হোক

 

কিন্তু কি আর হবে

কেবল অনুভবে

আঁকছে ছবি কবি

সত্য হবে কবে!

 

৩//

মধ্য দুপুর

বদ্ধ পুকুর

জলের পাশে

দীর্ঘশ্বাসে

ঠাই দাঁড়িয়ে

পা নাড়িয়ে

দাঁড়িয়ে থাকি

কিসের আশে?

 

ডাহুক ডাকে

জলের ফাঁকে

করুন সুরে

ভর দুপুরে

কিন্তু কেন?

 

সবুজ পাতা

কবির খাতা

ভিষণ রোদে

কিসের বোধে

যাচ্ছে পুড়ে

এই দুপুরে?

 

এই দুপুরে

পাতাল ফুঁড়ে

কিসের ধ্বনি

খুব অশনি

কবির খাতায়

বার্তা পাঠায়।

 

গাঢ় রোদে

কিসের ক্রোধে

খুন করে যায়

প্রতিশোধে

বর্শা হেনে

অতীত স্মৃতি।

 

 

আলসে দুপুর।

ঝিমিয়ে পরা

এই জনপদ।

কেউ জানে না

একটা কবি।

অবচেতন

খুন হয়ে যায়

কিন্তু কেন?

 

৩//হ্যালো স্যাপিয়েন্স

 

আকাশের দিকে চেয়ে আছ?

মস্ত কাঁচের বৃত্তে দেখছ প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই, বামন, স্বাতী; টাইম মেশিনে চলে যাচ্ছ শতেক বছর

পেছনে তাকাও,  অকৃতজ্ঞ স্যাপিয়েন্স

ধেয়ে আসছে আদি-প্রাণ।

দেখ, জলের থেকে উঠে আসছে কেউ

লাল শহর, জ্ঞানের নগর; সব অরক্ষিত দূর্গ।

 

গিলেটিনে মাথা রেখে

অবরুদ্ধ আত্মার কান্না চেপে রাখ,

আহা! দ্বিতীয় জীবন, প্রথম জীবনে ফিরে যাও, অজেয় হোমো-সেপিয়েন্স।