ঋত্বিক একজন নির্মাতার নাম
শিরিন ওসমান
তখন সদ্য দেশভাগ হয়েছে। পূর্ববঙ্গ থেকে দলে দলে বাস্তুহারা জনতা কোলকাতা শহরে ভিড় করছে। এরাই হলো উদ্বাস্তু। শেকড়-ছেঁড়া মানুষ। এদেরই একজন ঈশ্বরচন্দ্র তার শিশু বয়সী ছোট বোনকে নিয়ে আশ্রয় খুঁজতে থাকে। সাথে থাকে কুড়িয়ে পাওয়া বালক অভিরাম। যাকে সাথি হিশেবে পেয়ে ছোট্ট সীতা যারপরনাই খুশি। সীতা তার দাদার কাছে জানতে চায়, ‘আমরা নতুন বাড়ি যাব বলেছিলে, এটাই নতুন বাড়ি?’
কোলকাতা শহরে চারিদিক হাহাকার। দিশেহারা মানুষ। কোনোদিন ভাবে নাই স্বভূমি ত্যাগের কথা। আশ্রয়, কাজ, খাদ্য এই তিনটির জন্য মানুষের অস্থিতার দৃশ্য সেলুলয়েডে বন্দি করে দর্শকের চোখে বিশ্বাসযোগ্যতার সাথে তুলে ধরা—এই চ্যালেঞ্জিং কাজটি ঋত্বিক সম্ভব করে তুলতে পেরেছিলেন।
যুবকদের ত্যাগ ও মানবতাবোধ, সেই সময় যে মানুষের মাঝে অ্যাক্টিভভাবে কাজ করেছিল, সেটিও তিনি তুলে এনেছেন। মানুষের প্রতি মানুষের মমতাই মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেয়। নিষ্ঠুরতা এবং একই সাথে মানবতার বিষয়টি উঠে এসেছে ঋত্বিকের ছবিতে। অসংখ্য ক্লু এই ছবিতে কাজ করেছে।
সুবর্ণ-রেখা
কলেজে পড়া অবাঙালি বন্ধুর সাথে পথে দেখা হয়। বন্ধুটি তাকে গাড়িতে তুলে বাড়ি নিয়ে যায়। চতুর অবাঙালি ধনী পিতৃসূত্রে পাওয়া ব্যবসায়ী বন্ধু ঈশ্বরকে তার মিল-ফ্যাক্টরিতে চাকরি দেবার টোপ ফেলে। কারণ তার একজন কর্মঠ এবং বিশ্বস্ত লোক দরকার ছিল। ঈশ্বর শেষ পর্যন্ত কম্প্রোমাইজের পথ বেছে নেয়। সুবর্ণ-রেখা গাঁয়ের পাশ ঘেঁষে তার নতুন চাকরির স্থল।
ঋত্বিক ঘটক দেশভাগ কোনোদিন মেনে নিতে পারেন নি। এই বিচ্ছেদের যাতনা আমৃত্যু বয়ে বেড়িয়েছেন। আমার গ্রাম, আমার পূর্বপুরুষের ভিটায় আমার অধিকার থাকল না। এই শূন্যতাবোধ একটি মানুষকে স্বাধীন সত্তা নিয়ে বাঁচতে দেয় না। তার প্রতিটি শিল্পকর্মে এই বিষয়টি বিমূর্ত কিংবা মূর্ত হয়ে উঠেছে।
তিনি ও তার পরিবার দেশবিভাগের পর কোলকাতা চলে আসেন। নিজের জীবনে এই বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করেছেন। তাই তার সৃষ্টিতে দেশভাগের পর যেভাবে মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছে সেই সত্য খুব সহজে উঠে এসেছে।
‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘সুবর্ণ-রেখা’। এই তিনটি ছবি ট্রিলজি হিশাবে আখ্যায়িত হয়। আমি আলোচনায় সুবর্ণ-রেখা ছবিটি বেছে নিয়েছি।
১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষ ১৯৪৭-এর দেশভাগের পর শরণার্থীদের নিয়ে অস্তিত্বের সংকট-নির্ভর ছিল এই তিনটি ছবি। শরণার্থীদের আশ্রয়, কোলকাতার তৎকালীন অবস্থা এবং উদ্বাস্তু জীবনের রূঢ় বাস্তবতা এই তিনটি বিষয় ছবিতে চলে আসে।
ঋত্বিক তার কথা পৌঁছে দেবার মাধ্যম হিশাবে সিনেমাকে বেছে নিয়েছেন। তার নিজের কথায় :
সিনেমার প্রেমে আমি পড়ে নেই মশাই। আমি গল্প লিখতাম, তারপর দেখলাম গল্প থেকে নাটকে আরো বেশি লোককে অ্যারাইজ করে। তারপর দেখলাম নাটক থেকে সিনেমা আরো বেশি শক্তিশালী। যেদিন আরো শক্তিশালী মাধ্যম বেরোবে, সিনেমাকে লাথি মেরে চলে যাব।
এই হলেন ঋত্বিক ঘটক।
ঋত্বিক তার এই তিনটি ছবিতেই নারী চরিত্র শক্তিশালী দেখিয়েছেন। সুবর্ণ-রেখা ছবির ছোট্ট সীতা জানে, মিথিলার ছেলে জনকরাজা একদিন হাল চাষ করতে গিয়ে কুড়িয়ে পায় পৃথিবীর কন্যা সীতাকে। সেই সীতা আবার পৃথিবীর কোলে ফিরে যান। ছবিতেও দেখা যায়, সীতা যখন দেখে তার ওপর চরম আঘাত আসে, তখন সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
ঋত্বিক ভারতীয় দর্শন আত্মস্থ করতে পেরেছেন ভালোভাবে। সুবর্ণ-রেখা ছবিতে কি অপূর্ব ক্যামেরার কাজ! অভিরাম আর সীতার নতুন গ্রাম ঘুরে দেখা, যুদ্ধের সময়ে পড়ে থাকা ভাঙা প্লেন, ইংরেজরা যে জায়গায় ঘাঁটি নিয়ে যুদ্ধ চালায় এগুলো কৌতূহল ভরে দুজনে দেখতে থাকে। আর দেখে ওই দূরের সুবর্ণ-রেখা নদী।
সিনেমায় বাড়তি একটি কথা নেই। ক্যামেরায় যথা-সময় দৃশ্য বদল। এখানে সীতা আর অভিরাম বড় হয়ে দুজনে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করে। মাধবী মুখোপাধ্যায় বড় সীতার ভূমিকায় অভিনয় করেন। নদীর কিনারে বালিতে বসে সীতা আপন মনে মার্গীয় সংগীত গাইতে থাকে। দাদা শুনে আনন্দিত হন। দৃশ্যটি এত মনোযোগ কেড়ে নেয় যে, চোখ ফেরানো যায় না। মাধবীর এটি প্রথম ছবি। কিন্তু তার এত স্বাভাবিক অভিনয় কোরিওগ্রাফ দেখে অবাক লাগছিল। সীতা এখানে একটি স্ট্রং ক্যারেক্টার।
বড় সীতার ভূমিকায় মাধবী মুখোপাধ্যায়
রেলস্টেশনে অভিরামের সাথে তার মায়ের দেখা হয়। মায়ের মুমূর্ষু অবস্থা। আশপাশের লোক তাকে বাগদী বউ বলে ডাকতে থাকে। অভিরাম ‘মা’ বলে আর্তনাদ করে ওঠে। ততক্ষণে বাগদী বউ মানে অভিরামের মা মারা যান।
অভিরামের এই নতুন পরিচয় তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। ব্রাহ্মণ ঈশ্বরচন্দ্র আর অভিরামকে মেনে নেন নি। তার বোনের সাথে বিয়ে দেবার চিন্তা পরিত্যাগ করেন।
সীতার বিয়ে ঠিক করে ফেলেন অন্য কারো সাথে। কিন্তু সীতা বিয়ের রাতেই অভিরামকে নিয়ে পালিয়ে যায়। কোলকাতা গিয়ে সংসার করে। তাদের ঘরে সন্তান আসে। বিনু তার নাম। বিনুকে সীতা তার গ্রামের গল্প করে। সুবর্ণ-রেখা নদীর পাশ ঘেঁষে সেই গ্রাম। নদীর পাশ ঘেঁষে ধানখেত। গান শোনায়, ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায় লুকোচুরির খেলা রে ভাই’, যে গানটি সীতা ছোটবেলায় গাইত। অভাব হলেও অভিযোগের সংসার ছিল না। অভিরামের গল্প লেখাও থেমে থাকে না। কিন্তু অভিরাম ট্রাক চালাতে গিয়ে অ্যাকসিডেন্ট করে। মানুষ তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। পিপল মবে তখন অভিরামের মৃত্যু হয়। নিরুপায় সীতা বেশ্যাবৃত্তির পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। এদিকে দেখা যায়, পথভ্রষ্ট ঈশ্বর মদ খেয়ে তার বন্ধুর সাথে পতিতালয় যায়। ঈশ্বরকে খদ্দেররূপে দেখে, সীতা তখন আত্মহত্যা করে। পৃথিবীর কন্যা সীতা পৃথিবীর কোলে আশ্রয় নেয়।
একটি ধারাল দা এবং ফিনকি দিয়ে রক্ত। দর্শক এই দৃশ্যগ্রহণ অবাক হয়ে দেখে। কারণ ঈশ্বর এবং সীতার এরপর কী হতে পারে ভেবে দর্শকদের মাঝে একটি অস্থিরতা কাজ করে। ঋত্বিক এই দৃশ্যটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তুলে ধরেন।
এখানে তিনটি প্রজন্ম দেখানো হয় গোলাকার সার্কেলের মতো করে। যা একবিন্দুতে এসে মিশে যায়। প্রথমে ঈশ্বর এবং সীতা। সীতা ও অভিরাম, আবার ঈশ্বর এবং বিনু। দু’বছর পর রায় বেরোয় সীতাকে ঈশ্বর খুন করে নি। সীতার পুত্রকে কাঁধে তুলে নিয়ে ঈশ্বর আবার নতুন বাড়ি খুঁজতে হেঁটে চলে।
আশ্রয় এবং আপন ঠিকানার মাঝখানে অসংখ্য ঘটনা আবর্তিত হতে থাকে সুবর্ণ-রেখা ছবিতে।
‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ঋত্বিক ঘটকের নিজের জীবন নিয়ে। আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্র।
অযান্ত্রিক
ঋত্বিকের সিনেমা দেখলে মনে হয় তিনি কখনো তার বিশ্বাস ও নীতির সাথে আপোস করেন নি। তিনি হাজার বছরের ভারতীয় দর্শন আত্মস্থ করতে পেরেছিলেন। ভারতীয় মাটি বহু মত, ধর্ম, সংস্কৃতি গ্রহণ করতে সক্ষম। এই বোধ ঋত্বিকের মাঝে যে ছিল, তা ঋত্বিকের কাজ দেখলেই বোঝা যায়।
ঋত্বিক প্রথম জীবনে নাটক লিখতেন। বের্টল্ড ব্রেশট ও নিকোলাই গোগোলের রচনাবলি বাংলায় অনুবাদ করেন। তিনি নাটক লেখা, পরিচালনা এবং একই সাথে অভিনয় করতেন। তারপর তিনি সিনেমায় চলে আসেন। ঋত্বিক মানুষের কাছে পৌঁছানোর সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হিশাবে সিনেমাকে বেছে নিয়েছিলেন।
তার প্রথম ছবি ‘নাগরিক’ ১৯৫২ সালে শেষ করেন, কিন্তু ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৭ সালে। ১৯৫৮ সালে মুক্তি পায় ‘অযান্ত্রিক’ ছবিটি। এরপর থেকে তিনি ভারতীয় বাংলা ছবির শক্তিশালী পরিচালক হিশাবে পরিচিতি পেয়ে যান।
মোট আটটি ছবি ঋত্বিক ঘটক পরিচালনা করেন। তার শেষ ছবি ‘যুক্ত তক্কো আর গপ্পো’ মুক্তি পায় ১৯৭৭ সনে। এই ছবিতে তিনি নিজের জীবনচরিত্রে নিজে অভিনয় করেন।
ঋত্বিক নিজেকে বলতেন, ব্রোকেন ইনটেলেকচুয়াল। ক্ষয়িষ্ণু বুদ্ধিজীবী। ঋত্বিক উল্লেখ করেছেন :
১৯৭১-১৯৭২ সময়কালে পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপট আমি যেমন দেখেছি, ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ছবিতে ঠিক তেমনটাই দেখাতে চেয়েছি। এটাতে কোনো ভাবদর্শনের বর্ণনা নাই। আমি কোনো রাজনৈতিক দৃষ্টিতে এটাকে দেখি নি। কোনো রাজনৈতিক ভাবাদর্শকে তুষ্ট করা আমার কাজ না।
ছবিতে দেখা যায়, স্ত্রী দুর্গা তার অ্যালকোহলিক স্বামী নীলকণ্ঠকে একা রেখে তাদের পুত্র সত্যকে নিয়ে কাঞ্চনপুর নামে এক জায়গায় শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে চলে যায়।
ঘরবাড়িহীন নীলকণ্ঠ বাগচী, ছাত্র নচিকেতা এবং ৭১-এর যুদ্ধে পূর্ববাংলা থেকে শরণার্থী হয়ে আসা বঙ্গবালাকে নিয়ে উদ্দেশ্যহীনতায় খুব কষ্ট হয়, নীলকণ্ঠ বঙ্গবালাকে যখন বলেন, ‘তুমি আমার পূর্ব বাংলার আত্মা’, শুনতে কষ্ট হয়। কী গভীরভাবেই না নীলকণ্ঠ তার পূর্ববাংলাকে হৃদয়ে ধরে রেখেছিলেন!
কোলকাতা শহরের স্টেশনে, রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন সময় কাটাতে থাকেন। পরিচয় হয় চাকরি-সন্ধানী বৃদ্ধ জগন্নাথ ভট্টাচার্যের সাথে। পরিচয় হয় ছৌ-নৃত্যের নামকরা পঞ্চানন ওস্তাদের সাথে।
অবশেষে নীলকণ্ঠ কাঞ্চনপুরে তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতে পদযাত্রায় রওনা দেন। বঙ্গবালা ও নচিকেতা প্রেমে পড়ে। নীলকণ্ঠ সকালে শালবনে পুত্রের মুখ দেখে আবার রওনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
শালবনে কিছু নকশাল ছেলেদের সাথে নীলকণ্ঠের দেখা হয়, এই জায়গায় নীলকণ্ঠের কিছু লম্বা ডায়লগ আছে। তিনি বলতে থাকেন, ‘অগ্নিযুগের সন্তানের মতো তোমরা সফল ও নিষ্ফল। একসঙ্গে গোঁয়ার এবং অন্ধ। তোমাদের সিনসিয়ারিটি, বীরত্ব এসবে আমার সন্দেহ নেই কিন্তু তোমরা সম্পূর্ণ মিসগাইডেড।
যত গাল দেই, এদেশে সবচাইতে উজ্জ্বল দার্শনিক চিন্তা কিছু জন্মগ্রহন করেছে, কাজেই সবচেয়ে বড় ফিচেল বদমাইশের হাতে এ দেশ প্রচুর হাতিয়ার তুলে দিয়েছে।
মাল খাবার পয়সা জোটানোর জন্য চুরি ও মিথ্যা বলে যাব। কিন্তু নাম, যশ, মানুষ খুন করে পয়সা কামানোর জন্য একটি মিথ্যেও আমার মুখ দিয়ে বেরোবে না। মোট কথা মানুষ পোজ মেরে নিজের স্বার্থ আদায় করতে চায়।’
কথাগুলোয় খানিক এলোমেলো ভাব, কোথাও-বা দুএকটি শব্দ বলা হয় নি। কারণ ছবিতে মাল (মদ) খেতে খেতে নীলকণ্ঠ এই সব সংলাপ বলে যাচ্ছিলেন।
এই ডায়লগগুলো যখন দিচ্ছিলেন, ঐ সময় নকশালীদের ওপর আক্রমণ আসে। উভয় পক্ষ গুলি পাল্টা গুলি চালায়।
শালবনে সত্যকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুত্রসহ স্ত্রীকে দেখে নীলকণ্ঠ দুর্গা বলে ডেকে ওঠেন, ঠিক তখনই তার পেটে এসে গুলি লাগে। মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে আঁকড়ে ধরে বলতে থাকেন, ‘মানিক বাবুর মদন তাঁতির কথা মনে আছে? ভুবন মোহনের টাকায় সুতো কিনে আমি তাঁত চালাব? তোদের সাথে বেঈমানি করব?’
যুক্তি তক্কো আর গপ্পো
ঋত্বিক কখনো কম্প্রোমাইজ করেন নাই। এটিই ছিল তার অহংকার।
‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ছবিতে রবীন্দ্রসংগীত ব্যবহার করা হয়েছে। এসেছে দূরবীন শাহর গান আর বঙ্গবালার কণ্ঠে পূর্ববাংলার বিরহী গীত।
ঋত্বিক নিজেকে উপস্থাপন করেছেন যেভাবে, এটি একটি বিরল অভিজ্ঞতা দর্শকের জন্য। ঋত্বিকের আঙ্গুলগুলো যখনি চোখে পড়েছে, মনে হয়েছে এই আঙ্গুলগুলোয় জাদু আছে। তা না হলে এমন সৃষ্টি সম্ভব হতো না।
ঋত্বিকের বেশির ভাগ ছবি ফ্লপ করেছে। তিনি বলছেন, ‘আমি ফ্লপ করি নি। ফ্লপ করেছে দর্শক।’ ঋত্বিক ছাড়া এই ঔদ্ধত্য আর কে দেখাতে পারেন? আর কাকেইবা মানাবে এই অহংকার?
ঋত্বিকের স্মরণ সভায় সত্যজিৎ রায় বলেছেন :
আমাদের সকলের মধ্যে হলিউডের প্রভাব ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু ঋত্বিক তা থেকে মুক্ত ছিলেন। ঋত্বিক ছিলেন সম্পূর্ণ নিজের মতো একজন। ‘তুমি গেছ, স্পর্ধা গেছে। বিনয় এসেছে।’ —শক্তি চট্টপাধ্যায়।
ঋত্বিক ঘটকের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, আমাদের এমন আরেকজন ইন্টেলেকচুয়াল দরকার যে ঋত্বিকের মতো স্পর্ধা দেখানোর অধিকার রাখে। যে সব রকম ইগোকে ভেঙে সত্যকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে যায় নির্ভীকভাবে। পোজ মেরে বাজিমাত করা ইন্টেলেকচুয়াল আমরা দেখতে চাই না।