পড়ালেখার জীবন শেষ হয়ে যাবার পর কোনো এক হেমন্তে শাশ্বতী ও গায়ত্রী আলাদা হয়ে যায়। শাশ্বতী অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার পুলক-এর সঙ্গে বিয়ে হয়ে শ্বশুড়বাড়ি মনোহরদি চলে যায় অন্যদিকে গায়ত্রী একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকরি নিয়ে চলে যায় সিলেট। বহুকাল পর তারা ফিরে এসেছে নিজ গ্রামে। শৈশব, কৈশোর, যৌবনের একটা বিশেষ সময় পর্যন্ত তারা একে অপরের কাছে ছিলো। আজ দুজনার দেখা হয়েছে আবার, তারাও ফিরে গেলো ফেলে আসা সেইসব দিনে। কথার খই ফুটছে, কথার পর কথা, কাহিনির পর কাহিনি, অতীত স্মৃতিচারণ, কথার শেষ নেই। কথা বলতে বলতে তারা দুজনে শ্যামনগরের মোল্লাপাড়ায় পৌঁছে যায়। এ-পাড়ায় আজ প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটেছে, দরিদ্র একটি পরিবারে দুটি অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। দুই ভাইবোনের একসঙ্গে মৃত্যু হয়েছে। ছেলেটির মৃতদেহ ঘিরে আহাজারি চলছে, মৃত ছেলেটির বড়ো বোনের মৃতদেহ ফরিদপুর মেডিকেল থেকে রওনা হয়েছে। কানাঘুষার শেষ নেই। কি করে এমন ঘটনা ঘটলো, কি করে সম্ভব হলো, কেনো এটা করলো, কেনোইবা তা করতে গেলো, কীভাবে এক সঙ্গে দুজন মরলো, আহা কি করলো এরকম নানা রকম প্রশ্ন ও আর্তি ছুড়ে দিচ্ছে একে অপরে। নারীরা একে অপরের গলা জড়াজড়ি করে বিভিন্ন সুরে কান্নাকাটি করছে।
শাশ্বতী ও গায়ত্রী একটু এগিয়ে গিয়ে একজন লেখাপড়া জানা ছেলেকে ডেকে নিয়ে সবিস্তারে জানতে চাইলো আসলে ঘটনাটা কী, আর কেনোইবা তারা দুভাইবোন এক সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছে? ছেলেটি বেশ সুন্দর করে ঘটনাটির বিবরণ দিতে শুরু করলো। এরা খুবই দরিদ্র, অভাব-অনটন লেগেই থাকে, বড়ো মেয়েটিকে অনেক কষ্ট করে আই.এ পাশ করিয়েছে, কলেজেরই এক বেকার ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তারা বিয়েও করে ফেলে, সে স্বামীর সংসারেও যায়। কিন্তু যে কপালে দরিদ্রের বন্ধন, সে কপালে স্বচ্ছলতা সুখ আসে না। বছর খানেক না যেতেই বেকার ছেলে মেয়েটির দরিদ্র পিতামাতার কাছে যৌতুক চেয়ে বসে বিদেশ যাবে বলে, তারা দিতে পারে না, মেয়েটির ওপর ভালোবাসার বদলে শুরু নির্যাতনের পর্ব, উপায়ান্তর না দেখে মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। বাপের বাড়িতে এসেও মেয়েটির সুখ জোটে না, নিজের বাবামাসহ পাড়া প্রতিবেশী নানা রকম খোটা দিতে থাকে, খোঁচা দিয়ে কথা বলে প্রায়ই। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে মেয়েটি সিদ্ধান্ত নেয় আত্মহত্যার। পাশে পরিতোষের দোকান থেকে এক লিটারের একটি কোকের বোতল কিনে নিয়ে এসে গোয়াল ঘরে রাখা ধানক্ষেতের বিষ মিশিয়ে পান করে, অর্ধেকটা বোতল পান করার পর সে তার শোবার ঘরের খাটের নিচেই বাকিটা রেখে দেয়, কি একটা জিনিস খুঁজতে গিয়ে তার ছোটো ভাই খাটের নিচেই রাখা বোতলকে কোকের বোতল মনে করে গোগ্রাসে পান করে নেয়। এর মধ্যে ছেলেটির বোনের বিষের যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায়, তার বাবার কাছে সব ঘটনা সে খুলে বলে, তারপর ফরিদপুর মেডিকেলে নিলে তার মৃত্যু হয়। এদিকে বোনকে ফরিদপুর পৌঁছাতে না পৌঁছাতে ছেলেটিরও বিষের জ্বালা শুরু হয়ে যায়, তাকেও হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্যে গ্রামবাসী রওনা হয়, কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। ভাইবোনের মৃত্যু রহস্যের আপাত এটাই ছিল স্থানীয় ছেলেটির বিবরণ। তারা আর এ-গল্প শুনতে চায় না। মনপ্রাণ ভার হয়ে আসে, হৃদয় কোণে মেঘ জমা হয়। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! ছোটো ভাই জানতে পারেনি বোনের মৃত্যু রহস্য আর বোন জেনে যেতে পারেনি তারই রেখে যাওয়া অবশিষ্ট বিষপানে কতো আদরের ছোটো ভাইয়ের মৃত্যু।
শাশ্বতী ও গায়ত্রী মোল্লাপাড়া ছেড়ে কিছুটা দূরে এসে আবারও দুঃখের কাহিনিতে জড়িয়ে যায়। গায়ত্রী তার বান্ধবীকে বলে- ‘মোখলেস স্যারের মৃত্যুর খবরতো পেয়েছিস?’ মাথা নেড়ে সে হ্যাঁ সূচক জবাব দেয়। গায়ত্রী আবার বলে- ‘তোকে খুব পছন্দ করতো স্যার, মনে পড়ে তোর?’ আগের মতোই জবাব দিয়ে শুধু বলে- ‘বাদ দেনারে ওসব কথা।’ জানিস শাশ্বতী মোখলেস স্যারের খুব ইচ্ছে ছিলো তাঁর মৃত্যুর পর মূল্যবান সম্পদ বইগুলো যেনো বিভাগীয় সেমিনার লাইব্রেরিতে দিয়ে দেওয়া হয়। তিনিতো শেষপর্যন্ত বিয়ে করেনি, জীবনের বহু নগদ অর্থ দিয়ে প্রায় পনেরো হাজার বই সংগ্রহ করেছিলেন। আমাকে একবার স্যার বলেছিলেন- ‘তাঁর কাছে ‘স্যাটানিক ভার্সেস-এর অরিজিন্যাল প্রিন্ট কপি আছে।’ আমিতো শুনে অবাক হয়েছিলাম। জানিস শাশ্বতী, স্যারের কোনো স্বপ্নই পূরণ হয়নি, যাদের ভালোবাসতেন, মৃত্যুকালে তাদের কাছে ডেকেও পাননি, তাঁর সন্তানের যত্নে লালন করা বইগুলো সব হরিলুট হয়ে গেলো, শুনেছি তাঁর এক ভাই এসে রাতের আঁধারে ট্রাক ভরে বইগুলো নিয়ে গেছে, আরো পরে জানতে পেরেছি বইগুলোকে নাকি কম দামে বিক্রি করেও দিয়েছে। আফসোস, পৃথিবীর বহু মুল্যবান গ্রন্থ ছিলো স্যারের ব্যক্তিগত সংগ্রহে, সেই মহামূল্যবান বইপুস্তকগুলো ভেসে গেলো আজ কোথায়। মোখলেস স্যারের একটা কমন ডায়লগ ছিলো, একথা বলতেই শাশ্বতী উত্তর দেয়- ‘আমি চার্বাক চেলা / ফুরালো আমার জীবন বেলা।’গায়ত্রী বলে ওঠে তোরতো সুন্দর মনে আছেরে! শাশ্বতীর চোখের কোণে অশ্রু জমা হয়ে টুপ করে ঝরে পড়লো গ্রামীন মেঠো পথে, তা দেখতে পেলো না গায়ত্রী।
শাশ্বতী গায়ত্রীকে বললো তোর সংসার জীবনের কথা কিছু বললি নাতো। কি বলবো বল, দুজনের জীবনই চিরকাল সমান্তরালভাবে বয়ে চলছে, তোরও টিকলো না, আমারও তাই। ভালোই তো চলছিলো জীবন। ঘটনাক্রমে সিলেটে গিয়ে বিমানের এক ফ্লাইট অফিসারের সঙ্গে পরিচয় হয়, দেখা হবার পর পরিচয়, তারপরতো জানিস পারিবারিকভাবেই আমাদের বিয়ে হয়েছিলো। ওই সময় তুই আসতে পারিসনি, তোর বরের সঙ্গে তোকে বাইরে যেতে হয়েছিলো। সমস্যা হলো বিয়ের পর ও আমার চাকরিটা আর পছন্দ করতে চাইলো না। এ নিয়ে ওর সঙ্গে আমি বহুবার কথা বলেছি, পারিবারিকভাবেও আমরা সমাধানে আসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কার্যকরী কোনো সমাধান হচ্ছিলো না, তবুও আমি মানিয়ে নিয়ে চলছিলাম বরাবরের মতোই। সমস্যা হলো সুমিত মাঝে মাঝেই ঘরে ফেরা বন্ধ করে দিলো, এসব বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করলে ক্ষেপে গিয়ে আমার ছেলেটার সামনে চরম দুর্ব্যবহার করতো। এক সময় মুখ বন্ধ করে সবকিছু সয়ে যেতে চেষ্টা করলাম, ভাবলাম সুমিত হয়তো এক সময় ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ঠিকতো হলোই না, বরং উল্টো এক ঘটনা ধরা পড়লো, সুমিত গভীর রাত পর্যন্ত যেনো কার সঙ্গে কথা বলে, হাসে! আমার দুঃখদীর্ণ মুখ তার মনে পড়ে না, আমাকে সে ভাবতে পারে না, চিনতে পারে না, ও এভাবে যে কীভাবে হাসে তা আমি বুঝে উঠতে পারি না। জানিস শাশ্বতী আমার খুব ইচ্ছে করতো সুমিত আমার সঙ্গে এভাবে হেসে উঠুক, মেতে উঠুক, বহু রাতে আমি ওর কাছ থেকে ফিরে এসেছি, ওকে ছুঁতে আমার খুব ইচ্ছে করতো, বহুদিন হয় ওর সান্নিধ্যে আমি যেতে পারি না, কাছে গেলেই বলে তার শরীর ভালো নেই, মন ভালো নেই, এই বলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে এড়িয়ে যায়। ছেলেটিকে বুকের মাঝে ধরে রেখে তবুও আমি সময় পার করছিলাম, আশায় ছিলাম, হয়তো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। ঠিক হলো না। এক বিমানবালাকে হৃদয়ে ঠাঁই দিয়ে ফেলেছে সুমিত, ওর মোবাইল মেসেঞ্জারে তার ছবিতে ভরা, দিন কাটে এখন তার বিমানবালায়। নিজেকে আর রক্ষা করতে পারছিলাম না, বাড়ি এসে পরিবারের সবাইকে জানিয়ে সুমিতকে ডিভোর্স দিয়ে দিলাম। খুব খারাপ লাগছিলো ছেলেটির মুখের দিকে তাকিয়ে। বারবার সুমিত ছেলের অধিকার নিয়ে কথা বলতো, আইনের তোয়াক্কা করতো না, ছেলেটিকে তার কাছেই দিয়ে দিয়েছি। কোম্পানীকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেছি। তাদের অনুরোধ করেছিলাম সিলেটের বাইরে আমাকে যেনো ঢাকাতে পোস্টিং করে দেয়। তারা অনুরোধ রক্ষা করেছে। সিলেটের সমস্ত পর্ব চুকিয়ে বাড়িতে ফিরেছি। এক মাস মতো ছুটি চেয়েছিলাম, তারা তাও দিয়েছে। বাড়ি এসে মায়ের কাছে শুনলাম তুইও বাড়িতে এসেছিস।
আমার নিজের প্রতি খুব ঘৃণা হয়রে গায়ত্রী। আমি এমন একজন মানুষকে ঠকিয়েছি, কষ্ট দিয়েছি, আমি জানি যে, সারাজীবন এর জন্যে আমাকে পস্তাতে হবে, কষ্ট পেতে হবে। জীবনে চমৎকার এক মানুষ এসেছিলো আমার, অথচ তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমার স্বাধীনতার বিষয়ে পুলকের কোনো বাঁধা ছিলো না, দারুণ প্রগতিমনা এক কঠোর ব্যক্তিত্ববান পুরুষ। আমার কোনো বিষয়ে তার না ছিলো না, না চাইতেই আমি সব পেয়ে যেতাম, সংসারে তাকে আমার মা-এর মতো মনে হতো। কোনো কিছুর কমতি দেখলে পুলক খুব মন খারাপ করতো, সে ভাবতো আমারই যেনো না জানি কতো কষ্ট হয়, আসলে তা নয়, পুলক খুব সিনসিয়ার। জানিস গায়ত্রী এমন সুপুরুষ কজনার ভাগ্যে আসে, কিন্তু আমি তার মর্যাদা দিতে পারলাম না। কি মিষ্টি পুলকের কণ্ঠ, কথা বলার সময় মিছরির দানা যেনো ঝরে পড়তো, আমি তা আঁচল ভরে তুলে নিতে পারলাম না। পুলক বহুবার আমাকে বলেছে তোমার সময় যায় না, এক কাজ করি তোমাকে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা করিয়ে দিই। আমি রাজি হইনি। অথচ ওকে খুব ভালোবাসে ওর এমন রাজনীতিক বন্ধুর অভাব নেই, যারা আমার একটি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারতো। তাছাড়া তুইতো জানিস আমার রেজাল্ট বা লেখাপড়ার ধার একবারে কম ছিলো না। অথচ সেই কাজটি করতে পারলে ভালো হতো। তা না করে, পুলকের মতো এমন নিষ্পাপ মানুষটিকে ঠকাতে আমার মন ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমি ধরা পড়লাম এক অন্ধকার সময়ের হাতে। তুইতো জানিস বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই আতিক আমাকে পছন্দ করতো, তখন কোনো সাড়া দেইনি। পুলক সকালে যায়, রাতে ফেরে। ব্যাংকের প্রবল চাপ সামলাতে হয়, যদিও তাতে করে কোনোদিন আমার সংসারের কোনো ত্রুটি সে হতে দেয়নি। পুলক রাতে বাসায় ফিরে সমস্ত কিছু ঝকঝকে তকতকে করে ফেলতো, সে বাসায় ফিরলে সুবাস ছড়াতো চারিদিকে। সদ্য ফোটা রজনীগন্ধা শরীর মনে হতো ঘুরে বেড়াচ্ছে সারা গৃহময়, আমি সে সুবাস ধারণ করতে পারিনিরে গায়ত্রী। আতিক প্রায়ই অবসরে ফোনে, ম্যাসেঞ্জারে নক করতে থাকে, আমি জানি যে পুলকের পদনখের যোগ্যতাও নেই তার। তবুও আমি কেনো ঢুকে গেলাম সেই অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। আমি কেনো পশু হয়ে উঠলাম, তা ঠিক বুঝতে পারলাম না, কেনো আমি ওকে ঠকাতে ব্যস্ত হয়ে উঠলাম তা আমার কুৎসিত মন এখন বলতে পারে না। ধীরে ধীরে আতিক আমাকে গ্রাস করে নিলো। সমস্ত সর্বনাশের শেষে আমি বুঝতে পারলাম সে পূর্বের প্রতিশোধ নিয়েছে, রাজরানীকে, পুলকের জীবনের সৌন্দর্যময়ী দেবী নন্দিনীকে নামিয়ে এনেছে রাস্তায়। পুলকের কাছে আমার আর মুখ দেখাবার ছিলো না। এসবের মাঝে ওর একদিন ছোট্ট একটা স্ট্রোক হলো। ইশ্বরের কাছে আমি সারাটা রাত কেঁদেছিলাম পুলকের জন্য, হে ঈশ্বর তুমি পুলককে ফিরিয়ে দাও, আমি সরে যাবো চিরতরে পুলকের জীবন থেকে। পুলক ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছে। সে তবুও ছিলো স্বাভাবিক, সেই হাসিমাখা মুখ ফিরে এলো আমার জীবনে আবার। পুলকই আমাকে বোঝাতে চেয়েছে, যা হয়েছে সব ভুলে যাও না, নতুন করে এসো আমাদের জীবনের পথচলা শুরু হোক, এসব কোনো বিষয় না, আমার কিছু মনে নেই। আমি সব শুনে গেছি ম্লান বদনে, কোনো উত্তর দিইনি। কিন্তু আমি তোমাকে আর পুড়াতে চাইনে পুলক, ঠকাতে চাইনে। আমি একদিন মাঝরাতে পুলকের ঘুম ভাঙালাম, তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম, যদিও তারও আগে আমি পুলকের ঘুমন্ত শরীরের পদচুম্বন করে নিয়েছি। পুলক চমকে গেছে, তার ভয়ার্ত চোখ, আমি ওর চোখ চুম্বন করলাম, তার সমগ্র শরীর তখন কথা কয়ে উঠেছে, আমি তখন নিস্তেজ নীলকণ্ঠ, আমার শরীরের আগুন তখন মৃত। আমি কোনো কথা না বলে হঠাৎ বলে ফেললাম- ‘পুলক, আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও, ঈশ্বরের কাছে তোমাকে চেয়ে নিয়েছি, আমার প্রস্থানের বিনিময়ে।’ তার চোখ বেয়ে ক্রমাগত ঝরে যেতে লাগলো আঙুর জল। তবুও সে আমাকে বাঁধতে চেয়েছিলো। এক বিরল পুরুষ। চলে এলাম স্বর্গ থেকে মৃত্তিকায়। পুলকের ইচ্ছে ছিলো, আমি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি, তার ইচ্ছের বাস্তবায়নটা আমি এবার ঘটাতে চাই। ঢাকার কোনো প্রতিষ্ঠানে সেই প্রচেষ্টায় নিমগ্ন থাকবো। দুজন এক সঙ্গেই ঢাকা যাবো। চল সামনে দ্রুত চল, বেলা পড়ে এলো।