You are currently viewing

তিনটি কবিতা

তমিজ উদ্‌দীন লোদী

 

যে ঝড়

 

যে ঝড় তুলে তুমি যাচ্ছিলে তার গতি অকস্মাৎ রুদ্ধ হয়ে গেছে

গাড়লেরা নেমেছে রাস্তায়

তারা এখন লোফালুফি খেলে ।

 

তারা এখন করাতকলের মতো

চিরে যাচ্ছে মূল্যবোধ নামের তরু

তারা ডেকে আনছে ঈশানের মেঘ চাঁদকে আড়াল করবে বলে

ছড়িয়ে দিচ্ছে গুঁড়ো গুঁড়ো বিষ , সায়ানাইড তরল

তারা নেমে যাচ্ছে যতখানি নেমে যেতে হয় ।

 

উত্থান নয় বরং

তারা জানে পতনের চেয়ে উৎকৃষ্ট আর কিছু নয় ।

 

ঘনবদ্ধ বুননের জমাট বন্ধন

 

একটা দিন আসবে মানুষ হাঁটবে কাঁটাছেঁড়াহীন অ-বন্ধুর পথে

গণতান্ত্রিক অস্থিমজ্জায় ধর্মাধর্মহীন

উদার ‌বন্ধুতায় গৌণ হবে চূর্ণভাবনাগুলো

কূপমণ্ডূকতার দেয়াল ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবে

মানবিক বোধ ।

 

একটা দিন আসবে এইসব কালো হাওয়া থাকবে না

ভাঁড়েরা দৌড়াবে না যত্রতত্র

ইঁদুরগুলো কেটে ফেলবে না সৌহার্দের দড়ি !

 

অন্ধগুহার দরজা যখন খুলে যাবে

তখন বেরিয়ে পড়বে ‘মি: জ্যাকিল এণ্ড হাইড’-এর খেলা

আশ্চর্য নিরাময়ের দ্যুতিতে ভেসে যাবে জরাগ্রস্ত আঁধার ।

 

আমাদের আলে আলে গজাবে নতুন ঘাস

মাঠগুলো ভরে যাবে সবুজে-সোনায়

পাখিরা উড়বে নির্বিঘ্ন

পরিযায়ী হাঁসগুলো শঙ্কাহীন ভরে তুলবে ঝিল ।

 

দাঁড়িয়ে থাকবে একপ্রান্তে অপনীতি আর অন্যপ্রান্তে অবারিত প্রেম

জলতলের সংঘাতে উছলে উঠবে সফেন জলরাশি

প্রেমের দ্যোতনায় ঝলসে উঠবে

ঘনবদ্ধ বুননের জমাট বন্ধন ।

 

 

একজন কবির সরল স্বীকারোক্তি

 

যতদিন বেঁচে আছি শাদাকে শাদা এবং কালোকে কালো বলে যাব ।

তকমার পেছনে যারা ঘুরে ঘুরুক । কালোকে বলুক শাদা । নানা

আয়োজনে ব্যস্ত থাক । ঘোর রাত্রিকে বলুক দিন ।

 

কোনোকালেই ছিল না , এখনো নেই  এক্রোবেটের মতো কিংবা ম্যারাথন

দৌড়ের মতো দৌড়ে যাওয়া । স্রোতের অনুকূলে পাল তুলে বলে যাওয়া-

এটিই একমাত্র পথ ।

 

জানি যেখানে বাঘ ও সিংহদের হিহিংস্র দাপট সেখানে নিরীহ হরিণেরা

নৃশংস শিকার । তবু প্রকৃত কবিরা হাঁটে লোরকার মতো ।

পিরানদেল্লোরা যায় মুসলিনীর সাথে ।

 

ভেতরে প্রমত্ত ঢেউ । নেরুদা ও নজরুল হেঁটে যায় ।

হরিণেরা থাকবে আরো কিছুকাল বাঘের খাঁচায় ।

*=*=*=*=*=*=*=*=*=*=*=*=*