২০২১ সালের এপ্রিল মাসে চলে গেছেন নিঃশব্দের তর্জনীর কবি শঙ্খ ঘোষ। বাংলা কবিতার অবিস্মরণীয় কন্ঠস্বর শঙ্খ ঘোষ। ৯১তম জন্মদিনে মন-মানচিত্র পরিবার তাঁকে জানাচ্ছে প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাচ্ছি প্রণতি।
শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
অ ঞ্জ লি
এই তো প্রথম তুমি নেই।
অথবা এই প্রথম ছড়িয়ে সমস্তদিকে আছো।
এভাবেও ভেবে নিই যদি?
স্মৃতি ছুটে যেতে চায় তোমার ভীষণ কাছে
স্নায়ু বলে, ‘একা হয়ে বাঁচো’।
ভালবাসা এত স্ববিরোধী?
তোমার স্রোতের সামনে নিচু হয়ে বসি।
আকাশ চলেছে ভেসে তারাসমারোহ নিয়ে
তোমার ভিতরে, নিরবধি…
আর কোনও চাওয়া নেই। আর কোনও শ্লোক নেই আজ।
আমি সে-জলের ফুল অঞ্জলিতে রাখি।
সরস্বতী আসলে তো নদী।
নী র ব তা গা ছ
আমরা আবারও হৈ হৈ করে বাঁচছি।
জড়ো হয়ে গেছি বই-জমে-ওঠা ঘরটায়,
হুল্লোড়ে কাছে বসছে না কোনও কাকচিল
বাতাস গৃহিণী, রোদ্দুর বুড়ো কর্তা।
আলোচনা থেকে টীকা-টিপ্পনী জুতসই
কার কথা বৃথা, কে তর্কে বেশি দাম পান…
কখনও যদি-বা স্তব্ধতা হয় উৎস,
ছুটে এসে তাকে ভেঙে দিয়ে যায় সাম্পান!
ঘন যাতায়াতে ধুলোময় হলো চৌকাঠ…
জন্মদিনেই পুজো হবে, কে তা জানতো?
মাঝে ব’সে দুই নীরবতাগাছ। নৌকা।
শালের কিনারে মিশেছে আঁচলপ্রান্ত।
প্রণামের পাশে রাখা আছে কত বিশ্বাস
স্পর্শের পাশে রাখা আছে কত শব্দ
ভালবাসা এই পূর্ণা, তো এই নিঃস্বা…
তাকেই তো শেষে মেনে নিতে হয় সব দোষ।
আমি দোষ দেব বসন্তকাল, সন্ধে…
কেউ দোষ দেবে স্মৃতি আর স্বীকারোক্তি
কে জানে, এবার বিদায়ের পর কোন দেশ…
সুবিধের নয়, কবিতার মতো লোকটি।
আমরা তবুও প্রসাদের লোভে একজোট।
হাতে হাতে ঘোরে অঞ্জলি নিঃসঙ্কোচ —
এবার থেকে তো রোজই তিথি, রোজই ন্যায্য,
পুজোয় কী লাগে? প্রতিমা এবং শঙ্খ…