You are currently viewing ৩টি কবিতা/ বীথি রহমান

৩টি কবিতা/ বীথি রহমান

৩টি কবিতা/ বীথি রহমান

 

যে রাত তন্দ্রাহীন 

 

আজ সারারাত সে তন্দ্রাহীন থাকবে

যেভাবে থাকে দীর্ঘদিন অসুখে ভোগা কেউ

 

গলায় একটা খুব যন্ত্রণাময় অস্বস্তি হবে

না সে তা গিলে ফেলতে পারবে, না উগড়াতে

তার খুব চাঁদ দেখতে ইচ্ছে করবে, এমন একটা কোথাও

যেখানে জল আর জঙ্গলের পাশাপাশি আদিম বসবাস

আকাশ থেকে উত্তুঙ্গ বাতাস নেমে আসবে

আর সে নক্ষত্রের দিকে উদোম দৃষ্টি মেলে

শুয়ে থাকবে বিস্তীর্ণ অন্ধকারের ভেতর

 

জোছনা যখন তাকে পুরোপুরি গ্রাস করবে

তার মনে পড়বে শ্যামবর্ণা নারীটির চোখ

যার চোখ নদী হতে হতেও আগুন হয়ে গেছিলো

যেহেতু এখন তার চোখে বিস্ফোরক দ্রব্য ছাড়া

আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না

সে চাইবে নারীটির বুকে আশ্রয় নিতে

চিবুক, গলা হাতড়ে তার মুখ যাবে আরো নিচে

ঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে খুঁজবে বুকের অস্তিত্ব

হ্যাঁ, ঠিক ঠিক কিছু একটা হাতে ঠেকবে

প্রাপ্তির আনন্দে সে উতলা হবে

নারীটির বুকে ঢুকবার আপ্রাণ চেষ্টায় সে তখন উন্মুখ

রক্তে তার হরনের নেশা…

 

কিন্তু হায়! নারীটির বুকে স্তন ছাড়া কিচ্ছু অবশিষ্ট নেই

অথচ- সেখানে একটি তরতাজা হৃদয় থাকবার কথা ছিল!

 

আমার কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই 

 

প্রেম ভাঙলে যেমন কষ্ট হয়

যেমন বুক ভেঙেচুরে আসে

কালো চোখে নামে নোনাজলের ধারা

তেমন মর্মদহনে প্রতিবার দগ্ধ হই

অস্থির রাত্রির বুকে কাটি নখের আঁচড়

যতোবার একটি করে মানুষ যায়…

 

যেহেতু আমার কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই

যেহেতু যুদ্ধের কৌশল জানি না

যেহেতু ভালোবাসাই আমার একমাত্র ঢাল

তাই সেই ঢাল পেরিয়ে গেলে

বরাবর বুকে বিঁধে যায়

 

অ-সম্পর্কগুলো টিকে আছে

শুধু হৃদয়ের মানুষগুলোই নেই।

 

হয়তো সেদিন

 

একদিন তুমিও তাদের দলে থাকবে

যাদের আগে আমার মৃত্যু হবে

সংবাদ পেয়ে সেদিন হয়ত খুব মনে পড়বে

পুরনো রাগ, মনোমালিন্য, অথবা

কোনো চরম আঘাত দেবার ঘটনা

যে আঘাত না দিলেও চলতো

তাতে অন্তত চোখে চোখ পড়লে

কেউ দৃষ্টি সরাতাম না

আমরা হেসে দুটো কথা বলতাম

নির্জন কোনো জলধারার সামনে বসতাম

হয়তো আমরা চা পান করতাম

নিদেনপক্ষে একটা সিগারেট

কিংবা বিপণী বিতানের এক কোণে মুখোমুখি চেয়ারে

আমরা পান করতাম ফ্রুটস জুস

 

মৃত্যুটা তোমারও আগে হতে পারে

তাতে আর কতোটুকুই বা ফারাক

এ জীবনে আমরা তো আর মুখোমুখি বসছি না!

***