You are currently viewing ১৬২তম রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৬২তম রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৬২ তম রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

বাঙালির জীবনে বছর ঘুরেই আসে ২৫শে বৈশাখ। বাংলা সাহিত্যের অনন্য ভাস্বর নক্ষত্র কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইতিহাসের ললাটে এঁটে দেয়া তিলক উদ্ভাসিত হয় নতুন মহিমায়, ভিন্নতর অনুষঙ্গ নিয়ে। বিশ্বমানবের মুক্তির বাণী ছড়িয়ে দিয়ে মানবমনের অর্গল খুলে দেয়া রবীন্দ্রনাথকে বাংলাদেশে বারবার বন্ধ করে দেয়ার চক্রান্ত হয়। তাঁকে খন্ডিতভাবে উপস্থাপন করে ধর্মীয় জিঘাংসার যাঁতাকলে ফেলে অবমাননা করা হয়েছে। তবে রবীন্দ্রনাথ যতো বেশী বাধাগ্রস্থ হয়েছেন ততোধিক বাংলার মাটি ও মানুষের মধ্যে তিনি প্রোথিত হয়েছেন গভীরভাবে। হুমায়ুন আজাদ এ ব্যাপারে চমৎকার বিশ্লেষণ করেছেনঃ

“ রবীন্দ্রনাথ- যাঁকে বাতিলের চেষ্টা করে আসছে নষ্টরা পবিত্র পাকিস্তানের কাল থেকে; পেরে ওঠে নি।এমনই প্রতিভা ঐ কবির, তাঁকে বেতার থেকে বাদ দিলে তিনি জাতির হৃদয় জুড়ে বাজেন; তাঁকে পাঠ্যপুস্তকথেকে বাদ দিলে তিনি জাতির হৃদয়ের কাব্যগ্রন্থে মুদ্রিত হয়ে যান, তাঁকে বঙ্গভবন থেকে বাদ দেওয়া হলেতিনি সমগ্র বঙ্গদেশ দখল করেন; তাঁর একটি সঙ্গীত নিষিদ্ধ হলে তিনি জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠেন।

প্রতিক্রিয়াশীল নষ্টরা অনেক লড়াই করেছে তাঁর সাথে, পেরে ওঠে নি; তাঁকে মাটি থেকে বহিষ্কার করা হলেতিনি আকাশ হয়ে ওঠেন; জীবন থেকে তাঁকে নির্বাসিত করা হলে তিনি রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন জাতিরস্বপ্নালোকে। নষ্টরা তাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে আপ্রাণ। যদিও তিনি জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা,তবুওতিনি জাতীয় কবি নন। তাঁর নামে ঢাকায় একটি রাস্তাও নেই; সংস্থা তো নেই। তাতে কিছু যায় আসে নিতাঁর; দশকে দশকে বহু একনায়ক মিশে যাবে মাটিতে। তিনি বেঁচে থাকবেন বাঙলায় ও বিশ্বে।”

অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ— জলপাই রঙের অন্ধকার

রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব মানবতার কবি। তিনি বাংলা সাহিত্যে যে বিশাল সৃষ্টিকর্ম রেখে গেছেন তা বাঙালি জাতির মহামূল্য সম্পদ। সময়ের প্রেক্ষাপট বদলাবে কিন্তু রবীন্দ্র প্রাসঙ্গিকতা নিঃশেষ হবে না। কারন বিশ্বমানবের মুক্তির যে আকুল আহবান তিনি করে গেছেন তার গুরুত্ব কখনোই কমবে না। কবি বলেছেনঃ

“মানবের অধিষ্ঠাত্রী দেবতার বহু অসম্মান,

বিধাতার বক্ষ আজি বিদারিয়া

ঝটিকার দীর্ঘশ্বাসে জলে স্থলে বেড়ায় ফিরিয়া।

ভাঙিয়া পড়ুক ঝড়, জাগুক তুফান,

নিঃশেষ হইয়া যাক নিখিলের যত বজ্রবাণ।

রাখো নিন্দাবণী, রাখো আপন সাধুত্ব-অভিমান,

শুধু একমনে হও পার

এ প্রলয়-পারাবার

নূতন সৃষ্টির উপকূলে

নূতন বিজয়ধ্বজা তুলে।”

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (বলাকা)

মনমানচিত্রের পক্ষ থেকে কবির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

=================