You are currently viewing হোসাইন কবিরের কবিতা

হোসাইন কবিরের কবিতা

হোসাইন কবিরের কবিতা
 
 
স্মৃতিপুরাণ
 
 
উপকূলে যাবো বলে আজো অবোধ বালক
জলজোছনায় বৃষ্টিদিনে তরী ভাসাই
পাখিহীন শিশুহীন প্রেমহীন সীমান্তরেখায়
 
কে যেন দাঁড়ালো মুখোমুখি
আততায়ী অবয়বে পল্লবিত ইস্পাত ছায়ায়
অতঃপর জেনেছি–
মুখোশের আড়ালে লোহার শেকলে বাধা
সোনার ঘুঙুর নিয়ে পাশা খেলে যারা
                              তাদের নির্মম নিষ্ঠুরতা
 
মনে পড়ে– 
ছাইচাপা আগুনে ফেলেছি যে পা– বালকবেলায়
     কে কোথায়? দেখে যা বলে–
যে নারী বৃক্ষ হয়ে দিয়েছিল উষ্ণতা পুষ্পের ঘ্রাণ মহুয়ামাতাল
সেও আজ ধাবমান বায়ুস্রোতে স্মৃতির পুরাণে বড্ড অচেনা 
 
*******
 
নদী বন্দনা
 
মুগ্ধ নদীর বয়ান আর 
কল্লোলিত ধ্বনি শুনে
জীবন ও জীবিকায় নদীযাত্রী মানুষ
আমাদের পূর্বজন– নদীতেই ছিল বহুকাল
 
এখনও নদীজলে রাত্রি নামে
            গভীর অব্যক্ত বেদনায়
কূলবধূ নাইওরীর
আকাঙ্ক্ষার অনুক্ত আকুতিতে
বৈঠার নিক্কনে ভাটি গাঙে 
ছলাৎ ছলাৎ শব্দে
আজো অবিরত জলের সানাই বাজে
 
ভাবি
ছড়ায়ে দেহভস্ম ছাই
নদী কী ফিরবে আবার!
জন্ম-উৎসমূলে
         ত্রিবেণীসঙ্গমে…
                         দূরে বহুদূরে
তখন পড়বে কি মনে?
মাঝিমাল্লার গান, গুণটানার সমূহ সংলাপ
 
*******
 
সূর্যটা আমাদেরই আছে
 
 
আমরা শুনছিলাম সেই সূর্যগ্রহণের কালে
অস্বচ্ছ জলের আয়নায়– সূর্য ডুবিয়ে দেবার আর্তনাদ
শহরে গ্রামে মাঠে ময়দানে ঝুলছিল কালো চাঁদ কৃষ্ণপ্রহর
কোন রঙই তখন দৃশ্যমান ছিল না—
চেনাশোনা মানুষেরও সে এক অদ্ভূত অচেনার অবয়ব
তবে, ওরা এখনো আছে মুখোশের আড়ালে
তবু বলি, এই ভূমি তারই গানের সুরের নদী– বন-বনানী
গেয়েছিল যেই গান মাঠে আর ময়দানে
সেই গান আজো বাজে– 
নদ-নদী শ্যামলিম মৃত্তিকার শরীরজুড়ে
আর ভাবি আকাশজুড়ে সেই সাহসী চোখ
দেদীপ্যমান জ্বলজ্বলে সূর্যটা আজও আমাদেরই আছে
 
=====================