হিমাদ্রি মৈত্রের দুইটি কবিতা
সে ক্ষতের শিহরণ নিয়ে
আমার অনেকগুলো প্রেমিকা ছিল,
তারা সব বর্ণে, গন্ধে, রূপে, রসে
নিজেকে নিবেদন করত,
অথবা করত না।
আমি বারে বারে ভুল করে
যারা করত না,
তাদের কাছে হাপিত্যেশ করে
কালাতিপাত করেছি।
যারা করত তাদের অবজ্ঞা করেছি।
কেউ বা লতার মত জড়িয়ে ছিল,
কেউ শক্ত কান্ডের মত ঋজু,
না এদিকে নুয়ে পড়ে, না ওদিকে
যতদূরে চলে যাই
আকুলতা থেকে যায়
লেগে থাকা গন্ধের মত
না-পাওয়ার দাম ধরে রাখি,
কেউ কাঁটায় রক্তাক্ত করে
আমার কবিতা ভুলিয়ে দিত,
সে ক্ষতের শিহরণ নিয়ে
অথবা সে শব্দে বেপথু হয়ে
সেইসব ফুল, পাতা আর গাছ
অতীতের ঘরে নিয়ে আলো জ্বেলে
ধুলো মেখে বসে আছি ।
ভিতর ঘরে নিয়ে চলনা
কতদিন আর
অতিথ করে রাখবে বল
বসার ঘরে!
দেওয়ালটা নয় রঙ মাখানো
এখানে ওখানে সাজানো গোছানো
ফুলদানিতে ফুল ফোটানো
থাকনা এসব লোক দেখানো
কায়দাকানুন!
অনেকদিন তো হল এবার
পর্দা তুলে ভিতর ঘরে
নিয়ে চলনা।
রঙ চটানো কাপড় ঝুলুক,
ঘরের কোণে ময়লা থাকুক
বাসন কোসন ছড়ানো ছিটানো
হরেক রকম গন্ধ মাখানো,
তবুও তো সে ভিতর ঘর!
খেয়াল খুশি থাকার ঘর।
ওখানে তোমায় ছোঁয়াও যাবে
চেনাও যাবে, বোঝাও যাবে।
কাছের থেকে দেখাও যাবে।
বসার ঘরে বসেই থাকা
অতিথ্ হয়ে বসেই থাকা
পথিক হয়ে বসেই থাকা!
তার চেয়ে ভিতর –
অনেক ভিতর!
গভীর-গোপন অনেক ভিতর।
পাখনা মেলার ছন্দ পাব,
মেঘ-বৃষ্টির খবর পাব,
তোমায় তোমার মতন পাব।
নিয়ে চলনা
ভিতর ঘরের পর্দা তুলে!
************************