You are currently viewing হাসনাইন হীরার কবিতা

হাসনাইন হীরার কবিতা

হাসনাইন হীরার কবিতা

ধ্যানপত্র

দহন দেখিয়ে যে সারস উড়ে গেছে
অপরাহ্নের দিকে, সে কবি।
উড়ে যাওয়ার ভেতর যে দেখে ফেলে
মানুষের সাঁতার, সেও কবি;
উভয়ই খোঁজ করে তার প্রাক্তন প্রেমিকার।

প্রেমিকা, মৃত্তিকাবাড়ির জানালা খোলা মেয়ে
বেখেয়ালি মাধ্যমিক পেরিয়ে যে এখন
নিমগ্ন পাঠ্যসূচির ভেতর দোল খেতে খেতে
বিরহের বিষ্যুদবার গুলিয়ে ফেলে।

প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে
কেউ তাকে নিয়ে গেল কিনা!
ভোরের আড়মোড়া ভাঙা গোপন নির্জনতায়
তস্ত্র জনপদ বসিয়ে দিল কিনা!
দ্যাখে। দ্যাখে আর লেখে
লেখে আর চুমু খায় উর্বর স্তনের বোঁটায়।

লাবণ্যভরা পেন্সিলে আমিও একটা চিঠি লিখেছি
উত্তরের জাল বিছানো ঘোরতর সহজ বর্ষায়।

**********************

দ্রষ্টব্যের সহজ পাঠ

লালপীড়িত মনোভাবের উপর
কি যেন হারিয়ে ফেলেছি মনে হয়!
তবু পর্যবেক্ষণের নামে, ভেতরে ভেতরে
বড় হতে থাকে অহমপোষা বেড়াল।

অনেকটাই ঘাসফুলের বাইরে থাকা
অন্য এক ঘাসফুল
বারান্দায় ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো
একলা গোছের ভোর।
তোমার না বোধক চিহ্নের পাশে
অন্য এক কথার তোরজোর গলা ঝাঁকায়!

আকাশও লুকিয়ে ফেলে পুরনো আবেগ
মেঘ ভেবে তাই ভাঙা যাবে না বৃষ্টির স্বর,
অগ্রসর গানের মতো দিনরাত
বর্ধিত বাতাসগুলো খই খই করে।

ফুলার রোডের মন ভাঙার সার্কাস নেই
যতক্ষণ আছি, ততক্ষণ হাসি
ততক্ষণ বাজতেই থাকবে সাঁড়াশির বাশি ।

************************

মনোবৃত্তের হারমনিয়াম

এই ঘোর সলতে পোড়া দিনে
তোমার হাসিতের লেগে আছে মোমবাতির ঘ্রাণ।
পুরনো কোনো কিকো দিয়ে
মেলানো যাচেছ এই অবাধ্যের তানপুরাণ।
তবু উত্তপ্ত বাদকের সুরমহল যে কয়টি তামাশার রাত পোহায়
তাদের অনুকুলেও ছাপা হয় ভোরের রচনা।

পাখিদের একাকী কোনো সঙ্গীত নেই,
উড়ালই একমাত্র মৌসুম জেনে প্রেম ও প্রার্থনা
শব্দহীন সিগনাল পেরুতে পেরুতে হারিয়ে ফেলে
অভিধানের সবটুকু শহর।

ব নার বহর নিয়ে দাঁড়াতে গেলে
এখন আর অতদূর অপেক্ষা লাগে না;
পা গুনতে গুনতে বড় জোড়কল্যাণপুর টু শাহবাগ মোড়।

*************************

শব্দগাছ ও তার নীবরতা

চিঠির বুকভরা গাছে
ফুটে আছে মনভরা ফুল
পাশে তার স্কুল খুলে
কে যেন পাঠিয়েছে হলুদ খামে।

আমি তার বামপাশে
সুগন্ধি সিলেবাসে
হৃদয় ছড়িয়ে বসি,
চুপেচুপে হাসি, পাঠ নিই সরলতার।

অহেতুক মাত্রা দিয়ে
তুমি তার নীবরতা ভেঙে দিও না।

*******************************

পরিচিতি
হাসনাইন হীরার জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার বাঙ্গালা গ্রামে । জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। ‘বাঁক বাচনের বৈঠা’ তার প্রথম কাব্যগ্রস্থ। এই গ্রন্থের জন্য তিনি অর্জন করেছেন, জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার-২০২০।

*********************************