You are currently viewing শুভ নববর্ষ ১৪৩১

শুভ নববর্ষ ১৪৩১

শুভ নববর্ষ ১৪৩১

বছর ঘুরে আবার এসেছে বৈশাখ। বাঙালী জাতিসত্ত্বার অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে এবারো পালিত হবে নববর্ষ। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে কয়েক দশকের মধ্যে জাতিসত্ত্বার প্রশ্নে বিভাজন দেখা দিতে শুরু করে। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতার যে পটপরিবর্তন ঘটে তা ইউটার্ণ নিয়ে পাকিস্তানী ভাবধারাকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মোড়কে ফিরিয়ে আনা হয়। মেজর জিয়া, জেনারেল এরশাদ, এবং খালেদা জিয়ার আমলে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সকল সুফলগুলোকে সুকৌশলে নস্যাৎ করা হয়। সংবিধানকে ব্যাপক কাঁটাছেঁড়া করা হয় এবং পাকিস্তানী ভাবধারাকে ভিন্ন আদলে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সংখ্যালঘুদের ব্যাপকহারে ভূমি থেকে উচ্ছেদের মাধ্যমে দেশ থেকে বিতাড়িত করে তাদের সহায় সম্পত্তি দখল করে নেয় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মাস্তানেরা। দেশকে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে সুকৌশলে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয় যাতে অপরাপর ধর্মাবলম্বীদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়। মানুষের প্রত্যাশা ছিলো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশকে স্বাধীনতার ধারায় ফিরিয়ে এনে ধর্মীয় কূপমুন্ডকতা মুক্ত করবে এবং ত্রিশলক্ষ শহীদদের স্বপ্নপূরণ করবে। স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ মানুষের মনে আশার সঞ্চার করতে সক্ষম হয়। আওয়ামী লীগের বিকল্প আওয়ামী লীগই। মানুষের মধ্যে এমন প্রত্যয় জাগার পরই আওয়ামী লীগের কাজকর্ম ক্রমশঃ প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের জন্য আপীল না করে তাকে বৈধতা দেয় এবং কট্টর মৌলবাদী ওলামা লী্গের ধৃষ্টতামূলক স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী তৎপরতা এবং রাজাকারদের অন্যতম ফ্রন্টিয়ার হেফাজত ইসলামের সাথে সরকারের দহরম দৃষ্টিক্টু হয়ে উঠতে থাকে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকা অবস্থায় বৈশাখী শোভাযাত্রায় দলীয় কর্মীদের কর্তৃক নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্বের আচরণ মানুষের মনে সন্দেহের বীজ বপন করে। এরপর শিক্ষানীতিকে সাম্প্রদায়িকীকরণ এবং দেশব্যাপী বাউল সন্ন্যাসীদের উপর হামলা নির্যাতন ব্যাপক বৃদ্ধি পায় এবং আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে মৌলবাদীদের সাথে আঁতাত করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত ও নিরঙ্কুশ করার জন্য বিনাভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে সিভিল স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করে। এদিকে বাঙালীর জাতিসত্ত্বার উপর উপর্যুপরি আঘাতের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে লাগলো এবং আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় সাম্প্রদায়িক অশুভশক্তি পাকিস্তানী কায়দায়  বাঙালী জাতির কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বিরোধী আক্রমণ বৃদ্ধি করেছে যাতে জাতির ভেতর ভয়ঙ্কর বিভাজন তৈরি হয়েছে। এই বিভাজন আগামী বাংলাদেশে বাঙালী জাতিসত্ত্বার অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলবে। এমন আশংকার ভেতর দিয়ে বাঙালী জাতি ১৪৩১ সালকে আজ স্বাগত জানাচ্ছে।

আমরা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমাদের পূর্বসূরীরা যে আত্মত্যাগ করে গেছেন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের বর্ণচোরা বশংবদদের চিহ্নিত করে আদর্শিকভাবে প্রতিরোধ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।

১৪৩১ সালকে বরণ উপলক্ষ্যে মনমানচিত্র সীমিত আকারে বিশেষ সংখ্যার আয়োজন করেছে। আপনাদের সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।

*************************

 

বৈশাখে রচিত পঙতিমালা

অন্তর চন্দ্র
আজিজ কাজল
আলী সিদ্দিকী
জিললুর রহমান
হোসাইন কবির
এইচ বি রিতা
তূয়া নূর
নাহিয়ান অপু
মনিজা রহমান
শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়
রওনক আফরোজ
রজব বকশী
সুমন শামসুদ্দিন

গল্প

ইসরাত জাহান
শ্বাশত বোস

===================