শিলু সুহাসিনী
সাদা বিড়াল
মাঝে মাঝে আকাশটাকে
বড্ড চারকোণো মনে হয়
যেন জানালার শিক ধরে ঝুলে থাকা
স্বচ্ছ চৌবাচ্চা এক।
চৌবাচ্চার এমাথা-ওমাথা যাই
ভিজে ভিজে নিজেকে হাতড়ে বেড়াই
কখনোবা ডুবে যেতে চাই-
শূণ্যের যে কোন তল নেই
তাই আর ডুবে যাওয়া হয় না।
ফের ভেসে উঠি
ফের জেগে উঠি
ফের ডুবে যাই আকাশের এপারে
শক্ত জাজিমের উপর মধ্যবিত্তের চাদরে
তেল-নুনের হিসাব মিলাই
তুলি হাতে বসে থাকি
রং ক্যানভাসের অট্টহাসি দেখি
রাত যায় ভোর হয় আসে সকাল
জানালার ওপারে তাকাই
কারা যেন ছেড়ে দিয়ে গেছে
ধবধবে এক সাদা বিড়াল।
কবর বিন্যাস
ধূলো জমিয়ে পাহাড় গড়েছি
সেই পাহাড়ের উচ্চতা আমাকেই মাপতে হবে।
অথচ বুকের ভিতর পাহাড় পুষে
আমি ধূলোর সাথে যুদ্ধ করি
উড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে প্রকৃত সারস।
হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে
আর উৎসাহ পায় না সোনালি ডানার চিল
প্রসব বেদনায় ডুকরে কেঁদে ওঠে
এক শুদ্ধ আদিম পাতকী।
রঙের পর রঙের লেপনে
সে নিজেরই কবর আঁকে
শব্দের পর শব্দের গাথায়
নিজের কবর বুনে যায়।
অন্যের ছাঁচে দাঁড়িয়ে কখনো বা
নিজের কবর খোঁড়ে হাওয়ায়
শূন্য সময় গোরে সে ভীষণ একা
নিত্য ঢুকে পড়ে লাশকাটা ঘরে।
আদিঅন্ত প্রসব বেদনার ঘোরে
নিজের কবর রচনা করে চলে
এক অবিরাম আদিম ঈশ্বরী।
মধুকরী
আমি একটা ফুলের নাম বললাম
তুমি বললে একটা ভুলের নাম
ফুল আর ভুলে মিলে মধুকরীর জন্ম হলো।
মধুকরী বিস্তার ঘটালো অসংখ্য ফুলের
ফুল বিস্তার ঘটালো অসংখ্য প্রেমিক যুগল।
যুগ যুগ ধরে প্রেমিকেরা
বেশুমার ফুল হত্যা করতে লাগলো
যুগ যুগ ধরে প্রেমিকেরা
অসংখ্য ফুল হত্যার জন্য দায়ী হয়ে রইল।
আমি এবেলায় একটা ফুলের নাম বললাম
তুমি আর একটিও ভুল করলে না।
====================