You are currently viewing শাহিদ আনোয়ার:এক প্রেমকাতর কবি/ বিচিত্রা সেন

শাহিদ আনোয়ার:এক প্রেমকাতর কবি/ বিচিত্রা সেন

শাহিদ আনোয়ার:এক প্রেমকাতর কবি

বিচিত্রা সেন

আট এর দশকের তোলপাড় তোলা এক কবির নাম। মাধ্যমিকে এবং উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষাবোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া এ কিশোরটি অন্য দশজন মেধাবী কিশোরের মতো জীবনের লক্ষ্য স্থিরের পথে ছোটেননি। অমলকান্তির মতো তাঁরও হয়তো এক টুকরো রোদ্দুর হবার সাধ জেগেছিল। তাই কবিতা তাঁকে টেনেছিল চুম্বকের মতো। কারণ কবি ছাড়া এমন সাধ আর কারই বা জাগতে পারে? সেই সময়ের শাহিদ আনোয়ারকে যাঁরা চিনতেন তাঁরাই জানেন কেমন পরিপাটি করে নিজেকে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করতেন তিনি। তাই শাহিদ আনোয়ার মানে আট এর দশকের কবিদের কাছে পরিপাটি সুদর্শন এক মেধাবী যুবক।

 

এ কথাগুলো বলার কারণ আমি যে সময়ের কথা বলছি সে সময়ের তরুণেরা কবিতা লিখলেই নিজেদের একটু উন্নাসিক রাখতে পছন্দ করতেন। সাত এর দশকের কবি নির্মলেন্দু গুণ,রফিক আজাদ,আবদুল মান্নান সৈয়দ,হেলাল হাফিজের প্রভাবে আট এর দশকের কবিরাও লম্বা এলোমেলো চুল,বুকখোলা শার্ট কিংবা পাঞ্জাবি এবং শ্মশ্রুমণ্ডিত হয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। শাহিদ আনোয়ার ছিলেন তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রম। বেশভূষায় তিনি যেমন ছিলেন আলাদা,তেমনি কবিতাতেও তিনি রেখেছিলেন স্বতন্ত্রতার ছাপ। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “শুঁড়িখানার নুড়ির মধ্যে” এ ছাপ স্পষ্ট। একটি কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায় প্রথম দুচরণ একই রেখে আর কোনো কাব্যগ্রন্থ রচিত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে আজ আমরা সেই কাব্যগ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা করবো না। আমাদের আজকের আলোচ্য কাব্যগ্রন্থ “বৈদেহী এক ওষ্ঠ পোড়ে”।

এ কাব্যগ্রন্থে তিনি বিভিন্ন কবিতায় বিভিন্ন ছন্দের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। ছন্দে শাহিদ আনোয়ার বরাবরই সিদ্ধহস্ত। অক্ষরবৃত্তে তিনি যেমন সাবলীল,তেমনি মাত্রাবৃত্তেও তিনি অনায়াসে প্রকাশ করেন তাঁর উচ্ছ্বসিত অনুভূতি। এ কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায় কবি প্রবলভাবে প্রেমকাতর। কবির প্রেমকাতরতা নানাভাবে, নানারূপে, নানাছন্দে বিভিন্ন কবিতার চরণে চরণে প্রকাশিত হয়েছে।কবি বলেছেন–

“তোমার দু’খানি ঠোঁট জোরালো খনক

আমার দু’খানি ঠোঁট তারই ক্রীড়নক

আমার দু’খানি ঠোঁট চোখবোজা ঋষি

তোমার দু’খানি ঠোঁট মাতাল আঁকশি।”

(কবিতা–ঠোঁট)

কী অসাধারণভাবে তিনি ঠোঁটকে কখনো খনক,কখনো ক্রীড়নক,কখনো চোখবোজা ঋষি আবার কখনো মাতাল আঁকশির সাথে তুলনা করেছেন। নাগরিক এ কবি কবিতায় মগ্ন থাকলেও চারপাশ সম্পর্কেও ছিলেন সজাগ। তাই কোনো এক বিজ্ঞাপনের মডেল তাঁকে আকৃষ্ট করে। তিনি লেখেন-

” দেখেছি তোমার ছবি বিজ্ঞাপনী পটে

কী দারুণ প্রত্যয়ী, দারুণ দাপুটে

ফুটেছে বিদেশি ফুল বাংলার বনে

দু’আঁখি বন্ধ ঠোঁটরঞ্জক সনে।

অদ্ভুত চামড়া তোর না কালো না সাদা

অনেক বিজ্ঞাপনে দারুণ আলাদা।”

(কবিতা–বিজ্ঞাপন কন্যা)

কবি তাঁর দয়িতাকে ভালোবাসেন। কিন্তু দয়িতা কবির কাছে সহজে ধরা দেন না। তাই দয়িতা হয়ে ওঠে কবির কাছে দেবীর মতো আরাধ্য। সেই আরাধ্য দেবীকে স্পর্শ করতে কবিকেও ঈশ্বর হতে হয়। কবি সেই আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন এভাবে–

“আমায় এবার ঈশ্বরত্বে বরণ করো দেবী

আমায় এবার চন্দ্রপ্রভার উৎস করে নাও

হে অনন্ততমা তোমার অষ্টাদশী ঠোঁট

মনিষ্যি এক কবির কাব্যে আলতো ছুঁয়ে দাও।”

(কবিতা–দেবী)

তবে কবি দয়িতার মধ্যে ডুবে গিয়ে অমৃতস্বাদ পেতে চাইলেও বাস্তবে তা ঘটে না। তাই কবির হৃদয়ে ক্ষরণ হয়। ধূপের মতো নিজেকে পোড়ায় কবির অব্যক্ত হৃদয়। কবির ভাষায়–

“কে বলে আমাকে ডাকে প্রিয় নারীশ্বর

অন্তরে অভাবনীয় অশেষ উত্তর।

যে উত্তর পুষে রাখি কর্দমাক্ত বুকে

তাতে দাগ দিয়ে যায় জলজ শামুকে।

গঙ্গাফড়িং চোখে দেখি তোর রূপ

অন্তরে অভাবনীয় অবিনাশী ধূপ।”

(কবিতা–অশেষ উত্তর)

কবির দয়িতাকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিষ্কাম নয়। তাঁর রক্তে রয়েছে অনার্য জাতির রক্ত। তাই আদিমতা,বন্যতা কবির শোনিতে শোনিতে। আল মাহমুদের মতো কবিও কামজ প্রেমে উত্তাল। তাই কবিকণ্ঠে উচ্চারিত হয়–

“ফুলেল ঐশ্বর্য তুমি ঢেলে দাও আমার নয়নে

প্রকম্পিত স্তনও স্থির কুমোরের হাতের ছোঁয়ায়

কী তোমাকে দিতে পারি এরকম মাহেন্দ্র বীক্ষণে

তোমার সকাশে আজো অনিঃশেষ রাত্রিরা পোহায়?

যদি পারি দেবো তোকে অবিনাশী পৌরুষ উত্থান

যা জানে না বাৎস্যায়ন,আর যত আর্যের সন্তান।”

(কবিতা–তোমার সকাশে)

কবির প্রেমকাতরতা দেখে অনেকে আসে কবিকে ছলনায় ভোলাতে। কিন্তু কবি ছলনাময়ীদের চিনতে ভুল করেন না। তিনি জানেন তাঁর সর্বগ্রাসী প্রেমে সব ছলনা উবে যাবে। তিনি বলেন–

” সোনালি রমণী তোর হাসিটুকু লেগে আছে ঠোঁটে

ছেনালি জানিস তুই,শুধু আমি তার ব্যতিক্রম

অধিবিদ্যা-জোরে তোর দেহকোষে শুক্রাণুরা ছোটে

আমাকে চুম্বন দিস,নেবো না কো তোর চেয়ে কম

 

ত্রিভুবন জুড়ে তুমি পাতিয়াছো অবিনাশী ফাঁদ

করিনি তো ভুল কোনো,ঘটেনি তো কোনো পরমাদ!”

(কবিতা– পাতিয়াছো অবিনাশী)

অস্ট্রিক রক্তের উত্তরসূরী এ কবির কাছে প্রেম মানে নির্লোভ,নির্মোহ কোনো অপার্থিব অনুভূতি নয়। প্রেম তাঁর কাছে প্রেয়সীকে কাছে পাবার তীব্র অনুভূতি। শুধু অনুভূতিতেই শেষ নয়। কবি প্রেয়সীকে তিল তিল করে উপভোগ করতে চান।  তাই তাঁর উচ্চারণ–

” অস্ট্রিক রক্তের দ্রোহে এই ঠোঁটে বিষ উছলায়।

সুচদাঁতে ঢালো বিষ এ পেলব অধরে আমার

বিনিময়ে ঠোঁট দেবো যোনিমুখে ঠোঁটের বিন্যাসে

যোনিতে সুভোগ মাখি জয়তুন পেনা সারোৎসার

নমনীয় যাত্রাপথে অগুনতি যাত্রার ক্ষণ আসে”

(কবিতা-সুচদাঁতে ঢালো বিষ)

 

দয়িতার ভালোবাসা পেলে কবি তাকে ঈশ্বরীর আসনেও বসাতে প্রস্তুত। এ ঈশ্বরী অন্যরকম এক ঈশ্বরী, যে কবিকে “উপচে পড়া সুখ” এ ভাসিয়ে দিতে পারে। যার আঁচলের কোণা কবির হাতে ঠিকানা খুঁজে নেয়। কবির ভাষায়–

“আমি তোমার চোখবান্ধা মানুষ।

আমি হাতে ধরি,হে ঈশ্বরী তোমারই চিবুক।

তোমার আঁচলখানা পায় ঠিকানা

আমার দু’টি হাতে

আমি এক চোখবান্ধা বেহুঁশ।”

(কবিতা- চোখবান্ধা মানুষ)

 

প্রেমকাতর কবি কখনো কখনো কাঙ্ক্ষিত প্রেম না পেয়ে অভিমানী হন। নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চান সবার অলক্ষ্যে। বিশেষ করে দয়িতার কাছ থেকে। অভিমানী কবিকণ্ঠ উচ্চারণ করে-

“আমার ঠিকানা বুঝি সত্যিই তুমি চাও?

বুকের ভেতর শুনি ম্রিয়মাণ মুমূর্ষু শেকড়ের গান

পরাক্রান্ত রাত বিমর্ষ ফুল

তবু লাউঞ্জে ভাড়াটে লোক,ব্যস্ততা,দোলে পিতলের চাবি

তুমি কি সত্যি চাও দু’দিনের লাজুক বান্ধবী

আমার ঠিকানা?”

(কবিতা–মধুমিতা মৈত্র)

প্রেমহীনতা কবিকে ক্রমাগত বিষণ্ন করে তোলে। কবির আত্মা সংকুচিত হয় তীব্র দহনে। রক্তমাংস বেহিসাবী হয়ে পড়ে। রাতের ব্যর্থতায় কষ্টের হিসাব খোঁজেন কবি। বিষাক্ত অনলে পুড়তে পুড়তে কবি বলেন–

“চোখের মধ্যে পুড়তে দিলাম দূর গগনের ইঙ্গিত

গল্প থেকে কুড়িয়ে দিলাম ব্যর্থ রাতের কষ্ট

এসব ছিলো ক্রমশ এক ভুলের শেকড় বিস্তার

আপন হাতে বানিয়েছিলাম দুঃখ রাখার পাত্র।

রক্তমাংসে বেহিসেবি; এই নাও তার হিস্যা

অজ্ঞানতার তারাবাতি জ্বলতে দিলাম আত্মায়

এসব ছিলো বস্তুত এক পুঞ্জীভূত স্বপ্ন

দিনের আলোর বাস্তবতার যার থাকে না সত্তা।”

(কবিতা– বেহিসেবি হিস্যা)

দয়িতাকে না পাওয়ার কষ্টে একসময় কবি ঈশ্বরকেও পক্ষপাতদুষ্ট মনে করেন। তাঁর মনে হয় ঈশ্বরও বুঝি তাঁর দয়িতার সাথে একতাবদ্ধ হয়ে তাঁকে অবজ্ঞা করছেন। হতাশায় নিমজ্জিত কবি বলেন–

“আমার হৃৎপিণ্ড লাল কাপড়ে ঢেকে

রেখে দিয়েছিলাম পড়ার টেবিলে

তোমাকে দেখতে দিয়েছিলাম একনজর

একনজর দেখতে দিয়েছিলাম ঈশ্বরকে

ঈশ্বর ও তুমি ছেলেখেলা আরম্ভ করলে

…………………………

তুমি আর ঈশ্বর এক সঙ্গে–

অবজ্ঞা করলে আমার হৃৎপিণ্ডকে

আর দুজনে উড়ে চলে গেলে

অচেনা দেশে।”

(কবিতা–অবজ্ঞা)

প্রেয়সীর দান করা বিষে জর্জরিত কবির ভেতরে হতাশায়,দুঃখে,অভিমানে কখনো কখনো জেগে ওঠে কালকেউটে।কারণ সর্পিণী প্রিয়াকে বশ করতে যে তাঁকেও বিষধর হতে হবে। তাই কবির উচ্চারণ–

“বুকের মধ্যে কাব্য পুষে ভাববো তোমার অন্তঃসার

কাব্য আমার বনের ডাহুক,ডাকছে করুণ মাঝরাতে

দুধেল গাই -এর ওলান থেকে সর্প সরায় মুখ তাহার

আমিও যে এক কেউটে কবি,দুধ-ওলানে মুখ গুঁজি

বুকের মধ্যে অগ্নিপুষে ভাববো তোমার অন্তঃসার

দুগ্ধ খেয়ে পালিয়ে যাওয়া সর্পিণী তোর সুখ বুঝি।”

(কবিতা–কেউটে)

কবি আজন্ম ভালোবাসা পিয়াসী। তাই প্রিয়াকে তিনি ভালোবাসার সংজ্ঞা বোঝাতে উদগ্রীব। কবির ধারণা তাঁর প্রেয়সী ভালোবাসার ভুল ব্যাখ্যাই এতকাল জেনে এসেছে। তার কাছে হয়তো ভালোবাসা মানে “আদমের ফল”, যার কারণে স্বর্গচ্যুত হতে হয়। তাই কবি প্রিয়াকে আশ্বস্ত করতে চান এই বলে —

“ভালোবাসা বলতে তুমি কী বোঝাও, মানসকন্যা

মৃত ভালোবাসা থেকে ঠিকরোয় রুপালি কবিতা

ভালোবাসা বেঁধে দেয় নাক্ষত্রিক কবিতারও সীমা

তুমি হলে গল্পের অভিজ্ঞান,-প্রজ্ঞাপারমিতা

রাঙা গোপন গোলাপ আমি,তুমি পুষ্পদানি”

(কবিতা-ক্লেদ)

ভালোবাসার এমন লোভনীয় হাতছানিতেও কবির দয়িতার মন গলে না। তার কাছে ভালোবাসা মানে কবিকে হুল ফুটিয়ে যন্ত্রণাবিদ্ধ করা। তাই কবি বলেন–

“তোমার পথে আমিই কাঁটা, আমিই বিরাট বাধা

নই তো আমি হরে কৃষ্ণ,নও তো তুমি রাধা,

ফুলের মধ্যে ভ্রমর রে তুই,আমার রক্ত মধু

মিথ্যাপ্রেমের বাসরে তুই বৈদেহী এক বধূ।”

(কবিতা–ক্লিপ)

প্রিয়ার হুলে যন্ত্রণাবিদ্ধ কবি এক পর্যায়ে মায়াবিভ্রমেও ভুগতে থাকেন। তাঁর কাছে মনে হয় রৌদ্রের ওই দহন বুঝি তাঁর প্রেয়সীর “বন্যকামড়”!

কবির ভাষায়–

“রৌদ্রে এমন দহন কী যে আমার ভাষা অন্য

রৌদ্রে তাহার জোড়াঠোঁটের কামড় আছে বন্য

রৌদ্র এমন ধাতব কেনো,ব্লেডের নিপুণ ধার যে

রোদের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আমার হলো হার যে।”

(কবিতা–প্রেম)

প্রেমকাতর কবির সমস্ত আবেদন নিবেদন নিষ্ফল হলে এক পর্যায়ে কবি প্রভুর শরণাপন্ন হন। যে কবি একদিন বিফল মনোরথে উচ্চারণ করেছিলেন ঈশ্বরও তাঁর প্রিয়ার মতো ছলনাময়ী,সেই কবিই আবার নতজানু হন প্রভুর কাছে। কারণ যে কোনো মূল্যেই কবি তাঁর দয়িতাকে বোঝাতে চান ভালোবাসার গভীরতা। এজন্য যদি স্রষ্টার শরণাপন্ন হতে হয় তবে তিনি তাই হবেন। তাই তিনি আর্তি জানান এভাবে–

“প্রভু, তাকে বিনাশী বেদনা দাও

অন্তর ভারাক্রান্ত ব্যথা

তার হৃদয় কাঠিন্যে বেহেশতের

গোলাপি থিনার ঢেলে দাও।

গাঁও গেরামের কোনো এক খর্জুর

গাছের ছায়ায় বাকা-বিল্লাহ

করো তাকে

রাতের কামিনী ফুলের গন্ধ সাক্ষী রেখে

ফানা বিল্লাহ করো তাকে

তাকে উড়ুক্কু চুলের অপ্রকৃতিস্থা

নারী করে দাও।

কেবল তখনি সে আমার

পরাক্রান্ত ব্যথা বুঝতে পারবে

পাহাড় শীর্ষ থেকে সমুদ্রে লাফিয়ে

পড়তে শিখবে

আমার চুম্বনের যোগ্য হয়ে উঠবে।”

(কবিতা–পরাক্রান্ত ব্যথা)

এভাবে কবি শাহিদ আনোয়ার শেষপর্যন্ত তাঁর প্রেমকাতরতার সমাপ্তি টেনেছেন। সমগ্র কাব্যগ্রন্থটি পড়লে পাঠক এমন এক কবিকে আবিষ্কার করে যাঁর হৃদয়জুড়ে আছে এক সমুদ্র প্রেমতৃষ্ণা। এই তৃষ্ণায় কাতর কবি নানা উপায়ে তাঁর দয়িতার প্রেম যাচনা করেছেন। আর এই তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের আকুলতায় জন্ম নিয়েছে এক একটি অসাধারণ কবিতা। বাংলা সাহিত্য হয়েছে সমৃদ্ধ। এই মেধাবী কবির কাছ থেকে আমাদের পাওয়ার কথা ছিলো আরও অনেক কবিতা,কিন্তু  দুঃখের বিষয় কবি গত ১৮ জানুয়ারি ২০২০ থেকে জীবন্মৃত অবস্থায় পড়ে আছে হাসপাতালের বিছানায়। থেমে গেছে তাঁর কলম। আমরা বঞ্চিত হচ্ছি তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি থেকে। আমরা চাই অলৌকিক কিছু ঘটুক কবি শাহিদ আনোয়ারের জীবনে। আবার সচল হয়ে উঠুক কবি,সচল হয়ে উঠুক তাঁর আঙ্গুল কিংবা কলম। জন্ম নিক বাংলাসাহিত্যের কিছু অমূল্য পংক্তি। জয়তু শাহিদ আনোয়ার।